রাজশাহী: আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও বৈঠক করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।
বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে নগর ভবনে মেয়রের দপ্তর কক্ষে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে চীনের রাষ্ট্রদূতকে আম আকৃতির শুভেচ্ছা স্মারক ও বিভিন্ন উপহার সামগ্রী দেন রাসিক মেয়র। এ সময় রাসিক মেয়রকেও উপহার দেন চীনের রাষ্ট্রদূত।
বৈঠক শেষে রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন সাংবাদিকদের বলেন, চায়না বর্তমানে আমাদের অত্যন্ত বন্ধুপ্রতীম একটি দেশ ও অন্যমত প্রধান উন্নয়ন সহযোগী। অধিকাংশ বড় বড় অবকাঠামোগুলো তাদের কোম্পানি বা তাদের প্রকৌশলীদের মাধ্যমেই নির্মিত হচ্ছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে আমরা উপকৃত হব। আমার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি রাজশাহী মহানগরীর পরিচ্ছন্নতা ও সবুজায়নের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ও চায়নার সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়। সেই চুক্তিতে পদ্মা নদীর পানি পাম্প করে গোদাগাড়ী পৌরসভা, কাটাখালী পৌরসভা, নওহাটা পৌরসভা ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের পাইপ লাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করা হবে। সেটার বিষয়ে সর্বশেষ পর্যায়ে রয়েছে। সবশেষ একটা স্বাক্ষর হলেই চায়নিজ এক্সিম ব্যাংক প্রথম কিস্তিটি ছাড় করবে।
মেয়র বলেন, রাজশাহী মহানগরীর সলিড বর্জ্য যেগুলো আমরা ট্রিটমেন্ট না করে ফেলে দেই। সেগুলো সারা বিশ্বে টিটমেন্ট করে রি-ইউজের মাধ্যমে জ্বালানি ও জৈব সার তৈরি করা হয়। আমরা চীনা রাষ্ট্রদূতকে এ বিষয়ে প্রস্তাবনা দিয়েছি। তিনি আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। চীন সরকার ও সিটি করপোরেশন যৌথভাবে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। একইসঙ্গে শহরের যত বর্জ্য পানি তা ড্রেনের মাধ্যমে বাইরে দিয়ে দেই। তবে তা ট্রিটমেন্ট করে কৃষি কাজে ব্যবহারের উপযোগী করার বিষয়েও কথা হয়েছে। এ বিষয়ে তারা প্রস্তাবনা চেয়েছে।
বাংলাদেশের জুটমিল, সুগারমিল টেক্সটাইল মিল বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। এগুলো চায়না সরকারের সঙ্গে চুক্তি করে ইজারাভিত্তিক দেওয়ার মাধ্যমে নতুন করে পরিচালনার সুযোগ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তারা বলেন, চায়না প্রস্তুত আছে। বাংলাদেশ সরকার যদি প্রস্তাব দেয় তবে তারা তা গ্রহণ করবে।
চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, রাজশাহীতে খুব স্বল্প সময়ের জন্য সফরে এসেছি। এ সময়ের মধ্যে রাজশাহী নগরী ঘুরে আমি মুগ্ধ হয়েছি। রাজশাহী গ্রিন ও ক্লিন সিটি। এ শহরের খুব উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ রয়েছে। রাজশাহী বিভাগের পাবনায় অবস্থিত ইপিজেডে চায়নার পাঁচটি কোম্পানি কাজ করছে। এছাড়া আরও ছয়টি কোম্পানি আসছে। আরও কোম্পানি বাংলাদেশের এ অংশে বিনিয়োগের জন্য আগ্রহী। বাংলাদেশে ব্যবসার ভালো পরিবেশ থাকায় আমরা আগ্রহী হচ্ছি। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে চায়না সরকারের অবদান ও সম্পৃক্ততার বিষয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করেন। এছাড়া উভয় দেশের সম্পর্ক আগামীতে আরও সুদৃঢ় হবে বলে প্রত্যাশা করেন।
এর আগে চীনের রাষ্ট্রদূতের আগমনে নগর ভবনের প্রধান ফটকে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান রাসিকের কাউন্সিলর ও কর্মকর্তারা। বর্ণাঢ্য আয়োজনে চীনের রাষ্ট্রদূতকে বরণ করা হয়।
এ সময় রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র-২ রজব আলী, প্যানেল মেয়র-৩ তাহেরা খাতুন মিলি, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এবিএম শরীফ উদ্দিন, প্রধান প্রকৌশলী নূর ইসলাম তুষার, প্রকল্পের ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যাডভাইজার আশরাফুল হক, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবু সালেহ মো. নূর-ঈ সাঈদ, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এফ এ এম আঞ্জুমান আরা বেগম, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ মো. মামুনসহ অন্যান্য কর্মকর্তা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০২২
এসএস/আরবি