ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

‘মাছ খেলে আর সংসার চালাতে পারব না’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২২
‘মাছ খেলে আর সংসার চালাতে পারব না’

ঢাকা: জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে ব্রয়লার মুরগি আর ডিমের রেকর্ডের পর চড়া মাছের বাজারও। বিক্রেতারা বলছেন একই কথা।

বেড়েছে পরিবহণ খরচ। ক্রেতারা বলছেন নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে দাম।

শনিবার (১৩ আগস্ট) রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকার মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৪৫০ টাকা। তেলাপিয়া, পাঙ্গাশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৯০ টাকা। শিং মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৬০ টাকা। কৈ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। পাবদা মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব মাছের দামে কেজিতে ১০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

পাশাপাশি দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে ইলিশও। এক কেজি ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা। ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে এক হাজার টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। আর ৪০০-৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা।

আর চিংড়ি মাছ মাঝারি সাইজের প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০০ টাকায়, প্রমাণ সাইজের চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ১৬০০-১৮০০ টাকা কেজি দরে।

ব্যবসায়ীরা যা বলছেন:

কারওয়ান বাজারের মৎস্য ব্যবসায়ী আবদুল কাদের বলেন, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির পর এর প্রভাব পড়েছে বাজারে। অন্যান্য জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মাছের দামও।

মায়ের দোয়া মৎস্য ভাণ্ডারের মালিক জয়নাল আবেদিন বাংলানিউজকে বলেন, মাছ বেচে আমরা বাজার-সদাই কিনে খাই। শুধু তো মাছ খেয়ে থাকি না। অন্য জিনিসের দাম যেহেতু বেড়েছে, স্বভাবতই মাছেরও দাম বেড়েছে।

আরকে ব্যবসায়ী নাসিরুল ইসলামও বললেন একই কথা। তিনি বলেন, সবকিছুরই দাম বাড়েছে। আমরা তো আর তার বাহিরে না।

ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠছে:

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির এমন পরিস্থিতিতে নাভিশ্বাস উঠছে সাধারণ মানুষের। ফার্মগেট এলাকার বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী শরীফুল ইসলাম বলেন, জ্বালানির দাম তো আমরা বাড়াইনি। কিন্তু মূল্যবৃদ্ধির খড়গ আমাদের ওপরই পড়েছে। আমাদের নাভিশ্বাস উঠছে। পরিকল্পনা আছে ঢাকা থেকে চলে যাওয়ার। গ্রামে তো অন্তত শাক, লতা-পাতা খেয়ে বাঁচতে পারব।

রাশেদা খাতুন নামে এক নারী বলেন, আমি একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী। পেনশনের কয়েক টাকায় সংসার চলে। আমার স্বামী মারা গেছেন। বাজারে মাছের যা দাম, শুধু শাক-সবজি কিনেই বের হয়ে গেছি।

রিকশাচালক ইদ্রিস আলী এসেছিলেন মাছ কিনতে। জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত সপ্তাহে দুইদিন মাছ খেতাম আর দুইদিন ব্রয়লার। এখন মুরগির দাম বেড়েছে দেখে মাছ বাজারে এলাম। মাছের দাম আরও বেশি। এক কেজি পাঙ্গাশ কিনেছি সাহস করে। মাছ খেলে আর সংসার চালাতে পারব না।

এদিকে কারওয়ান বাজার এলাকার একাধিক পাইকারী ব্যবসায়ী ও খুচরা বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, প্রায় প্রতিদিনই মাছ থেকে শুরু করে শাক-সবজির দাম বাড়ছে। জ্বালানিসহ আনুষঙ্গিক জিনিসের দাম না কমলে, বাজারেও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমার আর সম্ভাবনা নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৩, ২০২২
এমকে/এনএইচআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।