ঢাকা: জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের ভোগ-দখল না করে জনগণের সেবা দিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নব-নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন, আপনারা যদি চান সেবা দিয়ে জনগণের মন জয় করতে পারেন।
সোমবার (১৪ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নব-নির্বাচিত ৫৯টি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের শপথ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিনক সম্মেলন কেন্দ্রে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিটি খাতকে বেসরকারি খাতে উন্মুক্ত করে দিয়ে আমরা আজকে দেশের মানুষকে সেবা করে যাচ্ছি এবং মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি। আমাদের সব কাজই হচ্ছে মানুষের কল্যাণে। মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনে ইতোমধ্যে আমরা এতো উন্নতি করেছি। আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ আপনারা নির্বাচিত প্রতিনিধি হয়েছেন ভোগ দখলের জন্য নয়, জনগণের সেবা দেওয়ার জন্য। আপনারা যদি চান যে জনগণের সেবা দিয়ে মন জয় করতে পারেন, আর যদি চান জনগণের সম্পদ লুট করে চিরদিনের জন্য বিদায় নিতে পারেন- এটাই হলো বাস্তবতা। কাজেই আমি চাই যেহেতু জনগণ আপনাদের উপর ভরসা রেখেছে, আপনারা জনগণের সেবা করে তাদের মন জয় করে উন্নয়নে আত্মনিয়োগ করবেন। এক সময় কি হতো বাংলাদেশে? মঙ্গা হতো। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মঙ্গা হয় না, ইনশাল্লাহ কোনো দিন হবেও না। খাদ্য নিরাপাত্তা যেমন আমরা নিশ্চিত করেছি, আজকে আমরা ৪ কোটি ১৬ লাখ টন খাদ্য উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা নিজের পায়ে চলবো, কারও কাছে হাত পাতবো না। এক ইঞ্চি জমিও যেনো অনাদবাদি না থাকে সেটা আপনারা দেখবেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত কৃষিমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাকে আমি বলবো প্রত্যেক এলাকায় যে কৃষি অফিসার আছেন তারা যেনো মানুষকে সহযোগিতা করে, বুদ্ধি পরামর্শ দেয়। কৃষি উপকরণগুলো যাতে সহজে পায় কারণ আমাদের প্রায় দুই কোটি কৃষককে আমরা উপকারভোগী কার্ড দেই উপকরণের জন্য। এক কোটি মানুষ ১০ টাকায় ব্যাংক একাউন্ট খুলতে পারে। তাদের যে আমরা সেটা ভর্তুকি দেই, এই ভতুর্কি না বলে এটাকে আমরা বিনিয়োগই বলবো। এটা এক ধরনের বিনিয়োগ আমরা কৃষকদের মাধ্যমে করে যাচ্ছি খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর জন্য।
উপস্থিত জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, আবারও আপনাদের আমি অনুরোধ করবো জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধি তাদের সেবা করেই জনগণের হৃদয় জয় করতে হবে। আওয়ামী লীগ সরকার এ নিয়ে চতুর্থবার ক্ষমতায়। আমরা কিন্তু মানুষের কল্যাণেই কাজ করে যাচ্ছি, মানুষের স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছি। আমি সব সময় চাই মানুষকে উন্নত জীবন দিতে। একটি মানুষও দরিদ্র থাকবে না, গৃহহীন থাকবে না, ভুমিহীন থাকবে না। একটা লোকও অশিক্ষা-অন্ধকারে থাকবে না। প্রত্যেকটা মানুষ সুন্দরভাবে বাঁচবে, প্রত্যেকটা মানুষ সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হবে।
বক্তব্যের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী এসব জনপ্রতিনিধির উদ্দেশ্যে বলেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আপনারা এসেছেন। কিছুক্ষণ আগেই আপনারা শপথ নিলেন। আপনাদের দায়িত্ব, কর্তব্য জনগণের প্রতি এখন বেশি বাড়লো। এখানে আপনাদের বিরাট দায়িত্ব আছে। প্রত্যেকটা এলাকায় কি কি ধরনের অসুবিধা আছে, মানুষে জন্য কি কি কল্যাণকর কাজ করা যেতে পারে, মানুষের উন্নয়নের জন্য কি কি কাজ করতে পারে সেটা আপনাদের ভাবতে হবে। আমাদের এখানে বহুদলীয় গণতন্ত্র আছে হয় অনেক দল আছে। কেউ দল থেকে নির্বাচিত হয়েছেন বা কেউ হয় তো আলাদাভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু একটা কথা মনে রাখতে হবে- যখন আপনি ভোটে নির্বাচিত হয়ে এসেছেন তখন আপনার দায়িত্ব কিন্তু সবার জন্য। আমি বলতে পারি আমি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে কিন্তু উন্নয়নটা কে আমাকে ভোট দিলো আর কোন এলাকায় আমার দল সংগঠন সেটা আমি দেখিনি। আমি সার্বিকভাবে উন্নয়নের ব্যবস্থা নিয়েছি। একেবারে প্রতিটি মানুষ যেনো উন্নয়নের ছোঁয়া পায় সেই ব্যবস্থাটাই আমি নিয়েছি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইব্রাহিম।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০২২
এসকে/এসএ