ঢাকা: তারতিলা আক্তার স্বর্ণা। কাজ করছেন ফ্রিল্যান্স গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে।
কথা হলে তারতিলা বাংলানিউজকে বলেন, ছোটবেলা থেকেই মেয়েদের চেয়ে ছেলেদের বেশি প্রাধান্য পেতে দেখেছি। তাই লেখাপড়া কোনো অবস্থাতেই ছাড়িনি। আমি জানতাম শুধু লেখাপড়াই পারে আমাকে সাহায্য করতে, ভবিষ্যতে ভালো ও সম্মানের কিছু করার সুযোগ দিতে।
তিনি বলেন, এমবিএ শেষ করার পর জব করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু পারিপার্শ্বিকতার জন্য করতে পারিনি। কিন্তু কিছু একটা করতেই হবে। সেখান থেকেই খোঁজ শুরু করি ঘরে বসে কী করা যায়। এরপর ‘শিখবে সবাই’ প্ল্যাটফর্মে ভর্তি হই। মেন্টর যেভাবে কাজ শিখিয়েছেন ও করতে বলেছেন তেমনভাবে করে যাচ্ছি। প্রশিক্ষণ চলাকালীন ও প্রশিক্ষণ পরবর্তী কোর্ষ বিষয়ক যে কোনো সমস্যায় পাশে পেয়েছি এ প্ল্যাটফর্মকে। এখন আমি নিজেকে সফল বলে মনে করি।
তারতিলা বলেন, ফ্রিল্যান্সাসিং এমন একটা পেশা, যেখানে নিজের দক্ষতার সঙ্গে সঙ্গে একটা টিম সাপোর্ট থাকলে দ্রুত ভালো করা যায়। আমি যে প্ল্যাটফর্মে কাজ শিখেছি সেখান থেকে অনেক সাহায্য পেয়েছি। প্রথমদিকে বিরতি দিয়ে কাজ পেলেও এখন নিয়মিত কাজ করছি ফাইভার মার্কেটপ্লেসে। মন থেকে বিশ্বাস করি মেন্টরের নির্দেশনা মেনে চললে ও ভালো কিছু করার জেদ থাকলে সফল হওয়া সম্ভব। আর লেখাপড়াটা অবশ্যয়ই খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমান সময়ে দেশের তরুণদের বেকারত্ব দূরীকরণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে ফ্রিল্যান্সিং। হিসেব অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে সাড়ে ছয় লাখ ফ্রিল্যান্সার রয়েছে। আর একজন সফল ফ্রিলান্সার হতে প্রয়োজন পরিশ্রম, অধ্যবসায় ও মেন্টরের সঠিক নির্দেশনা। এছাড়া এ তরুণদের উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা জোগানোর কাজটা করতে হয় মেন্টরদের। আর সেই কাজগুলোই করছে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘শিখবে সবাই’।
সারা দেশের তরুণের জন্য ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছে এ প্ল্যাটফর্মটি। গৃহিণী ও চাকরিজীবীরাও ঘরে বসে অনলাইনেই বিভিন্ন কোর্সে অংশ নিতে পারবেন। এছাড়া প্রশিক্ষণ শেষে আগ্রহীরা ফ্রিল্যান্সিং করে যেমন স্বাবলম্বী হতে পারবেন, তেমনি গড়তে পারবেন একটি দারুন ক্যারিয়ারও। ২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন সেক্টরে দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ দিয়েছে শিখবে সবাই। গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, পিএইচপি ও লারাভেল, মোশন গ্রাফিক্স, ভিডিও এডিটিং, ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মতো বেশ কিছু কোর্স করিয়ে থাকে শিখবে সবাই।
শিখবে সবাই কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০১৭ সাল থেকে আইটি সেক্টরে দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এখান থেকে শিক্ষার্থীরা মেন্টরের সঠিক দিকনির্দেশনা, নিয়মিত ক্লাস ও অ্যাসাইনমেন্ট করার সুফল পেতে শুরু করেন কোর্সের শেষ দিকেই। এছাড়া বেশ কিছু সামাজিক উন্নয়ন প্রজেক্ট নিয়েও কাজ করে চলেছেন তারা। এরমধ্যে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল মার্কেটিং প্রশিক্ষণ, সুবিধাবঞ্চিত কিশোর-কিশোরীদের গ্রাফিক্স ডিজাইন প্রশিক্ষণ অন্যতম।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০২২
এইচএমএস/আরবি