ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং

শিবচরের একটি ইউনিয়নের ৬ শতাধিক মানুষ পানিবন্দী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২২
শিবচরের একটি ইউনিয়নের ৬ শতাধিক মানুষ পানিবন্দী

মাদারীপুর: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে টানা বৃষ্টির ফলে মাদারীপুর জেলার শিবচরের বন্দরখোলা ইউনিয়নের ৬ শতাধিক মানুষ পানিবন্দী রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের পর চারদিন পার হলেও পানি কমার কোনো লক্ষণ নেই।

এতে দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন পানিবন্দী পরিবারের মানুষগুলো।

জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে গত রোববার দিবাগত রাত থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়। টানা বৃষ্টিপাতের ফলে উপজেলার বন্দরখোলা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মফিতুল্লাহ্ হাওলাদারকান্দি গ্রামের ৬ শতাধিক মানুষের ঘরবাড়ি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। পদ্মার ভাঙনের শিকার অসংখ্য পরিবারসহ এসব এলাকার অধিকাংশ বাড়ির উঠান পানিতে তলিয়ে রয়েছে। ঘর থেকে বের হতে হলে পানির মধ্য দিয়ে আসতে হচ্ছে। হঠাৎ পানিবন্দী হয়ে পড়ায় অনেক পরিবার কলাগাছের তৈরি ভেলা ব্যবহার করছেন চলাচলের জন্য।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে জমে থাকা পানি দ্রুত নিষ্কাশন হচ্ছে না। মফিতুল্লাহ্ হাওলাদারকান্দি গ্রামের সড়কের একটি কালভার্টের এক পাশের জমি ভারাট করায় পানি প্রবাহের পথ আটকে গেছে। ফলে দ্রুত পানি নিষ্কাশন হতে পারছে না। তাছাড়া প্রবল বৃষ্টির কারণে আশপাশের প্রায় সব স্থানের খাল, জলাশয়, নিচু এলাকা পানিতে ডুবে যাওয়ায় বসতবাড়ির পানি সরতে পারছে না।

পারভেজ নামে এক স্কুলছাত্র জানায়, ঝড়ের সময় বৃষ্টির ফলে চারপাশ ডুবে গেছে। বাড়ির উঠানে হাঁটু পানি। ভেলার সাহায্যে রাস্তায় যেতে হয়।

মো. মুছা নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, আমাদের গ্রামের কমপক্ষে ৬ শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের সময় প্রচুর বৃষ্টি হওয়ায় পানিতে তলিয়ে গেছে বসতবাড়ির উঠান। পানি মাড়িয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। পদ্মা নদীর চরাঞ্চলের এই এলাকায় নদী ভাঙনের শিকার হওয়া অসংখ্য পরিবার রাস্তার পাশের জমিতে ঘর তুলে বসবাস করছেন। তাদের ঘরবাড়ির উঠানে হাঁটু পানি। অনেকের রান্নাঘর ডুবে গেছে। চারপাশে পানি থাকায় পানি সরতে সময় লাগছে। ফলে চরম কষ্টে আছে এই গ্রামের মানুষেরা।

বজলু হাওলাদার নামে এক ভুক্তভোগী বলেন, বৃষ্টির পানিতে আমরা পানিবন্দী হয়ে আছি। কালভার্ট দিয়ে পানি বের হয় না। আশপাশের ডোবানালা ভরাট হয়ে গেছে। এখন বৃষ্টি নামলেই পানিবন্দী হতে হয়।

বিল্লাল তালুকদার নামে এক ব্যক্তি বলেন, চরম দুর্ভোগে দিন কাটছে আমাদের। ঘর থেকে বের হতেই পানি। বাচ্চাদের নিয়ে বেশ ঝুঁকির মধ্যে থাকতে হচ্ছে। কবে পানি নামবে আল্লাহ জানেন।

জানতে চাইলে বন্দরখোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান সাদ্দাম বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের রাত থেকেই আমার ইউনিয়নের চরাঞ্চলের মানুষের খোঁজ খবর রাখছি। সরেজিমনে একাধিকবার গিয়েছি। অতি বৃষ্টির কারণে প্রায় সব স্থানেই পানি জমে আছে। এ কারণে মফিতুল্লাহ্ হাওলাদার কান্দি গ্রামের নিচু এলাকার পানি সহজে সরছে না। আমরা পানি সরানোর জন্য একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছি ইতোমধ্যে। পানির পরিমাণ বেশি থাকা এবং আশপাশের ডোবানালা পানিতে ভরে যাওয়ায় বসতবাড়ির পানি সরতে সময় লাগছে।

তিনি আরও বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের সময় বৃষ্টির পানির চাপে গ্রামের যে সব সড়কের বিভিন্ন স্থানে ক্ষতি হয়েছে তা ইতোমধ্যে সংস্কার করার কাজ শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫  ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২২

আরএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।