ঢাকা, শনিবার, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ১১ মে ২০২৪, ০২ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

ফুটপাতে নোংরা পরিবেশে তৈরি হচ্ছে খাদ্য, নেই তদারকি

হারুন-অর-রশীদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০২২
ফুটপাতে নোংরা পরিবেশে তৈরি হচ্ছে খাদ্য, নেই তদারকি

ফরিদপুর: ফরিদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রের বিভিন্ন সড়কের পাশে, ফুটপাতে ও বিভিন্ন স্কুল, কলেজের সামনে জমে উঠেছে মানহীন অস্বাস্থ্যকর খাদ্যের রকমারি পসরা। আর এ অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে সাধারণ পথচারী থেকে শুরু করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

 

ফুটপাতে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি খাবার খেয়ে প্রাথমিক অবস্থায় পেট ব্যথা, মাথা ব্যথা দেখা দিলেও পরে ধাপে ধাপে তা ভয়ঙ্কর মৃত্যুতে অবস্থান ঘটায়।  

জেলা শহরের বিভিন্ন জায়গায়, স্কুল-কলেজগুলোতে পথের সামনের বিক্রি হওয়া খাবারগুলো নোংরা পরিবেশ ও খোলাভাবে রাখায় ধুলোবালিতে মিলেমিশে ব্যাকটেরিয়াযুক্ত খাবারে সৃষ্টি হয়। দিনের পর দিন চলতে থাকা এমন পরিস্থিতিতেও নেই তেমন কোনো তদারকি।  

ফুটপাতে তৈরিকৃত আটা-ময়দার রুটি, পরোটা, ফোসকা, বেল পুরি, চিকেন ফ্রাই, টিক্কা, কাবাব, বারগার, সেন্ডুইচ, সমুচা, সিংগারা, আলুর চপ, পুরি, পিয়াজু, নুডুলস, জালমুড়িসহ হরেক রকমের খাবার। যা তৈরি করা হচ্ছে ভেজাল তৈল ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে। রাস্তা কিংবা রাস্তার পাশে খাবারগুলো তৈরি ও রাখায় ধুলোবালি খাবারের ওপর পড়ছে।  

আবার এসব খাবারগুলোতে যেমন কোনো খাদ্যমান নেই, তেমনি খাবারের জন্য অনুপোযোগী।  

বিশেষজ্ঞরা জানান, পথে খাবার বিক্রির জন্য নেই কোনো নীতিমালা। ফলে অবৈধভাবে ফুটপাতে বা বিভিন্ন পথে-ঘাটে মানহীন ও অস্বাস্থ্যকর খাবার বিক্রি করেই যাচ্ছেন যে কেউই। যেখানে খাবারগুলো ঢেকে রাখার জন্যও কোনো সচেতনতাবোধ হকারদের মধ্যে দেখা যায় না।  

এ ব্যাপারে কয়েকজন চিকিৎসক বাংলানিউজকে জানান, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পথে বসা হকারদের বিক্রয় করা খাবার খেয়ে পেট ও মাথা ব্যথা, ডায়রিয়া, আমাশয়, বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ কৃমি হওয়া, যকৃতের সমস্যা, ক্ষুদামন্দা, জন্ডিস ও হেপাটাইটিস রোগে আক্রান্ত হয়।

বহুদিন ধরে এ ধরনের খাবারের ফলে শিশুদের অপুষ্টি ও যকৃতের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এজন্য পরামর্শকরা শিশুদেরকে বাহিরের অস্বাস্থ্যকর খাদ্য না দিয়ে সচেতন অভিভাবকদের আরও সচেতন হওয়া উচিত। একই সঙ্গে বাচ্চাদের স্বাদ রুচিকে প্রাধান্য দিয়ে তা অনুশীলন করে তা ঘরে বানানো ফাস্টফুড, চটপটি, ফুচকা ইত্যাদি খাবার তৈরি করে বাচ্চাদের ঘরমুখী খাবারের প্রতি আকৃষ্ট করা একান্তই প্রয়োজন বলে জানান।  

পথের খাবার বিক্রির নীতিমালা তৈরির জন্য ক্যাব-২০০৮ সালে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সঙ্গে একটি রূপরেখা তৈরি করলেও এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো আইন করা হয়নি। তবে এসব খাবারগুলোই যদি মানসম্পন্ন ও স্বাস্থ্যকরভাবে পরিবেশে হকাররা গ্লাসের ব্যবহার করে এবং খাবার তৈরি ও বিক্রিতে নির্ভেজাল প্রক্রিয়ায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অবলম্বন করেন, তাহলে অন্তত সাধারণ মানুষ অনেকটাই বিভিন্ন রোগের আক্রমণ থেকে ঝুকিঁমুক্ত থাকবে।  

এ ব্যাপারে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ফরিদপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. সোহেল শেখ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালিয়ে থাকি। তবে, কিছুদিন বাজার তদারকিসহ জনগুরুত্বপূর্ণ কিছু অভিযান চালানোয় এদিকে একটু কম নজর দেওয়া হয়েছে। তবে, অতিশিগগিরই এ ব্যাপারে ফের অভিযান চালানো হবে।  

এ ব্যাপারে ফরিদপুরের নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা দীপঙ্কর দত্ত বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের সচেতনতার কিছুটা অভাব রয়েছে। এখানে তদারকি বাড়ানো দরকার। আমরা এ ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেব।  

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০২২
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।