ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

আলী ইমামের কর্ম ও জীবন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২২
আলী ইমামের কর্ম ও জীবন

ঢাকা: শিশু সাহিত্যিক, সংগঠক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব আলী ইমাম মারা গেছেন। শ্বাসযন্ত্র, নিউমোনিয়াসহ নানা জটিল রোগ নিয়ে সোমবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ধানমন্ডির ইবনে সিনা বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন তিনি।

আলী ইমামের কর্ম ও জীবন সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক

আলী ইমামের জন্ম ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। জন্মের ছয়মাস পরই তার পুরো পরিবার ঢাকায় চলে আসে। পরিবারসহ তিনি থাকতেন পুরান ঢাকার ঠাটারিবাজারে। তার শৈশব-কৈশোর কেটেছে পুরান ঢাকার ওয়ারী, লিঙ্কন রোড, নয়াবাজার, নওয়াবপুর, কাপ্তানবাজার, ফুলবাড়িয়ায় এলাকায়।

তিনি ছয়শোরও বেশি বইয়ের লেখক। কর্মজীবনের শেষপ্রান্তে একাধিক স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। বাংলাদেশ টেলিভিশন (২০০৪-২০০৬) ও অধুনালুপ্ত চ্যানেল ওয়ানের (২০০৭-২০০৮) মহাব্যবস্থাপক ছিলেন আলী ইমাম।

১৯৯৮ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত তিনি ইউনিসেফের ‘মা ও শিশুর উন্নয়নে যোগাযোগ কার্যক্রম প্রকল্প’ পরিচালক ছিলেন। ওই দায়িত্ব পালনকালে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন, জার্মানির মিউনিখ, ব্রাজিলের রিওতে অনুষ্ঠিত ‘চিলড্রেন মিডিয়া সামিটে’ যোগ দেন। মিউনিখে অনুষ্ঠিত ‘প্রি জুঁনেসি চিলড্রেনস টিভি প্রোডাকশন প্রতিযোগিতা’র (২০০০) জুরির দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি ছিলেন ‘সার্ক অডিও ভিজুয়াল বিনিময় অনুষ্ঠানে’র প্রধান সমন্বয়কারী (২০০০-২০০১)। টেলিভিশন ও বেতারে শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানের নির্মাতা ও উপস্থাপক হিসেবে তিনি বিশেষ প্রশংসনীয়।

বাংলাদেশ টেলিভিশনের ‘হ্যালো, আপনাকে বলছি’ (১৯৯৯-২০০৪) নামে তার উপস্থাপিত সরাসরি অনুষ্ঠানটি জনপ্রিয় হয়েছিল। এছাড়া বাংলাদেশ টেলিভিশনের বিখ্যাত প্রামাণ্য শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান ‘দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া’র (১৯৮০-১৯৮৭) প্রযোজনা করেন তিনি।

বাংলাদেশের শিশুসাহিত্যে অবদানের জন্য আলী ইমাম ২০০১ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার এবং ২০১২ সালে শিশু একাডেমি শিশুসাহিত্য পুরস্কার পান। এছাড়াও অনেক পুরস্কার পান তিনি। শিশুসাহিত্যিক হিসেবে জাপান ফাউন্ডেশনের আমন্ত্রণে ২০০৪ সালে তিনি জাপান পরিভ্রমণ করেন।

আলী ইমামের শিশুসাহিত্য চর্চার শুরু শৈশব থেকে। ১৯৬৮ সালে তিনি তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তান শিক্ষা সপ্তাহে বিতর্ক এবং উপস্থিত বক্তৃতায় চ্যাম্পিয়ন হন। ১৯৮৬ সালে ইউনেস্কো আয়োজিত শিশুসাহিত্য বিষয়ক প্রকাশনা কর্মশালায় অংশ নেন। এছাড়া বাংলাদেশ স্কাউটসের প্রকাশনা বিভাগের ন্যাশনাল কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

২০০৬ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনের চাকরি থেকে অবসরগ্রহণ করে ছিলেন আলী ইমাম। পরে তিনি স্যার সাঈদ ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজিতে ভর্তি হন কম্পিউটার প্রকৌশল বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি নিতে। ২০১০ সালে তিনি শিক্ষা সমাপ্ত করেন। তার নকশায় রাজধানীতে নির্মিত হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার’।

গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, ফিচার, ভ্রমণকাহিনী, বিজ্ঞান কল্পকাহিনী সবই তিনি লিখেছেন ছোটদের জন্য।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২২
এইচএমএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।