ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বাংলাকে জাতিসংঘের ভাষা ও নতুন বিশ্ব গড়ার আহবান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার

নূরনবী সিদ্দিক সুইন, বাংলানিউজ ডেক্স | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১০
বাংলাকে জাতিসংঘের ভাষা ও নতুন বিশ্ব গড়ার আহবান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার

ঢাকা: বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের অন্যতম দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে বাংলাকে অর্ন্তভুক্ত করার আহবান জানিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি বিশ্বশান্তি ও সমৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে নতুন বিশ্ব গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।



শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত আড়াইটার দিকে নিউইর্য়কে জাতিসংঘে সাধারণ পরিষদের ৬৫তম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে বিশ্বনেতাদের সামনে এ আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী। গতবারের মতো এ বছরও প্রধানমন্ত্রী বাংলায় ভাষণ দেন।

তার বক্তৃতায় উঠে আসে দেশ ও আর্ন্তজাতিক নানা বিষয়। শেখ হাসিনা তার সরকারের নানা সফলতাসহ আগামী দিনের পরিকল্পনা তুলে ধরেন। দারিদ্রকে মানবতার শত্রু  উল্লেখ করে দারিদ্রের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে জয়ী হওয়ার প্রত্যয়ও ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

ভাষণের শুরুতে শেখ হাসিনা ৩৬ বছর আগে তার পিতা ও বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জাতিসংঘে দেওয়া বক্তৃতার কথা উল্লেখ করে বলেন, তারপর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেছে। কিন্তু আজও জাতিসংঘ সারাবিশ্বের বিপন্ন মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের শেষ ঠিকানা হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বিশ্বনেতাদের এ সমাবেশে তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ একটি উদার, প্রগতিশীল এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। জাতিসংঘের সক্রিয় অংশগ্রহণকারী এবং দায়িত্ববান সদস্য। বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্র, মানবাধিকার, শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘের সব উদ্যোগের প্রতি বাংলাদেশ পূর্ণ সমর্থন ও সহযোগিতা দিয়ে আসছে।

সন্ত্রাস দমন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশ এবং দেশের বাইরে বৈরি শক্তির বিরুদ্ধে বিশেষ করে, সন্ত্রাসবাদ দমনে, বাংলাদেশ কার্যকর ব্যবস্থা নিয়েছে। আমি পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, বাংলাদেশের মাটিতে কোনো ধরণের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে প্রশ্রয় দেব না। এজন্য এরই মধ্যে জাতিসংঘের সন্ত্রাসবিরোধী সকল কনভেনশনের অনুমোদন দিয়েছি। ব্যক্তিগতভাবে আমি এবং আমার পরিবার বারবার সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছি। কিন্তু সন্ত্রাসের কাছে মাথা নত করিনি।

প্রধানমন্ত্রী এসময় ১৯৭১সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় গুরুতর মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের জন্য গঠিত যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত সংক্রান্ত রোম ঘোষণার সঙ্গে সম্পূর্ণ সঙ্গতিপূর্ণ বলেও উল্লেখ করেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেদিন সন্ত্রাসীরা আমার পিতা বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ পরিবারের ১৮জন সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। আমার মা, তিন ভাই- শেখ কামাল, শেখ জামাল, দশ বছর বয়সের ছোট ভাই শেখ রাসেল ও দুই ভাইয়ের স্ত্রীকেও সেদিন হত্যা করা হয়েছিল। ’

নিজ ও তার দলের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন,  ১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পর বার বার আমার ওপর হামলা হয়েছে। বিশেষ করে ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত, যখন বিরোধীদলে ছিলাম তখন সংখ্যালঘুসহ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে তৎকালীন বিএনপি-জামাত সরকারের সময়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছিল। ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট আমার শান্তিপূর্ণ সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আমাকে হত্যার চেষ্টাসহ ২৪ জন মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল।

আমাদের মহামান্য রাষ্ট্রপতির স্ত্রী, আমার দলের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা আইভি রহমানও সেই হামলায় নিহত হয়েছিলেন।

বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরা মিশনে ১৯৮৮ সাল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ ২৪ টি দেশে ৩২টি মিশনে ৯৭ হাজার সৈন্য প্রেরণ করেছে। এসব শান্তি মিশনে আমরা আমাদের ৯২জন বীর সেনানীকে হারিয়েছি। বাংলাদেশ এখন শান্তিরক্ষা মিশনে সর্বোচ্চ সেনা প্রেরণকারী দেশ।  

শেখ হাসিনা তার ভাষনে পরিবেশ বিপর্যয়, সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য(এমডিজি)অর্জনসহ দেশি ও আর্ন্তজাতিক নানা বিষয় তুলে ধরেন।

