ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দুই ইউপি সদস্যের ওপর মাদক কারবারিদের হামলা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০০ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০২২
দুই ইউপি সদস্যের ওপর মাদক কারবারিদের হামলা

বাগেরহাট: বাগেরহাটের কচুয়ায় মাদক ব্যবসার প্রতিবাদ করায় দুই ইউপি সদস্যের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দুই ইউপি সদস্যসহ অন্তত আট জন আহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টার দিকে কচুয়া উপজেলার লড়ারকুল বাজার সংলগ্ন মাধবকাঠি এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় তিনটি মোটরসাইকেল ও একটি দোকান ভাঙচুরসহ নগদ অর্থ লুট করেন হামলাকারীরা।

পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। আহতরা হলেন- কচুয়া উপজেলার ধোপাখালি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও ৪ নম্বর (মাদবকাঠি) ওয়ার্ডের সদস্য জাকির হাজরা (৩৫), ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মামুনুর রশীদ (৩২), স্থানীয় হেদায়েত হাজরা (৪২), এবাদুল হাওলাদার (২৮), ব্যবসায়ী সেলিম হাজরা (৪৫), রাজিব (১৭), জাহাঙ্গীর হাজরা (২৭), ও আতিয়ার রহমান (৩৭)।

আহত ইউপি সদস্য জাকির হাজরা বাংলানিউজকে বলেন, মাধবকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মকবুল হোসেনের ছেলে শাহিন, শ্রমিক লীগ নেতা মাসুদ হাওলাদার ও সাইদুল মাঝির নেতৃত্বে এলাকায় একটি মাদক সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে আমি তাদের মাদক কারবারের প্রতিবাদ করে আসছি। এ কারণে বিভিন্ন সময় তারা আমাকে হুমকি-ধমকি দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে কচুয়া উপজেলা সদর থেকে ফুটবল খেলা দেখে ফেরার পথে মাধবকাঠি এলাকায় পৌঁছালে আগেই ওৎ পেতে থাকা শাহিন, মাসুদ হাওলাদার ও সাইদুল মাঝির নেতৃত্বে অন্তত ৩০ থেকে ৩৫ জন আমাদের ওপর হামলা করেন। তারা আমাদেরকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছেন। আমি এ হামলার সুষ্ঠু বিচার চাই।

আহত অন্য ইউপি সদস্য মামুনুর রশীদ বলেন, জাকিরকে বাঁচাতে গেলে হামলাকারীরা আমাকেও মারধর করেন। চেয়ারম্যান মকবুল হোসেনের ছত্রছায়ায় তারা এ এলাকায় যা ইচ্ছে তাই করে বেড়াচ্ছেন।

মাধবকাঠি এলাকার ব্যবসায়ী সেলিম হাজরা বলেন, ডাক চিৎকার শুনে দোকান থেকে বের হয়ে ঘটনাস্থলে যাই। পরে শাহিন ও তার লোকজন আমাকে মারধর শুরু করে। এরপর আমার দোকান ভাঙচুর করে তারা সেখানে থাকা টাকা লুট করে নিয়ে যান।

বাগেরহাট জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক ও ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল বলেন, হামলার ঘটনা শুনে আমার কমিটির সদস্য সচিব সরদার আব্দুল কাদেরকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। আমরা এ হামলার নিন্দা জানাই। হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের জন্য পুলিশ প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করছি।

ধোপাখালি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আব্দুল হাই বলেন, যারা হামলা করেছে তারা শ্রমিক লীগ করেন। এ ধরণের হামলা দলীয় শৃঙ্খলা নষ্ট হবে। এ ঘটনার তদন্ত করে সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।

ধোপাখালি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন বলেন, আমার ছেলে হামলার সময় ঘটনাস্থলে ছিল না। এছাড়া আমার ছেলে কোনো মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত না। দলীয় বিভিন্ন কথা কাটাকাটির জেরে শ্রমিক লীগ নেতা মাসুদ, সাইদুল ও জাকির মেম্বরদের মধ্যে ঝামেলা সৃষ্টি হয়। এসব বিষয়ের সঙ্গে আমার ও আমার ছেলের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এখন পরিস্থিতি স্বভাবিক রয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০২২
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।