গাইবান্ধা: পরিবেশ অধিদপ্তর এবং স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে কাঠ-গাছের গুঁড়ি পুড়িয়ে তৈরি করা হচ্ছে কয়লা। এদিকে চুল্লি থেকে নির্গত ধোঁয়ায় নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি।
সরেজমিন উপজেলার বরিশাল ইউনিয়নে বাসুদেবপুর (নুরিয়াপাড়া) গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, ওই গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম ও মিজানুর রহমান যৌথভাবে গড়ে তুলেছেন কয়লা তৈরির অবৈধ কারখানা। সেখানে বিশেষ ধরনের চুল্লি বানিয়ে কাঠ পুড়িয়ে তৈরি করছেন কয়লা। চুল্লির চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বড়-বড় কাঠের গুঁড়ি। কাঠ পোড়ানোর সময় নির্গত হয় প্রচুর কালো ধোঁয়া। চুল্লির মধ্যে সারিবদ্ধভাবে কাঠ সাজিয়ে একটি মুখ খোলা রেখে অন্যগুলো মাটি ও ইট দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। খোলা মুখে আগুন দিয়ে সেটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়।
নজরুল ইসলাম ও মিজানুর রহমান জানান, প্রতিটি চুল্লিতে প্রতি রাউন্ডে ২শ থেকে ৩শ মণ কাঠ পোড়ানো হয়। ৮ থেকে ১০ দিন পোড়ানোর পর চুলা থেকে কয়লা বের করা হয়। পোড়ানো কয়লা ঠাণ্ডা করে ব্যবসার উদ্দেশ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ক্রেতাদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা রবিউল ও সাহারুল ইসলাম জানান, জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই অবৈধভাবে জনবসতিপর্ণ এলাকায় এসব কারখানা স্থাপিত হয়েছে। যা পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি স্বরূপ। চুল্লি থেকে নির্গত ধোঁয়ায় আশপাশ আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। এতে এলাকায় শ্বাসজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। অন্যদিকে উঠতি ফসলের ওপর বিরুপ প্রভাব ফেলছে। অবিলম্বে অবৈধ এসব কারখানা বন্ধের জোর দাবি জানান তারা।
এদিকে, পরিবেশের ছাড়পত্রের বিষয়ে মালিক মিজানুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এর জন্য পরিবেশে ছাড়পত্র লাগে না।
এ ব্যাপারে পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুজ্জামান নয়ন জানান, ‘বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। ওইসব কারখানার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে গত ২ নভেম্বর জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের গোপালপুর জীবনপুর ও ছয়ঘরিয়া গ্রামের অভিযান চালায় পরিবেশ অধিদপ্তর। এসময় অবৈধ কাঠ কয়লার ৯টি কারখানা বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হয়। পরিবেশ অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক সৈয়দ ফরহাদ হোসেন এ অভিযান পরিচালনা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০২২
আরএ