ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

তাজরীন অগ্নিকাণ্ডের ১০ বছরে ১০ দিনব্যাপী কর্মসূচি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০২২
তাজরীন অগ্নিকাণ্ডের ১০ বছরে ১০ দিনব্যাপী কর্মসূচি

ঢাকা: তাজরীন গার্মেন্টসে অগ্নিকাণ্ডের ১০ বছরে ১০ দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি।

কর্মসূচির প্রথম দিন সোমবার (১৪ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর পরিবাগের সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে আলোচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন হয়।

প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন তাজরীনে নিহত শ্রমিক শাহ আলমের মা সাহেরা খাতুন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সামিনা লুৎফা এবং গার্মেন্টস শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের সমন্বয়ক শহীদুল ইসলাম সবুজ। অনুষ্ঠানে সভাপ্রধান হিসেবে সভা সমন্বয় করেন গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার।

আনু মুহাম্মদ বলেন, সরকারের তরফ থেকে এবং গণমাধ্যমে আমরা অনেক উন্নয়নের কথা শুনি। উন্নয়ন বিষয়ে অনেক পরিসংখ্যান, সংখ্যা ইত্যাদি দেখি। কিন্তু অন্যদিকে মানুষের জীবনের কোনো পরির্বতন দেখা যায় না। পোশাক খাতে ১০০ বিলিয়ন ডলারের স্বপ্ন দেখছেন কারখানার মারিকরা। কিন্তু শ্রমিকের জীবনের উন্নয়ন কতখানি ঘটেছে? সচিবালয় বা পুলিশের বড় কর্তাদের জন্য রাষ্ট্রের বরাদ্দ ও মনোযোগ থাকে কিন্তু শ্রমপরিদর্শক বা এ ধরনের পেশায় সেই মনেযোগ তাদের নেই। ভীষণ অনিরাপদ পরিবেশে কাজ করতে বাধ্য হন শ্রমিকরা।



তিনি বলেন, ২০১২ সালের নভেম্বরে তাজরীনে ১১৯ জন শ্রমিক নিহত হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে রানা প্লাজায় ভবন ধসে ১১৭৫ জন নিহত হয়েছেন। রাষ্ট্রের তরফ থেকে সাবধনতা থাকলে এ ঘটনা ঘটতো না। সারা দুনিয়ায় নিন্দিত হওয়ার পরেও নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সেজান জুসের কারখানায় একই ধরনের আগুনে নিহত হন ৫৪ জন শ্রমিক। বাংলাদেশের এই উন্নয়নে রাস্তায় অনেক দামি দামি গাড়ি চলে যেখানে অনিরাপদ কারখানার মালিকরা চলেন। অথচ তার পাসেই লক্কর-ঝক্কর বাসে চড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ ও হয়রানি বিহীন অভিবাসন নিশ্চিত করতে পারেনি সরকার।

শহিদুল আলম বলেন, যে গরু দুধ দেয় কৃষক সে গরুর যত্ন নেয়। কিন্তু আমাদের পোশাক কারখানার মালিকরা তাদের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির উৎস যে শ্রমিকরা তাদের উন্নয়নের জন্য ততটা যত্নশীল নন। শ্রমিকরা যেভাবে সংখ্যা হয়ে যায় শ্রমিকদের সক্রিয়তা ও প্রতিরোধের মাধ্যমেই তারা বের হয়ে আসতে পারবেন।

সামিনা লুৎফা গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতিকে ধন্যবাদ জানান শ্রমিকদের জীবন যাপন ও প্রতিবাদ প্রতিরোধকে সামনে নিয়ে আসার জন্য। কেননা এই রাষ্ট্র সাধারণ মানুষকে সংখ্যা বানিয়ে ফেলতে চায়। সংখ্যার বিপরীতে মানুষ হয়ে উঠতে হবে।

এই আলোকচিত্র প্রদর্শনী ১৫ নভেম্বর বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত পরিবাগ সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে এবং ১৬ নভেম্বর বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়ও ২৩ নভেম্বর নিশ্চিন্তপুরে তাজরীন গার্মেন্টসের সামনে অনুষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০২২
পিআর/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।