ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

উত্তরার ঘটনা হত্যাকাণ্ড, দাবি স্বজনের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০২২
উত্তরার ঘটনা হত্যাকাণ্ড, দাবি স্বজনের ছবি : ডি এইচ বাদল

ঢাকা : উত্তরার জসিমউদ্দিন এলাকায় বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট সিস্টেম’র (বিআরটি) গার্ডারের নিচে চাপা পড়ে নিহতের ঘটনাটিতে হত্যাকাণ্ড বলে মনে করা হচ্ছে। জাহিদ হাসান শুভ নামে নিহতদের এক স্বজন এ দাবি করেন।

শুভ বলেন, এটা তো অবশ্যই হত্যাকাণ্ড। ফ্লাইওভারের ক্রেন যেটা উঠিয়েছে, সেটি ওজন ধারণ করতে পারেনি। কাত হয়ে পড়ে গেছে। রাস্তা ফাঁকা ছিল, আমরা একটি গাড়ির পেছনে ছিলাম। চলতি ক্রেনটি কাত হয়ে গাড়ির ওপর পড়ে গেছে।

সোমবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ঘটনাটি ঘটে। এর পর চার ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও দ্রুত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছিল না বলেও শুভ দাবি করেন। তিনি বলেন, ক্রেন দিয়ে গার্ডার ওঠানোর কাজ করা হচ্ছিল। রাস্তায় কোনো ব্যারিকেড ছিল না। কিছুই ছিল না। এমন কাজ করছে, আমাদের পরিবারের ক্ষতি হয়েছে। আমার বো-ভাগ্নি চলে গেছে। আগামীতে যে এমন কোনো ঘটনা ঘটবে না, তার গ্যারান্টি আছে কিনা, প্রশ্ন তার।

শুভ আরও বলেন, রাস্তায় ব্যারিকেড থাকলে আমরা বিপরীত রাস্তা দিয়ে যেতাম। পুরোটাই প্রজেক্টের গাফিলতি। সাড়ে তিনটায় ঘটনা ঘটে, কোনো লোক আসে নাই। চার ঘণ্টা ধরে এই অবস্থা ছিল। হয়রানীর অভিযোগও তোলেন তিনি।

ঘটনার পরের অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি এসে দেখি আমার বোন-ভাগনে জীবিত, শ্বাস চলছে। আমার বেয়াই ড্রাইভ করছিলেন, তার হাত কাঁপছিল।

প্রশাসনের দিকে ইঙ্গিত করে শুভ বলেন, উনারা কিছুই করেন নাই। সবাই ছবি তোলা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন।

আমি ঘটনার ১০ মিনিট পর আসি। এর আগে এক পুলিশ আমাদের ফোন দিয়ে বলেন, আপনাদের গাড়ি অ্যাকসিডেন্ট করেছে। আমরা এয়ারপোর্ট থেকে দৌড়ে আসি। দেখি গাড়ি চাপা পড়ে আছে। আমার ভাগ্নি ও তার স্বামীকে গাড়ি থেকে বের করে বসিয়ে রাখি। গাড়ির ভিতর মোট সাতজন ছিল। পাঁচজন মারা গেছে। কাওলা থেকে আশুলিয়া যাচ্ছিলাম আমরা।

প্রাইভেট কারটি চালাচ্ছিলেন শুভর ভাগ্নি জামাই হৃদয়ের বাবা রুবেল। সঙ্গে ছিলেন বরের শাশুড়ি ফাহিমা বেগম, তার বোন ঝর্ণা বেগম ও তার দুই সন্তান জাকারিয়া এবং জান্নাত। সৌভাগ্যক্রমে হৃদয় ও তার স্ত্রী রিয়ামনি প্রাণে বেঁচে যান।

দুর্ঘটনার সময় নিহতদের কে গাড়ির কোথায় ছিলেন
জাহিদ হাসান শুভ বাংলানিউজকে বলেন, আমার ভাগ্নির বিয়ে ছিল গত শনিবার। আমাদের বাড়ি আশুলিয়ায়। আমার ভগ্নীপতির বাড়ি কাওলায়। আজকে (সোমবার) বৌ-ভাত হয়েছে। ভাগ্নির জামাইকে নিজেদের বাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলাম। বরের বাবা (রুবেল) ড্রাইভিং সিটে ছিলেন। আমার ভাগ্নি ও তার স্বামী জানালার সাইডে ছিল। আমার দুই বোন ও ছোট ভাগনে-ভাগ্নি বিপরীত দিকে ছিল। আমার বোন ও ভাগনে-ভাগ্নিরা স্পট ডেড।

উত্তর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোরশেদ আলম জানান, দুর্ঘটনা কবলিত প্রাইভেট কারটি কাওলা থেকে আশুলিয়ার দিকে যাচ্ছিল। জসিমউদ্দিন এলাকায় বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট সিস্টেম’র (বিআরটি) ক্রেন ভেঙে পড়লে এতে থাকা গার্ডারটি ওই কারের ওপর পড়ে। গাড়ির ভেতরে থাকা পাঁচজন সেখানেই মারা যান। দুজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। ৎ

সোমবার বিকেলে দুর্ঘটনা কবলিত প্রাইভেট কারটির রেজিস্ট্রেশন নম্বর ঢাকা মেট্রো-গ-২২-৬০০৮।

বাংলাদেশ সময় : ২১২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০২২
এনবি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।