ঢাকা, সোমবার, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ মে ২০২৪, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে শনিবার

সমুদ্রযাত্রার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন উপকূলের জেলেরা

শফিকুল ইসলাম খোকন, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০২২
সমুদ্রযাত্রার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন উপকূলের জেলেরা সাগরে যাওয়ার অপেক্ষায় মাছধরার ট্রলারের সারি- বাংলানিউজ

পাথরঘাটা (বরগুনা): বঙ্গোপসাগরে বিচরণরত সব ধরনের মাছসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণীর প্রজননের জন্য ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হবে আগামী শনিবার (২৩ জুলাই)। ওই তারিখের রাত ১২টার পর পরই মাছ ধরতে ফের সাগরে যাবেন উপকূলের জেলেরা।

এরই মধ্যে অনেকেই এখন বরফ নেওয়ার জন্য ট্রলার নিয়ে খালে অপেক্ষা করছেন। কেউ কেউ ট্রলার মেরামত শেষে এখন রঙয়ের কাজ করছেন, আবার কেউ কেউ  জাল বুনছেন, কেউ কেউ শিশুদের নিয়ে ট্রলারে জাল উঠাচ্ছেন। দীর্ঘদিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় মহাখুশি তারা। অনেকটা হাসি খুশিতেই জেলে ও ট্রলার মালিকদের সাগরে যাত্রার প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন হয়েছে।

এবার সাগরে কাঙ্ক্ষিত মাছ ধরা পড়বে, এমনটাই আশা ট্রলার মালিক ও ব্যবসায়ীসহ সবার। নিষেধাজ্ঞার কারণে এতদিন উপকূলে পড়েছিল মাছ ধরার ট্রলারগুলো। ফলে অনেক ট্রলারে পড়ে যায় মরিচা।

পাথরঘাটার বিভিন্ন ডকইয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে অধিকাংশ ট্রলার মেরামত শেষে সেগুলো খালে অবস্থান করছে। অনেক ট্রলারের জেলেরা বাজার সদয়ের কাজে ব্যস্ত। কেউ কেউ ব্যস্ত ট্রলারে জাল, রশি ও প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সামগ্রী তোলার কাজে। তার আগেই এসব ট্রলার রঙ করে ও ধুয়ে মুছে প্রস্তুত করা হয়েছে। এখন জেলেরা সাগরে মাছ শিকারে যাওয়ার অপেক্ষায় আছেন।

তাদের আশা, গত মৌসুমের মতো এবারো জালে ধরা পড়বে ঝাঁকে ঝাঁকে বড় বড় রূপালি ইলিশ। তা বিক্রি করে পরিবারে ফিরবে স্বাচ্ছন্দ্য। এমন স্বপ্ন নিয়ে সাগর যাত্রার অপেক্ষায় আছেন হাজার হাজার জেলে।

আবদুল মিয়া, সেলিম মিয়া, রহিমসহ একাধিক জেলে বলেন, ট্রলার মেরামতের কাজ শেষ, এখন বাজার-সদয় করব।   আমাদের সব প্রস্তুতি শেষ। আশা করছি এবার ভালো মাছ পাব। পরিবারের অভাব দূর হবে। এক ট্রলার মালিক জানান, তার সবগুলো ট্রলার মাছ ধরার জন্য সাগরে যেতে এখন প্রস্তুত রয়েছে।

অপরদিকে আনিছ মিয়া, জহির ও ইউসুফ বলেন, র ট্রলারের মেরামত শেষে এখন রঙয়ের কাজ বাকি। ২২ তারিখ ট্রলার খালে নামাব, ওইদিন বাজার সদয় শেষ করব।  

নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক ট্রলার মালিক বলেন, কষ্ট করে নিষেধাজ্ঞার সব নিয়ম পালন করেছি। কিন্তু অনেকেই প্রশাসনকে ম্যানেজ করে সাগরে গিয়ে মাছ ধরেছে। এটা দুঃখজনক। সরকার চালও দেয়, আবার এ সময় অবৈধভাবে মাছও ধরে।

বরগুনা জেলা ফিশিং ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দুলাল মিয়া বলেন, ৬৫ দিন নিষেধাজ্ঞা থাকায় সাগরে যেতে পারেনি জেলেরা। অনেকে কোরবানিও দিতে পারেনি। চলতে-ফিরতেও কষ্ট হয়েছে।

হরিণঘাটার নুরুল আলম বলেন, দীর্ঘদিন তার ট্রলার স্থলে পড়ে থাকায় ভাঙন ধরেছে। সেসবের মেরামত শেষ করেছি, এখন সাগরে যাওয়ার অপেক্ষা। ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা সরকারের সঠিক সিদ্ধান্ত বলে মনে করছি। এ কারণে সাগরে মাছ বাড়বে। আশা করছি, জেলেরা এখন বেশি মাছ নিয়ে ফিরবেন।

বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ৬৫ দিনের সরকারি নির্দেশনা পালন করেছি। ফলে কোনো ট্রলার সাগরে যেতে পারেনি। এখন সবাই ২৩ জুলাইয়ে অপেক্ষায় আছে।

উল্লেখ্য, মাছের প্রজনন মৌসুম হওয়ায় প্রতিবারের মতো এ বছরও গত ২০ মে থেকে আগামী ২৩ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত উপকূলীয় এলাকার ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত সব ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল সরকার।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৭ ঘণ্টা, ২০ জুলাই, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।