ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মামা শ্বশুরের ভবনে ঝুলে ছিল রাজনের মরদেহ

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ৬, ২০২২
মামা শ্বশুরের ভবনে ঝুলে ছিল রাজনের মরদেহ

মুন্সিগ‌ঞ্জ: মুন্সিগ‌ঞ্জের সিরাজ‌দিখা‌নে হাত বাঁধা অবস্থায় রাজন মণ্ডল (৩২) নামে এক যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।  

বুধবার (৬ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার চিত্রকোট ইউ‌নিয়‌নের গোয়ালখালী গ্রামে অজিত মণ্ডলের ভবনের দ্বিতীয় তলা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

 

রাজন ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপ‌জেলার তেঘুরিয়া ইউনিয়নের গো‌বিন্দপ‌ু‌রে গ্রামের নৃত্য গোপাল মণ্ডলের ছেলে। গত ০৭ জুন গোয়ালখালী গ্রামের মৃত চিনিবাসের মেয়ে পূর্ণিমার সঙ্গে বিয়ে হয় রাজনের। তার পরিবার বলছে বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকে চাপে ছিলেন তিনি।

নিহতের শাশুড়ি অর্চনা মণ্ডল জানান, রাজনসহ আমরা মঙ্গলবার (৫ জুলাই) দিনগত রাতে প্রতিবেশী বিমল মণ্ডলের ছে‌লের বি‌য়ের অনুষ্ঠানে এক সঙ্গে আনন্দ করেছি। রাতে তারা স্বামী-স্ত্রী এক সঙ্গেই ঘুমিয়েছেন। বুধবার ভোরে রাজন ঘুম থেকে উঠে আমার ভাইয়ের নতুন বিল্ডিংয়ের বারান্দায় গিয়ে একটি রুমের দরজা বন্ধ করে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেন। আমার মেয়ে পূর্ণিমা তাকে খুঁজতে গিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। রাজন দীর্ঘদিন ধরে মানুষিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। তাকে বারবার বুঝিয়েও শেষ রক্ষা হলো না।  

পূর্ণিমার মামা অজিত মণ্ডল ও তার স্ত্রীও বলছিলেন একই কথা- হতাশায় ভুগছিলেন রাজন।  

তবে রাজনের ছোট ভাই নীল রতন বলেন, আমার ভাইকে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন হত্যা করেছে। এক মাস হয়নি বিয়ে হয়েছে, কিন্তু এই অল্প কয়েকদিনেই তারা আমার ভাইকে পাগল করে ফেলছে। আমার ভাইকে তার বউ-শাশুড়িরা সারাক্ষণ চাপে রাখতেন। তারা আমার মায়ের মতো বড় ভাবিকে নিয়ে ভাইকে সন্দেহ করতেন। তারা নাকি এই বিয়ে দিয়ে ঠকেছে। তাই তারা আমার ভাইকে মেরে ফাঁসির নাটক করেছে।

রাজনের প্রতিবেশী দিলীপ মজুমদার বলেন, গত শুক্রবার রাজনের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে, তিনি বলেছে বিয়েতে তিনি সুখী না। তিনি খুবই ধর্মভীরু লোক ছিলেন। সে আত্মহত্যা করতে পারে না। তিনি কোনো দিন বিড়িও খাননি অথচ তার ফাঁস লাগানো রুমে মদের বোতল। আর ফাঁস লাগেনো দেখে কোনো পাগলও বলবে না এটা আত্মহত্যা।  

স্ত্রী পূর্ণিমা মণ্ডলের মামা অজিত মণ্ডলের প্রতিবেশীরাও রাজনের মৃত্যু নিয়ে নানা কথা বলছে। এটা হত‌্যা না‌কি আত্মহত্যা কেউ বল‌তে পা‌রে‌নি। ত‌বে স্থানীয়‌দের ম‌ধ্যে মিশ্র প্রতি‌ক্রিয়া র‌য়ে‌ছে। রাজ‌নের বাড়ির পক্ষ এবং শ্বশুরবাড়ি পক্ষ কিছু গোপন করার পাঁয়তারা কর‌ছেন ব‌লেও জানায় প্রত‌্যক্ষদর্শীরা।

এ ব্যাপারে সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত আবু (ওসি) একে এম মিজানুল হক বলেন, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এটি হত্যা না আত্মহত্যা, ময়নাতদন্তের রির্পোট পাওয়ার পরে জানা যাবে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমরা তিন জনকে থানায় নিয়ে এসেছি। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৬, ২০২২
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।