ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘সক্ষমতা বাড়ানোর কারণে ফায়ার সার্ভিস ঘুরে দাঁড়িয়েছে’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২২
‘সক্ষমতা বাড়ানোর কারণে ফায়ার সার্ভিস ঘুরে দাঁড়িয়েছে’

ঢাকা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, এক সময় ‘দমকল’ বলে অবহেলা করলেও এখন সবাই ফায়ার সার্ভিসকে ‘দুঃসময়ের বন্ধু’ মনে করে। সক্ষমতা বাড়ানোর কারণে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

 

মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর মিরপুরস্থ ফায়ার সার্ভিস ট্রেনিং কমপ্লেক্সের প্যারেড গ্রাউন্ডে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহ-২০২২ এর অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।  

‘দুর্ঘটনা-দুর্যোগ হ্রাস করি, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ি’- এ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে প্রতিবছরের মতো এবারও ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহ শুরু হয়েছে।  

অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত আছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশেষ অতিথি রয়েছেন মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ফায়ার ফাইটাররা এখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জানমাল রক্ষার দায়িত্ব পালন করছেন।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক প্রতিটি উপজেলায় একটি করে ফায়ার স্টেশন নির্মাণের কাজ চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার সময় দেশে ফায়ার স্টেশনের সংখ্যা ছিল মাত্র ২০৪টি। বর্তমানে দেশে চালু ফায়ার স্টেশন হলো ৪৯১টি। বর্তমান সরকারের সময়ে দেশে নতুন ২৮৭টি ফায়ার স্টেশন চালু করা হয়েছে। আগামী অর্থবছরের মধ্যে আরও ৫২টি নতুন ফায়ার স্টেশন চালু করা হবে। তখন ফায়ার স্টেশনের সংখ্যা দাঁড়াবে ৫৪৩টি।

প্রধানমন্ত্রী ফায়ার সার্ভিসের জনবল বাড়াতেও কার্যকর ব্যবস্থা নিয়েছেন। ২০০৯ সালে এ প্রতিষ্ঠানের মোট জনবল ছিল মাত্র ৬ হাজার ১৭৫ জন। বর্তমানে এ জনবল হয়েছে ১৪ হাজার ৪৪৩ জন। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে জনবলের সংখ্যা হবে প্রায় ১৬ হাজার। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী এ প্রতিষ্ঠানের জনবল ৩০ হাজারে উন্নীত করার জন্য অর্গানোগ্রাম পুনর্গঠনের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে- যোগ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।  

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য দেশের মাটিতেই আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে বিশ্বমানের সুবিধা সংবলিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ফায়ার একাডেমি’ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হলে এখানে একসঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের এক হাজার সদস্যকে উন্নত প্রশিক্ষণ দেওয়া সম্ভব হবে। এমনকি আমরা বিদেশের ফায়ার সদস্য এখানে এনে উন্নত প্রশিক্ষণ দিতে পারবো।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে যেখানে ফায়ার সার্ভিসের বহুতল ভবনে কাজ করার মতো একটি ৪৭ মিটারের পুরনো গাড়ি ছিল, বর্তমানে এ প্রতিষ্ঠানের জন্য বহুতল ভবনে অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধারকাজের জন্য ২৮টি উঁচু মইয়ের গাড়ি আনা হয়েছে। সম্প্রতি বিশ্বের সর্বাধিক উচ্চতায় আগুন নেভানোর ৬৮ মিটারের লেডার সংবলিত গাড়ি ফায়ার সার্ভিসের যান্ত্রিক বহরে যোগ করা হয়েছে। ফলে ফায়ার সার্ভিস এখন ২২তলা পর্যন্ত আগুন নেভাতে সক্ষম। ফায়ার সার্ভিসের অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা ৬৩টি থেকে ১৯০টিতে উন্নীত করা হয়েছে। দেশের সব স্টেশনে পর্যায়ক্রমে অ্যাম্বুলেন্স দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।

সেবার সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি এ প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুযোগ-সুবিধাও বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, রেশন ও ঝুঁকিভাতা চালু করা হয়েছে, কর্মীদের জন্য নতুন পোশাক প্রবর্তন করা হয়েছে, পদকের সংখ্যা ও সম্মানী বাড়ানো হয়েছে। ফায়ার ফাইটারসহ কয়েকটি পদের বেতন ও মর্যাদা বাড়ানো হয়েছে।

বক্তব্যের শুরুতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্মরণ করেন চলতি বছরের ৪ জুন সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোর ভয়াবহ অগ্নি দুর্ঘটনায় নির্মম মৃত্যুর শিকার ফায়ার সার্ভিসের ১৩ জন অগ্নি বীরসহ বিভিন্ন সময় অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধারকাজে অংশ নিয়ে ৩০ জন ফায়ার ফাইটারকে, যারা কর্তব্য পালনকালে জীবন দিয়েছেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২২
এজেডএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।