ঢাকা: অভিনব কৌশল অবলম্বন করে ফাঁদ পেতে অর্থ আত্মসাৎ করত চক্রটি। দেশের ৬৪ জেলায় চক্রটির ৬৪ জন এজেন্ট রয়েছেন।
চক্রটি বিভিন্ন সময় জমি কেনা, ফ্ল্যাট কেনা, ইন্ডাস্ট্রি তৈরি করে দেওয়ার নাম করে সাধারণ মানুষদের সঙ্গে প্রতারণা করত। প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ পাঁচ সদস্যকে এরইমধ্যে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
শুক্রবার (১১ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর মিরপুর ও উত্তরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন- চক্রের মূল হোতা মিজান উকিল ওরফে কবির ওরফে মাসুদ (৪৭), তার পিএস পিন্টু খান (৫৪), ছোট ভাই সাইফুল ইসলাম (২৭), তার স্ত্রী কেনা রহমান (৩০) এবং সাদিয়া ইসলাম মৌ (৩০)।
গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে ৩ টি ব্রিফকেস, ১ টি লাগেজ, ৩৬টি টাকা সাদৃশ্য বান্ডেল, ১২টি মোবাইল ফোন, ২০টি মোবাইল সিম জব্দ করা হয়।
শনিবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি প্রধান) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এসব তথ্য জানান।
এ সময় তিনি বলেন, দেশের ৬৪ জেলায় তাদের সদস্য রয়েছে। তারা প্রতারণার কৌশল হিসেবে শিল্পপতি সমাজসেবকসহ নানা পরিচয় দিতেন। চক্রটি নারীদের দিয়ে টার্গেট করা ব্যক্তিকে অভ্যর্থনা দেওয়াসহ বিভিন্ন দামি রেস্টুরেন্টে খাবার পরিবেশন করাত। এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে টার্গেট করা ব্যক্তির বিশ্বাস অর্জন করত তারা।
ডিবি প্রধান বলেন, প্রতারক চক্রটি প্রতারিত ব্যক্তিদের সামনে একটি নাটক মঞ্চস্থ করত। সেখানে তিন মাসের মধ্যে জুয়া খেলে ৫ থেকে ১০ কোটি টাকা জেতার প্রতারণা করা হতো। অভিযুক্তরা বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করত।
মো. কবির প্রকাশ মিজান উকিল নিজেকে শিল্পপতি ও সমাজসেবক হিসেবে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় কারখানা স্থাপন, ক্লিনিক, মোবাইল কোম্পানির টাওয়ার বানানোর জন্য লোভ দেখিয়ে আগত ব্যক্তিদের আকৃষ্ট করত। মো. পিন্টু খান নিজেকে শিল্পপতির পিএস হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রতারিত ব্যক্তিদের রিসিভ করত এবং কবির প্রকাশের অফিসে নিয়ে আসতো। মো. সাইফুল ইসলাম জেলা পর্যায়ে দালাল এজেন্ট নিয়োগ করে স্থানীয় ধনী ব্যক্তিদের টার্গেট করে ঢাকায় নিয়ে আসত। কেয়া রহমান প্রতারণার পরিকল্পনা ও ক্লিনিক ব্যবসার নাটক সাজিয়ে কবির প্রকাশকে সহায়তা করত। সাদিয়া ইসলাম মৌ অফিস স্টাফ হিসেবে প্রতারিত ব্যক্তিদের আপ্যায়ন ও খাবার পরিবেশন করতো। তারা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে মানুষকে টার্গেট করে হাতিয়ে নিত লাখ-লাখ টাকা।
অনুরোধ জানিয়ে হারুন অর রশীদ বলেন, আপনারা অতি লোভে বা বেশি মুনাফার আশায় পরিচিত বা অপরিচিত কাউকে বিশ্বাস করে অর্থ প্রতারক চক্রের হাতে তুলে দেবেন না। প্রতারক চক্র সর্বদাই সাধারণ মানুষকে ঠকানোর জন্য নিত্য নতুন বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে। তাই প্রতারক চক্র সম্পর্কে প্রাথমিক পর্যায়ে কোনো তথ্য পাওয়া গেলে সঙ্গে সঙ্গে ডিবি পুলিশকে অবহিত করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০২২
এমএমআই/জেডএ