বাংলাকে জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষা হিসেবে গ্রহণ করার আহবান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ২১শে ফেব্রুয়ারি ইউনেস্কো কর্তৃক আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের মাধ্যমে বাংলাদেশের ভাষা শহীদদের প্রতি সম্মান দেওয়া হচ্ছে। বিশ্বের প্রায় ৩০০ মিলিয়ন মানুষ আজ বাংলায় কথা বলেন। এ ভাষার রয়েছে সমৃদ্ধ ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং সাহিত্য।

গত বছর বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ বাংলাকে জাতিসংঘের অন্যতম দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে ঘোষণা করার অনুরোধ জানিয়ে সর্বসম্মতভাবে প্রস্তাব গ্রহণ করেছে। বাংলাকে দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে গ্রহণ করার অনুরোধ জানাচ্ছি।

বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা, আবাসন ও জীববৈচিত্র আজ হুমকির মুখে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন বন্যা, খরা, সাইক্লোন মানুষের ক্ষতি করছে। কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিঃসরণের কারণেই এ অবস্থা। বাংলাদেশ এক্ষেত্রে দায়ী না হয়েও মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। ফলে সহস্রাব্দের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন আজ কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। তবে বাংলাদেশ এই ক্ষতি মোকাবেলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, এরইমধ্যে সমুদ্র উপকূলে দুর্যোগকালীন আশ্রয়ের জন্য ১৪ হাজার আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। আরও আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এজন্য প্রয়োজন বিপুল পরিমাণ অর্থের। আশু ব্যবস্থা হিসেবে নিজস্ব অর্থায়নে একটি জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড এবং উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তায় একই ধরনের আরেকটি তহবিল গঠন করেছি।

এসময় তিনি বাংলাদেশ তার টিকে থাকার সংগ্রামে যেন সফল হতে পারে সেজন্য বিশ্ব সম্প্রদায়কে এসব তহবিলে উদার হাতে অনুদান দেওয়ার আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী শুধু বাংলাদেশ নয়, ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্রসমুহ এবং হিমালয় অঞ্চলসহ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মানুষের ভাগ্য বিপর্যয়রোধে তড়িৎ ব্যবস্থা নিতে উন্নত বিশ্বের প্রতি আহবান জানান।

বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা প্রসঙ্গে উন্নত বিশ্ব থেকে প্রাপ্ত উন্নয়ন সহায়তাকে সাধুবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তবে শুল্ক ও কোটামুক্ত বাজার প্রবেশাধিকার এবং বাণিজ্য উদারিকরণ করা হলে স্বল্পোন্নত দেশগুলো আরও লাভবান হতে পারবে।   পাশাপাশি আমরা ডব্লিউটিও বাণিজ্য আলোচনার দোহা রাউন্ডের সফল সমাপ্তি চাই।

একইসঙ্গে তিনি ব্রাসেলস কর্মপরিকল্পনার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ওইসিডি দেশগুলোর জাতীয় আয়ের ০.৭ শতাংশ উন্নয়নশীল দেশগুলোকে এবং ০.২ শতাংশ স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে দেওয়ার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে যথেষ্ট সফল হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, গত বছর আমাদের প্রবৃদ্ধি ছিল ৬ শতাংশ। খাদ্য উৎপাদন, কৃষি, গ্রামীন উন্নয়ন, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং খাদ্য ও জিনিসপত্রের দাম মানুষের ক্রয় মতার মধ্যে রাখতে সরকারের গৃহীত পদেক্ষেপের ফলেই এটা সম্ভব হয়েছে।

 এসময় তিনি তার ১৯৯৬-২০০১ সময়ে দায়িত্ব পালনকালে বাংলাদেশের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনসহ জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার মর্যাদাপূর্ণ ‘সেরেস’ অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হওয়ার বিষয়টি বিশ্ব নেতাদের কাছে তুলে ধরেন।

তার সরকার শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০১১ সালের মধ্যে শতভাগ শিশুকে স্কুলে ভর্তি ও ২০১৪ সালের মধ্যে শিক্ষার হার শতভাগে উন্নীত করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এজন্য বাজেটে শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি বাড়াতে কিছু কিছু হতদরিদ্র এলাকায় দুপুরের খাবার এবং অভিভাবকদের আর্থিক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। তবে, এই ব্যবস্থা আরও ব্যাপকভাবে বাড়ানো প্রয়োজন।

তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করাকে তার সরকারের অন্যতম লক্ষ্য উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি সেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য তার সরকার কাজ করছে। ই-সেন্টার কর্মসূচির আওতায় ৮হাজার ৫০০ ডাকঘরকে সংযুক্ত করা হয়েছে। ২০০৯ সালে আমরা ১০০ ইউনিয়ন পরিষদে ই-সেন্টার স্থাপন করেছি এবং এ বছরের মধ্যে আরও ৪ হাজার ৫’শ ইউনিয়ন পরিষদকে এর আওতায় আনার কাজ চলছে।

