ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো: চূড়ান্ত হয়নি কারিগরি বিষয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৩ ঘণ্টা, জুলাই ৪, ২০২২
মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো: চূড়ান্ত হয়নি কারিগরি বিষয়

ঢাকা: মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর বিষয়ে ঢাকায় কারিগরি বিষয়গুলো এখনও চূড়ান্ত হয়নি। বিশেষ করে মেডিক্যাল সেন্টার চূড়ান্ত করা, কর্মীদের বাংলাদেশ অংশে খরচ নির্ধারণ করার মতো বড় দুটি কাজ বাকি রয়েছে।

ফলে মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমের ধীরগতি দেখে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো বিকল্প পদ্ধতিতে কর্মীদের মেডিক্যাল করানোর চিন্তা করছে। তা না হলে এই জটিলতার জন্য মালয়েশিয়ার মতো বাজার হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা করছেন এজেন্সি মালিকরা।

গত শুক্রবার ও শনিবার (১ ও ২ জুলাই) মালয়েশিয়ার মালাক্কায় বিভিন্ন নিয়োগদাতা কোম্পানিগুলো পরিদর্শন করেছেন হাইকমিশনের শ্রম কল্যাণ উইংয়ের কর্মকর্তারা। নিয়োগদাতা কোম্পানিগুলো পরিদর্শন করে, কর্মী নিয়োগের সক্ষমতা আছে কি-না, কর্মীদের থাকার ব্যবস্থা কেমন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা যাচাই করা হচ্ছে। পরিদর্শন শেষে সব ঠিকঠাক থাকলে নিয়োগদাতার চাহিদাপত্র বা মূল ভিসায় সত্যায়ন করবেন শ্রমকল্যাণ উইংয়ের কর্মকর্তারা।

এদিকে দেশটিতে কর্মী পাঠাতে হলে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষ ব্যুরো- বিএমইটি ও হাইকমিশনে মালয়েশিয়ার কেন্দ্রীয় অনলাইন পদ্ধতির সংযোগ দিতে হয়। হাইকমিশনের আগেই সেটি স্থাপন করা হলেও বিএমইটিতে স্থাপনের জন্য এতদিন কোনো নির্দেশনা ছিল না। এছাড়া ঢাকায় এখনও কারিগরি বিষয়গুলো চূড়ান্ত হয়নি। বিশেষ করে মেডিক্যাল সেন্টার চূড়ান্ত করা, কর্মীদের বাংলাদেশ অংশে খরচ নির্ধারণ করার মতো বড় দুটি কাজ বাকি রয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১০টির মতো মেডিক্যাল সেন্টার পরিদর্শন করে এ সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি।

সম্প্রতি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে, এখন পর্যন্ত কর্মীদের মেডিক্যাল ও মালয়েশিয়া যাওয়ার খরচ বিষয়ে কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি। মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগে কর্মীদের কোনো পদক্ষেপ না নিতে অনুরোধ করা হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে।

রোববার (৩ জুলাই) প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার ও বিএমইটির মহাপরিচালকের কাছে  একটি চিঠি দেওয়া হয়। মন্ত্রণালয়ের উপসচিব গাজী মো. শাহেদ আনোয়ারের সই করা চিঠিতে বলা হয়, মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে হাইকমিশনে একটি নোট ভারবাল (সরকারি চিঠি) দেয়। তাতে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের জন্য মালয়েশিয়ার এফডব্লিউসিএমএস পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। এজন্য হাইকমিশন ও বিএমইটিতে এফডব্লিউসিএমএস পদ্ধতি সংযুক্ত করতে বলা হয়।

এ বিষয়ে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো জানিয়েছে, মেডিক্যালের বিষয়টি যেহেতু মালয়েশিয়া সরকারের এখতিয়ার। আর এর আগেই বাংলাদেশের কিছু প্রতিষ্ঠানকে কর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য অনুমোদন দিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার। তাই সেই পদ্ধতি অনুসরণ করে কর্মীদের মেডিক্যাল করানোর বিষয়ে চিন্তা করছেন তারা। গামকাসহ অন্য দেশের মেডিক্যাল সেন্টারগুলো স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট দেশের অনুমতি নিয়ে থাকে। কোনো দেশের জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন হয় না। শুধু মালয়েশিয়ার জন্য এই জটিলতা সৃষ্টি করে বাজারটি হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা করছেন এজেন্সি মালিকরা।

মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর সঙ্গে যুক্ত একটি রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক জানান, মালয়েশিয়া সরকার কর্মী নিতে আগ্রহী। অন্যদিকে নেপাল থেকে প্রতিদিন হাজারের বেশি কর্মী দেশটিতে প্রবেশ করছে। আবার বাংলাদেশি কর্মীরা যাওয়ার অপেক্ষায় আছেন। এই অবস্থায় দেশের স্বার্থেই কর্মী পাঠানোর বিষয়ে দ্রুত কাজ করতে হবে। এজন্য মালয়েশিয়ার সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে সম্ভাব্য যে কোনো বিকল্প পদ্ধতিতে কর্মী পাঠাতে চান রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকরা।

২০১৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বন্ধ হওয়ার ৪০ মাস পর গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর দু’দেশের মধ্যে সমঝোতা স্বারক সই হয়। এর পর ২ জুন ঢাকায় যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে শ্রমবাজার খোলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৯ ঘণ্টা, জুলাই ০৪, ২০২২
জিসিজি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।