ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

অবৈধ গ্যাস লাইনে কারখানা চলে প্রকাশ্যে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২২
অবৈধ গ্যাস লাইনে কারখানা চলে প্রকাশ্যে

নারায়ণগঞ্জ: রূপগঞ্জ উপজেলায় নিয়মনীতিকে পাত্তা না দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তিতাস গ্যাসের অবৈধ আবাসিক সংযোগ ব্যবহার করে আসছে তামিম টেক্সটাইল নামে একটি তুলা কারখানা। প্রতিষ্ঠানটি বাণিজ্যিকভাবে তিতাসের গ্যাস ব্যবহার করে।

দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে এমন অপকর্ম চলে আসলে বিকারহীন প্রশাসন ও তিতাস কর্তৃপক্ষ। কোনো পদক্ষেপই তারা গ্রহণ করছে না। জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতিমাসে মোটা অংকের মাসোয়ারা দিয়ে কারখানাটি চালিয়ে আসছে তামিম টেক্সটাইল কর্তৃপক্ষ। এতে প্রতি বছর লাখ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

তামিম টেক্সটাইলটি মূলত উপজেলার তারাব পৌরসভার রূপসী কলাবাগান এলাকায় অবস্থিত। কারখানার মালিক নূর হোসেন স্থানীয় প্রভাবশালী। এতে কাজ করেন অন্তত ৮-১০ জন শ্রমিক। বিভিন্ন গার্মেন্টস থেকে পরিত্যক্ত ও ময়লা তুলা কিনে এনে কারখানায় বয়লারের মাধ্যমে পরিষ্কার করা হয়।

প্রতিষ্ঠানে রয়েছে তিনটি বয়লার, যেগুলো চালানো হয় তিতাস গ্যাসের অবৈধ আবাসিক সংযোগে। গ্যাসের সংযোগও নিম্নমানের পাইপে করা। স্থানীয়দের লাইনের সঙ্গে আবার কারখানার গ্যাস লাইন সংযুক্ত। ফলে যেকোনো সময় মারাত্মক দুর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে।

কারখানায় চালু থাকা তিন ব্রয়লারে মাসিক ৪০ হাজার টাকা বিল আসা খুবই স্বাভাবিক। তার ওপর বাণিজ্যিকভাবে গ্যাস সংযোগ নিতে খরচ হয় কয়েক লাখ টাকা। কিন্তু কারখানার মালিক নূর হোসেন এসবের ধার ধারেন না। স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিলেও তার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতে পারে না।

জানা গেছে, নূর হোসেন তার কারখানায় গ্যাস সংযোগ দিতে তিতাস গ্যাসের যাত্রামুড়া জোনাল অফিসের কর্মকর্তাদের মাসোয়ারা দিয়ে ম্যানেজ করেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, তামিম টেক্সটাইলের অবস্থান বিবেচনায় গ্যাস সংযোগ সমীচীন নয়। তবুও প্রতিষ্ঠানের মালিক গ্যাস সংযোগ দিয়েছেন- কিন্তু তিতাস এ ব্যাপারে কখনোই কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বড় ধরনের বিস্ফোরণের সম্ভাবনা থাকলেও নিজেরা বাড়ি ঘর ছেড়ে যেতে পারছেন না। সব সময় আতঙ্ক নিয়ে বসবাস করতে হয় তাদের। ফলে যত দ্রুত সম্ভব এ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার দাবি করেছেন স্থানীয়রা।

তামিম টেক্সটাইলের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক সোহাগের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা হলে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, আমি কয়েকমাস আগে এ কারখানায় এসেছি। এখানকার গ্যাস সংযোগ অবৈধ কিনা জানি না।

কারখানা মালিক নূর হোসেনকে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলেও তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

তিতাস গ্যাসের যাত্রামুড়া জোনাল অফিসের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মিজবাউর রহমান বলেন, রূপসী এলাকায় ব্যান্ডেজ কারখানা অবৈধ গ্যাসে চলছে বলে তথ্য পেয়েছি। শীঘ্রই অবৈধ গ্যাস সংযোগগুলো বিচ্ছিন্ন করতে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

দীর্ঘদিন ধরে একটি কারখানা অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষ কিছু জানে কিনা বা আগে কোনো ব্যবস্থা কেন নেওয়া হয়নি- এ ব্যাপারে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২২
এমআরপি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।