পাবনা: পাবনায় ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে চরমপন্থিরা। এবার তারা প্রশিক্ষণ নিয়েই মাঠে নেমেছে।
গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে অত্যাধুনিক অস্ত্র-বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতাররা আটঘরিয়ার একদন্তে আত্মসমর্পনকৃত সর্বহারা নেতা চাঞ্চল্যকর মুসা হত্যাকাণ্ডে জড়িত।
সোমবার (১৪ নভেম্বর) জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুনসী। তিনি জানান, আটঘরিয়া থানার একদন্ত ইউনিয়নের অলির মোড়ে সর্বহারা নেতা মুসা খাঁ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত আসামিদের শনাক্ত করার পর এক অভিযানে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তারা হলেন- চাটমোহরের কদমতলীর আব্দুল হাই সামাদের ছেলে সাইফুর ইসলাম ওরফে শুটার সিরাজ (২৫)। আটঘরিয়ার নগরচাচকিয়া উত্তরপাড়ার মো. নায়েব আলীর ছেলে মো. একরাম হোসেন (২৫), আমিনপুর থানার চর দূর্গাপুরের কোরবান ব্যাপারীর ছেলে মো. শরিফুল ইসলাম (২৫), আতাইকুলা থানার সাদুল্লাহপুরের ফারাদপুর নতুনপাড়ার গফুর প্রামাণিকের ছেলে নাহিদুল ইসলাম শাকিল (১৯) ও রাজবাড়ী জেলার চরভরাটের মো. আজিজুল আয়নাল প্রামাণিকের ছেলে জালাল প্রামাণিক (২৮)।
পুলিশ সুপার জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার (১৩ নভেম্বর) গভীর রাতে আতাইকুলার ফারাদপুর নতুন পাড়ায় মো. নাহিদের বাড়িতে সর্বহারাদের আস্তানায় অভিযান চালায় পুলিশের দুটি চৌকশ দল। অভিযানের সময় চরমপন্থিরা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে। তারা প্রশিক্ষিত। তাদের কাছে ৪টি লোডেড গান ছিল। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। তবে চৌকস দলের সদস্যরা উপস্থিত বুদ্ধি ব্যবহার করে চরমপন্থি সদস্যদের গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, রাউন্ড তাজা কার্তুজ, একটি ওয়ান শুটার গান, একটি বিদেশি এসএমসি, এসএমসি’র ম্যাগাজিন, এসএমসি’র ১৫ রাউন্ড তাজা কার্তুজ, একটি শটগান, ৩২ রাউন্ড বারো বোরের তাজা কার্তুজ, ছয়টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. মাসুদ আলম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. রোকনুজ্জামান সরকার।
মো. মাসুদ আলম বলেন, আসামিরা পূর্ব বাংলা-সর্বহারা-মাওবাদী বলশেভিক পুনর্গঠন আন্দোলনের (পিবিএসপি-এমবিআরএম) সশস্ত্র ও প্রশিক্ষিত সদস্য। গ্রুপটি রাজবাড়ি ও পাবনার ঢালারচর, সাগরকান্দি, সাদুল্লাপুর, ভাড়ারা, একদন্তের প্রত্যন্ত এলাকায় সংগঠিত হওয়ার চেষ্টায় লিপ্ত। ইতোপূর্বে এ গ্রুপের সদস্যদের হাতে সাবেক সর্বহারা সদস্য ভাড়ারার আমিরুল, সাদুল্লাপুরের বিল্লাল মিশৌরী, ঢালারচরের আক্কাস নিহত হয়েছে বলে আসামিরা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। তাদের সবার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
গত ২৬ অক্টোবর আটঘরিয়া থানার একদন্ত ইউনিয়নের অলির মোড়ে নজিবুলের চায়ের দোকানের পেছনে ক্যারাম খেলছিলেন ২০১৯ সালে আত্মসমর্পনকৃত সর্বহারা নেতা মুসা খাঁ। এদিন বিকেল পৌনে ৫টার দিকে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে গুলি করে-রামদা দিয়ে কুপিয়ে মুসাকে হত্যা করে। হত্যার সময় ‘সর্বহারা জিন্দাবাদ’, ‘মাওবাদী বলশেভিক জিন্দাবাদ’ বলে শ্লোগান দেয় সন্ত্রাসীরা।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২২
এমজে