ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

আগের মতো বিক্রি হচ্ছে না ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার পতাকা

ইমতিয়াজ আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০২২
আগের মতো বিক্রি হচ্ছে না ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার পতাকা

মাদারীপুর: বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা ঘিরে চলছে উৎসব-উদ্দীপনা। পছন্দের দল জানান দিতে টাঙানো হচ্ছে পতাকা।

আর পতাকা বিক্রেতারা ছড়িয়ে পড়ছে শহর থেকে গ্রামে। খেলাকে ঘিরে মৌসুমী পতাকা বিক্রেতার সংখ্যাও বেড়েছে। বাঁশের লাঠির সাথে বিভিন্ন দেশের পতাকা বেঁধে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করছেন তারা। তবে গত মৌসুমের চেয়ে চলতি মৌসুমে কমেছে পতাকা বিক্রি। বিক্রেতারা জানান,'পতাকা আগের তুলনায় কম বিক্রি হচ্ছে। বেশ চলছে ১০ টাকা দামের প্লাস্টিকের কাঠির সাথে বাঁধা ছোট পতাকা। কাঠির সাথে বাঁধা ছোট পতাকা প্রতিদিন দেড় থেকে দুই শতাধিক পিচ বিক্রি হয়। অন্য দিকে সারাদিনে বড় পতাকা বিক্রি হয় ৫০/৬০ টি।

বিভিন্ন শ্রেনি পেশার মানুষের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সর্বত্র এখনো আলোচনা চলছে। প্রিয় দলকে এগিয়ে রাখতে তর্কযুদ্ধেও লিপ্ত হতে দেখা যাচ্ছে তরুণদের। খেলা দেখার প্রস্তুতি নিচ্ছে ফুটবল প্রেমী নানা বয়সী মানুষ। কোথাও কোথাও বড় পর্দারও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এছাড়া একত্রে বসে খেলা দেখার আয়োজন চলছে হাট-বাজারে বিভিন্ন বয়সীদের মধ্যে। এদিকে পছন্দের দলের জার্সি পড়ে ঘুরে বেড়াতেও দেখা যাচ্ছে অনেককে। অনেকে বাড়িতে বা ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে বাঁশ দিয়ে টাঙাচ্ছে প্রিয় দলের পতাকা। ভ্যান-অটোরিক্সা, ইজিবাইকে ক্ষুদ্রাকৃতির পতাকাও লাগাচ্ছেন ফুটবলপ্রেমীরা। খেলা নিয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনা কমতি নেই।

এদিকে জেলা শহর থেকে গ্রামে গ্রামে ঘুরে ঘুরে পতাকা বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে বিক্রেতাদের। আগে জেলা বা উপজেলা শহরে পতাকা বিক্রেতাদের দেখা মিললেও ইদানিং গ্রামে গ্রামে ঘুরে পতাকা বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে।  

নিজের ছবি প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলার শিরখাড়া এলাকার পতাকা বিক্রেতা মো.আব্দুল্লাহ বলেন, 'সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে পতাকা বিক্রি করি। আগে মালয়েশিয়া ছিলাম। করোনার সময় বাড়িতে এসেছি। কোন কাজ না থাকায় পতাকা বিক্রি করছি। আমরা নিজেরাই কাপড় কিনে পতাকা বানাই। পরে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করি। ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনার পতাকা সমান সমান বিক্রি হয়। এক দিন ব্রাজিলের পতাকা বেশি বিক্রি হলে আরেক দিন আবার আর্জেন্টিনার পতাকা বেশি বিক্রি হয়। অন্য দেশের পতাকা খুব বেশি বিক্রি হয় না। কেউ চাইলে বানিয়ে দেই। '

আরেক পতাকা বিক্রেতা মো. ইদ্রিস বলেন,'গত মৌসুমের চেয়ে এবার পতাকা কম বিক্রি হচ্ছে। গতবারে খেলা শুরু হবার আগে প্রচুর পতাকা বিক্রি করেছি। বিভিন্ন বাজার পতাকা আর পতাকা টাঙানো হয়েছিল খেলা শুরুর আগেই। তবে এবার বিক্রি বেশ কম হচ্ছে। দৈনিক ৫০/৬০ টি পতাকা বিক্রি করতে কষ্ট হচ্ছে। '

তিনি আরও বলেন, 'এখন লোকজন ফেসবুকে খেলার উৎসব নিয়ে মেতে থাকে। ফেসবুকে পতাকার ছবি দেয়। পতাকা কিনে টাঙানোর সংখ্যা কমে গেছে!'

পতাকা বিক্রেতারা জানান, 'বড় সাইজের পতাকার বিক্রি হয় ২শত টাকায়, মাঝারি সাইজের পতাকা ১শত টাকা। এছাড়া ছোট ছোট প্লাস্টিকের স্ট্যান্ড পতাকা ১০ টাকা করে বিক্রি হয়। বড় সাইজের পতাকা বেশি বিক্রি হয় মাঝারি সাইজের চেয়ে।

ফুটবল খেলাকে ঘিরে উৎসব বয়ে চলছে সর্বত্র। রাত জেগে খেলা দেখার আয়োজনেরও কমতি নেই। ঘরে ঘরে খেলা দেখার বাড়তি আয়োজন। মাঠে-ঘাটে, হাট-বাজারেও খেলা দেখার উৎসব-আনন্দ। এই উৎসব ঘিরে রোজগারের আশায় নেমেছেন অসংখ্য পতাকা বিক্রেতারা। বাজারের দর্জি দোকানেও তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন সাইজের পতাকা। বাড়তি রোজগারের আশা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাঁধে পতাকা বয়ে বেড়াচ্ছেন বিক্রেতারা। খেলা শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের কাঁধে বয়ে বেড়াবে প্রিয় দলের পতাকা, মাথার ব্যান্ডসহ নানান সামগ্রী।

বাংলাদেশ সময়:১২৩১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০২২
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।