সাতক্ষীরা: প্রায় সাড়ে ৩ হাজার গ্রাহককে ভুয়া রশিদ দিয়ে বীমা প্রিমিয়ামের কোটি টাকা নিয়ে চম্পট দিয়েছেন মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ শাখা ব্যবস্থাপক রওশন গাজী।
এতে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর জোনাল অফিসের আওতাধীন গ্রাহকরা বীমার টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় রয়েছেন।
প্রতারক রওশন গাজী কালিগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের আব্দুল বারী গাজীর ছেলে।
ভুক্তভোগীরা জানান, রওশন গাজী ১৫ বছর আগে মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির কালিগঞ্জ আঞ্চলিক শাখা ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ শুরু করেন। কৃষ্ণনগর তার নিজের ইউনিয়ন হওয়ায় অত্র ইউনিয়নের কালিকাপুর, রঘুনাথপুর, বালিয়াডাঙ্গা, শোতা, নেঙ্গী, মানপুরসহ অন্যান্য গ্রামের সহজ সরল অসহায় দিনমজুর ও ব্যবসায়ীদের মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির পলিসি খুলে দিয়ে এ যাবতকাল মাসিক ও বাৎসরিক কিস্তি আদায় করেছেন।
কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের গ্রাহক উম্মে হাবিবা জানান, তিনি ১২ বছরে ৬০ হাজার টাকার কিস্তি দিয়েছেন। বীমার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। কিন্তু এখন রওশনকে পাওয়া যাচ্ছে না।
কালিকাপুরের আব্দুর রশিদ জানান, তার ১২ বছর মেয়াদের ৮ লাখ টাকার বীমার মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু রওশন কাগজপত্র নিয়ে উধাও হয়ে গেছে।
একইভাবে আবুল কাশেমের ১ লাখ টাকা, হাবিল শেখের ৫০ হাজার, আরজিনা খাতুনের ৭২ হাজার, আকবর শেখের ৫০ হাজার, সাইফুলের ৫০ হাজার, তাহমিনা খাতুনের ৬০ হাজার, মশিউর রহমানের ৪২ হাজার, নাসিরের ৮০ হাজার টাকাসহ হাজার হাজার গ্রাহকের টাকা মূল বীমা কোম্পানিতে জমা না দিয়ে উধাও হয়ে গেছে রওশন।
তারা আরও জানান, টাকার জন্য কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর অফিসে গেলে সেখানকার কর্মকর্তারা বলছে এটা ভুয়া রশিদ, ভুয়া কাগজ। এর দায়-দায়িত্ব তারা নিতে পারবেন না।
এদিকে ১০, ১২ বা ১৫ বছর ধরে জমাকৃত বীমার টাকা না পেয়ে অনেকে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন, মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
রওশনের প্রতারণার বিষয়ে বাবা আব্দুল বারী জানান, সে অনেক আগে বউ নিয়ে বাড়ি থেকে চলে গেছে। আমরা তার খোঁজ জানি না। তার শ্বশুরবাড়ি কাশিবাড়ী গ্রামে গিয়েও তাকে খুঁজে পাইনি।
একইভাবে কালিগঞ্জ থানা রোডে অবস্থিত মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির আঞ্চলিক কার্যালয়ে গেলেও শাখা ব্যবস্থাপক দক্ষিণ শ্রীপুর গ্রামের মনিরুজ্জামান বাবলুকে পাওয়া যায়নি। তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি বিভিন্ন অজুহাতে অফিসে আসছেন না।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২২
আরএ