ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘কথায় কথায় সরকার ভর্তুকি দেবে, ব্যাপারটা এমন না’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২২
‘কথায় কথায় সরকার ভর্তুকি দেবে, ব্যাপারটা এমন না’

ঢাকা: কথায় কথায় সরকার ভর্তুকি দিয়ে দেবে, ব্যাপারটা এমন নয় বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।

বুধবার (১০ আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে ‘নিত্যপণ্য ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি: জনজীবনে চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক নগর সংলাপে তিনি একথা বলেন।

নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত সংলাপে তাজুল বলেন, ভর্তুকি দেওয়ার ব্যাপারে সরকারকে খুবই ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কথায় কথায় ভর্তুকি দিয়ে দেবো, আর দিয়ে দিলে অন্য খাতে ভারসাম্যহীনতা চলে আসবে।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের একটি বাজার থেকে তেল কিনতে হয়। ইউরোপের অধিকাংশ দেশসহ সারাবিশ্বের প্রায় ২৫ ভাগ জ্বালানি আসে রাশিয়া থেকে। এখন সেটা পাওয়া যাচ্ছে না। বিশ্বের সবথেকে বেশি জ্বালানি সরবরাহ আসে ভেনেজুয়েলা থেকে। কিন্তু ভেনেজুয়েলার ওপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে আমরা সেখান থেকেও নিতে পারছি না। ফলে একটা চাপ আমাদের আছে।

তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা ভিক্ষুকের জাতি, মিসকিনের জাতি হিসেবে খ্যাত ছিলাম। এখন আমরা উন্নত দেশের নাগরিক। প্রতি ৬ হাজার মানুষের জন্য একটি কমিউনিটি ক্লিনিক। সরকার বিভিন্নভাবে মানুষকে সক্ষম করে তুলছে। বড় প্রজেক্ট হচ্ছে মানে আমাদের আয় হচ্ছে, জিডিপি বাড়বে।

তিনি বলেন, বহু টাকা গেছে বিদেশে এবং তা ফিরিয়েও আনা হয়েছে। আইএমএফ থেকে আমরা মাঝে মাঝে ঋণ নেই এবং তা শোধ করে দেই। কোভিডের সময়ও নিয়েছি। এটা স্বাভাবিক বিষয়। আমার মনে হয় না দেশে কোনো সংকট আছে। কিছু কিছু যেগুলো আছে, সেগুলো আমরা সবাই মিলে মোকাবিলা করতে পারবো।

আয়োজনে অন্যান্য বক্তারা বলেন, যে হারে মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে তাতে জনজীবনে সংকট ঘনীভূত হবে। ২০০৬/০৭ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদনের তুলনায় বিদ্যুতের খুঁটি বেশি করার আকাঙ্ক্ষা ছিল বলে লোডশেডিং হতো বেশি। তখন আমরা যেখানে ছিলাম, এখনো যেন আমরা সেখানেই আছি। মনে হচ্ছে সার্কেলটা যেন পূর্ণ হচ্ছে। রেন্টাল আর কুইক রেন্টাল কেন্দ্রগুলোতে ভর্তুকির পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়েছে, অথচ সেখান থেকে কোনো বিদ্যুৎ সেভাবে পাওয়া যায় না। সরকারের উচিত বৃহৎ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন। কোথায় গিয়ে থামতে হবে, সরকার সে বিষয়টি বুঝে উঠতে পারেনি। সরকারকে বিভিন্ন কার্যক্রমে সঠিক পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়নি। ফলে আমাদের ওপর ভর্তুকির বৃহৎ দৈত্য ভর করেছে।

তারা বলেন, সরকারের জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি না করে হয়তো উপায় ছিল না, তবে এতটা মূল্যবৃদ্ধি কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়। আমাদের দেশে অর্থনীতির ক্ষেত্রে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো অক্টোবর মাস। এই সময়ে যদি আমাদের অর্থনীতি ডাবল ডিজিটে চলে যায়, তবে সেটা আমাদের জন্য খুব ভালো হবে না। মূল্য কমানো হবে বলে আমাদের শুধু আশার মধ্যে না রেখে এটি কার্যকর করতে হবে।

সংলাপে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক রুমানা হক, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক রিয়াজুল হক, বাংলাদেশ কনজুমার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০২২
এইচএমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।