ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ধার করা সন্তান দেখিয়ে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে শিক্ষিকা!

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৪, ২০২২
ধার করা সন্তান দেখিয়ে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে শিক্ষিকা!

কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায় অন্যের সন্তানকে নিজের সন্তান হিসেবে পরিচয় দিয়ে মাতৃত্বকালীন ছুটি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা আলেয়া সালমা শাপলার বিরুদ্ধে।

তিনি ওই উপজেলার হাসনাবাদ ইউনিয়নের মনিয়ারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা।

 

বদলি সূত্রে তিনি ২০১৮ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি স্কুলটিতে যোগদান করেন।

এরপর ২০১৯ সালে তিনি তৃতীয় বিয়ের পর বগুড়ায় চলে আসেন। পরে করোনার প্রকোপে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও তিনি আর কুড়িগ্রামে ফিরে আসেননি। চিকিৎসাসহ নানা অজুহাতে তিনি ছুটি নিয়ে বগুড়ায় অবস্থান করার পর সর্বশেষ ২০২২ সালের ১৪ মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওই শিক্ষিকা মাতৃত্বকালীন ছুটি নেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, শিক্ষিকা আলেয়া বগুড়ার গাবতলী উপজেলার কাগইল ইউনিয়নের দেওনাই গ্রামের আনিছুর রহমান পাশা-শারমীন দম্পতির ছোট সন্তান আশফিয়াকে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে নিয়ে এসে নিজের সন্তান পরিচয় দিয়ে মাতৃত্বকালীন ছুটি নেন।

পাশার স্ত্রী শারমীন জানান, আমার দুটি কন্যাসন্তান আছে। বড়টির নাম আফিফা (৫), ছোটটির নাম আশফিয়া। চলতি বছরের মার্চে আশফিয়া জন্ম নেয়। আলেয়া তার প্রতিবেশী হওয়ার সুবাদে তার অনুরোধে মার্চে কন্যাসন্তানসহ তিনি নাগেশ্বরীতে গিয়েছিলেন।

আনিছুর রহমান পাশা জানান, শাপলার স্বামী আমাকে একটা চাকরি দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমার ছোট মেয়েকে তারা ব্যবহার করেছে। আশফিয়া আমার নিজের সন্তান।

অভিযুক্ত শিক্ষিকা আলেয়া বাংলানিউজকে বলেন, সংশ্লিষ্ট সবাইকে ম্যানেজ করে আমি নিয়ম মাফিক ছুটিতে আছি। এসব নিউজ করে কিছু হবে না। যতদিন আমার ট্রান্সফার না হবে ততদিন ছুটি নিয়েই যাবো।

মনিয়ারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খাদিজা সুলতানা আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বাংলানিউজকে জানান, শিক্ষিকা আলেয়া নিয়ম মাফিক ছুটিতে আছেন।

নাগেশ্বরী উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আবু নোমান নওশাদ আলী বাংলানিউজকে জানান, বিধি অনুযায়ী শিক্ষিকার মাতৃত্বকালীন ছুটি দেওয়া হয়েছে। আমরা যেহেতু ডিএনএ পরীক্ষা করিনি, তাই কার বাচ্চা নিয়ে এলো সেটা যাচাই করার কোনো সুযোগ নেই।

নাগেশ্বরী শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোবােশ্বর আলী বাংলানিউজকে জানান, আমি বাচ্চাকে দেখেছি। প্রধান শিক্ষকের সুপারিশ ছিল। যদি এটি অসত্য হয়ে থাকে তাহলে জেলা শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি জানাবো। ঘটনা মিথ্যা হলে প্রধান শিক্ষকসহ ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর শিক্ষকদের প্রতিবেদন দিতে বলেছি। পরে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০২২
এফইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।