ঢাকা, সোমবার, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৩ জুন ২০২৪, ২৫ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

বড় কাটরা ভাঙায় নিষেধাজ্ঞা, সীমানা সীলগালা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২২
বড় কাটরা ভাঙায় নিষেধাজ্ঞা, সীমানা সীলগালা

ঢাকা: বাইরে তালা মেরে ভাঙা হচ্ছিল ঐতিহাসিক স্থাপনা ‘বড় কাটরার’ মূল ভবন। প্রায় এক মাস ভাঙন চললেও টের পায়নি প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর।

তবে বিষয়টি সিটি করপোরেশন জানা মাত্রই বড় কাটরা ভাঙায় নিষেধাজ্ঞা দিয়ে সিলগালা করা হয়েছে এই ঐতিহাসিক স্থাপনার অংশ।

বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এমন নির্দেশ দেন।

এ সময় তিনি বলেন, আমাদের ঐতিহ্যের ঢাকার মূল স্থাপনার বড় একটি অংশ বড় কাটারা এবং ছোট কাটারা। সেই বড় কাটারার মালিক দাবি করা এক ব্যক্তি এর একটি অংশ ভেঙে ফেলছেন। যা দেখে আমি অত্যন্ত মর্মাহত হয়েছি এবং সঙ্গে সঙ্গে নির্দেশ দিয়েছি যেন আর একটুও যেন ভাঙা না হয়। একই সঙ্গে পুরো এলাকার মধ্যে ওই স্থাপনা এবং স্থাপনার অংশগুলো যেন সিলগালা করে দেওয়া হয়। এরপর আমাদের বিভিন্ন সংস্থা, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করছি যে কীভাবে এটি সম্ভব হল তা খতিয়ে দেখার জন্য।

তিনি আরও বলেন, আমি আশ্চর্য হয়েছি যে সিটি কর্পোরেশন থেকে কয়েক বছর আগের পুরনো একটি চিঠিকে অবলম্বন করে মালিক এই স্থাপনা ভাঙা শুরু করেছেন। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং আমি অত্যন্ত মর্মাহত হয়েছি। আজকে আমাদের বিশেষজ্ঞ দল নিয়ে এটি পরিদর্শন করলাম এবং পুরোটা নিয়েই আমরা কাজ শুরু করব। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গোষ্ঠী বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী মহল এগুলো দখল করেছে, ভেঙে ফেলেছে, নষ্ট করেছেন। আমরা এগুলো আর নষ্ট করতে দেব না। আমরা এটির পূর্ণ সংস্কার ও সংরক্ষণের কার্যক্রম হাতে নেব।

ভবনটি যিনি ভেঙেছেন তিনি এই জমি কিনেছেন বলে দাবি করছেন; এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মেয়র বলেন, এগুলো কিছু না। এগুলো তিনি হয়তো বিভিন্ন সময়ে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্র বানিয়েছেন। এভাবেই দখল করেছেন। কিন্তু আমি মনে করি যেহেতু এটি মুঘল সাম্রাজ্যের সময় নির্মিত হয়েছে, তাই পরবর্তীতে এটি সরকারের কাছেই ন্যাস্ত হওয়ার কথা। সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন অথবা গণপূর্ত বিভাগের অধীনেই এটি থাকার কথা। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে হয়তো এসব বিভাগের অবহেলা, তাদের এদিকে নজর না দেওয়ায় এমনটা হয়েছে। কেননা ঐতিহ্যকে সংরক্ষণের উপলব্ধি তো সবার মধ্যে থাকে না। এগুলোই যদি বিনষ্ট হয়ে যায় তাহলে ঢাকার কিন্তু আর কোনো পরিচিতি থাকবে না। সুতরাং এগুলো যেভাবেই হোক, যত বড় স্বার্থান্বেষী বা ক্ষমতাবান মহলই হোক, আমরা এগুলোকে উদ্ধার করব।

মেয়র বলেন, আমরা এটিকে মহাপরিকল্পনার মধ্যে নিয়েছিলাম। কিন্তু এটি যে কেউ এত দ্রুত ভাঙার কাজ শুরু করবে তা আমরা ভাবতে পারিনি। এজন্য আমরা এখন নিষেধাজ্ঞা জারি করছি যে, এটি আর কেউ ভাঙতে পারবে না। তবে যারা ব্যবহার করছেন, তারা ব্যবহার করতে পারবেন। এই স্থাপনাকে আমরা একটি ঐতিহ্যবাহী পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।

উল্লেখ্য, মুঘল আমলে সরাইখানা হিসেবে ব্যবহৃত হতো বড় কাটরা। প্রায় পৌনে চারশ বছরের পুরনো স্থাপনাটি ঢাকার ঐতিহাসিক নিদর্শনের অন্যতম।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২২
এইচএমএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।