পাশাপাশি হাইটেক পার্ক প্রতিষ্ঠা, ই-গভর্নেন্স নেটওয়ার্ক, স্যাটেলাইট ও টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করার কাজ এগিয়ে চলছে বলেও তিনি জানান।

স্বল্পোন্নত দেশগুলো নিজ দেশের বেকার সমস্যার পাশাপাশি বিদেশে চাকরির ক্ষেত্রেও অভিবাসন বাধার সম্মুখীন হচ্ছে উল্লেখ করে এসব দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার রক্ষার উদ্যোগ নেওয়ার কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।
    
২০২১ সাল বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উল্লেখ করে এ সময়ের মধ্যে তার সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা ও দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে  চায় বলেও প্রধানমন্ত্রী তার ভাষনে উল্লেখ করেন।

সকলক্ষেত্রে নারীর সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, স্নাতক পর্যায় পর্যন্ত মেয়েদের শিক্ষা অবৈতনিক করার পরিকল্পনা ও ‘জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালা’ গ্রহণ করেছি। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রী, সংসদ উপনেতা ছাড়াও পাঁচজন কেবিনেট মন্ত্রী নারী। সংরক্ষিত আসনে ৪৫ জন নারী সংসদ সদস্য রয়েছেন। এছাড়াও ১৯ জন নারী সংসদ সদস্য সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। স্থানীয় সরকারে ৩০ শতাংশ আসন সংরক্ষিত করা হয়েছে। প্রশাসন ও সামরিক বাহিনীসহ সকল পেশায় নারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশের নারীরা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনেও কাজ করছেন।

এসময় তিনি দুঃস্থ ও বিধবা নারীদের ভাতা প্রদান, বৃদ্ধাশ্রমের ব্যবস্থা, সমাজের সংখ্যালঘু, প্রান্তিক এবং শারিরীক ও মানসিক প্রতিবন্ধীদের ‘সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী’ কর্মসূচির আওতায় আনার বিষয়টিও উল্লেখ করেন।

শেখ হাসিনা তার সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করার ফলে নতুন নতুন আবিষ্কারের দ্বার উন্মোচিত হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন। বিশেষ করে, জলবায়ু পরিবর্তন সহনশীল শস্যজাত উদ্ভাবনে উল্লেখযোগ্য সাফল্যেসহ সম্প্রতি ‘পাটের জন্ম ইতিহাস’ আবিষ্কারের কথাও উল্লেখ করেন।  

প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যখাতকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তার ভাষনে বলেন,  গ্রামের প্রতি ৬ হাজার মানুষের জন্য একটি করে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি। বর্তমানে প্রায় দশ হাজার ক্লিনিক স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছে। মোট ১৮ হাজার ক্লিনিক স্থাপন করা হবে। নিরাপদ মাতৃত্ব ও মাতৃস্বাস্থ্যের জন্য জাতীয় কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে।
সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০ মাসে মাতৃমৃত্যুর হার হাজারে ২.৯ থেকে কমে ২.৬ এ এসেছে। এক বছরের কমবয়সী শিশুমৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ৫২ থেকে কমে ৪১ এ এসেছে। জাতিসংঘ এই সাফল্যের স্বীকৃতি দিয়েছে।

এসময় তিনি ২০২১ সালের মধ্যে শিশুমৃত্যুর হার কমিয়ে হাজারে ১৫ এবং মাতৃমৃত্যুর হার কমিয়ে হাজারে ১.৫ এ নামিয়ে আনা এবং  ২০১৪ সালের মধ্যে ১০০ শতাংশ টিকা প্রদান সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণের কথা জানান বিশ্বনেতাদের।

বিগত বছরগুলোর খাদ্য, জ্বালানি ও অর্থনৈতিক সঙ্কট এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রতিবন্ধকতা স্বত্ত্বেও বাংলাদেশ জাতিসংঘ ও অন্য উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তায় সহস্রাব্দ উন্নয়ন ল্যমাত্রা অর্জনে যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, দারিদ্র্য বিমোচন, সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন ও লিঙ্গ বৈষম্য নিরসন এবং শিশুমৃত্যু হ্রাসে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছি এবং সঠিক লক্ষ্যে অগ্রসর হচ্ছি।     

প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণের শেষদিকে বিশ্বকে আগামী প্রজন্মের জন্য শান্তিপূর্ণ বিশ্ব হিসেবে গড়ে তোলার আহবান জানান। তিনি বলেন, আগামী প্রজন্মের সুন্দর জীবন নিশ্চিত করতে চাই। আসুন, আগামী প্রজন্মের জন্য আমরা আমাদের বর্তমানকে উৎসর্গ করি।

বাংলাদেশ সময়: ০৪১০ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad