লক্ষ্মীপুর: স্কুলের মাঠে খেলাধুলা করার সময় অসাবধানতাবসত কয়েকজন শিক্ষার্থী পড়ে যায় পাশের ধানক্ষেতে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ক্ষেতের মালিক তর্কে জড়িয়ে পড়েন বিদ্যালয়ের পরিচালক ও শিক্ষিকার সঙ্গে।
মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সদর উপজেলার পশ্চিম চরমনসা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এতে ওই শিক্ষিকার মেয়ে নাসরিন সুলতানা মিশু ও ছেলে মো. আজিমও আহত হন। আহতরা সবাই ওই এলাকার মা-মনি আইডিয়াল স্কুলের শিক্ষক। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আহত শিক্ষকদের উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, মা-মনি আইডিয়াল স্কুলের শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার সকালে বিদ্যালয় মাঠে খেলাধুলা করছিল। এক পর্যায়ে মাঠের পাশে থাকা ধানক্ষেতে কয়েকজন শিক্ষার্থী পড়ে যায়। এতে ধানের ক্ষতি হয়েছে দাবি করে ক্ষেতের মালিকের স্ত্রী খালেদা বেগম এসে বিদ্যালয়ের নারী শিক্ষিকা শাহজাদা বেগমের সঙ্গে তর্কবিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। পরে খবর পেয়ে খালেদা বেগমের স্বামী নুর নবী, ছেলে রিপন ও রিয়াজ এসে স্কুলের অফিস কক্ষে হামলা চালান। তাদের বাঁধা দিতে গেলে শিক্ষক শাহজাদা বেগম, তার মেয়ে নাসরিন সুলতানা মিশু ও ছেলে মো. আজিমকে মারধর করা হয়।
পরে জাতীয় জরুরি সেবা নাম্বার ৯৯৯ এ কল দিলে পুলিশ গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালের পাঠায়।
আহত মা-ছেলে, মেয়ে মিলে বিদ্যালয়টি ২০১৮ সাল থেকে পরিচালনা ও শ্রেণি কক্ষে পাঠদান দিয়ে আসছেন। বিদ্যালয়টি সরকারি রেজিস্ট্রারভুক্ত বলে জানিয়েছেন তারা। এ বিদ্যালয়ে বর্তমানে ১ম শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ৮০ জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে।
বিদ্যালয়ের পরিচালক ও নারী শিক্ষিকা শাহজাদা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, এটি একটি অবহেলিত গ্রাম। ২৫ বছর ধরে চর মনসা গ্রামের ছেলে-মেয়েকে পড়ালেখা করাচ্ছি। সর্বশেষ ২০১৮ সালে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে মা-মনি আইডিয়াল স্কুলের যাত্রা শুরু করি। বর্তমানে এ বিদ্যালয়ে ৮০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। বিদ্যালয়টি দেওয়ার পর থেকে একটি চক্র স্কুলটি বন্ধ করে দেওয়ায় জন্য বানচাল করছে।
তিনি আরও বলেন, মাঠের পাশে স্থানীয় প্রভাবশালী নুর নবীর একটি ধানক্ষেত রয়েছে। নুর নবীর স্ত্রীর দাবি- শিশুরা নাকি তাদের ক্ষেতের ধানগাছ নষ্ট করছে। এ নিয়ে তারা এসে আমার স্কুলে ঢুকে আমাদের ওপর হামলা চালায়।
অভিযুক্ত নুর নবী বলেন, স্কুলের ছেলে-মেয়েরা ছাড়া ও শিক্ষক শাহজাদার কয়েকটি রাজ হাঁস আমাদের ধানক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি করছে। এ নিয়ে আমার স্ত্রীর সঙ্গে তার হাতাহাতি হয়েছে। এখানে কোনো মারধরের ঘটনা ঘটেনি।
লক্ষ্মীপুর সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ৯৯৯ কল পেয়ে আহত শিক্ষকদের উদ্ধার করে হাসপাতালের পাঠানো হয়েছে। চিকিৎসা নেওয়ার পরে তাদের থানায় এসে অভিযোগ দেওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০১৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২২
এফআর