ফরিদপুর: ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে একজন রাজাকার পুত্রকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সুপারিশ করায় ক্ষোভে উত্তাল ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা।
সোমবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে গোপালপুরের নির্বাচনে ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ পাওয়া সেই রাজাকারপুত্র হারিচুর রহমান সোহান রাজপথে মোটরসাইকেল বহর নিয়ে শোডাউন করেছেন।
এ ঘটনায় প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।
সোমবার শোডাউন শেষে আলফাডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করে। এরপর এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন হারিচুর রহমান সোহান। এসময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আকরাম হোসেনসহ দলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন, আব্দুস সালাম, ওলিয়ার রহমান প্রমূখ।
সংবাদ সম্মেলনে হারিচুর রহমান সোহান তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বাবা রাজাকার ছিলেন না। দীর্ঘদিন আমার বাবর চেয়ারম্যান ছিলেন। আমি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। এলাকায় আমার জনপ্রিয়তার কারণে ঈর্ষান্বিত হয়ে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
এর আগে রোববার (২০ নভেম্বর) বিকেলে একজন রাজাকার পুত্রকে দলীয় প্রার্থী করার সুপারিশ করায় আলফাডাঙ্গা বাজারের চৌরাস্তা মোড়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মোনায়েম হোসেন খান বলেন, ভোট প্রক্রিয়া সঠিক হয়নি। অনিমের মাধ্যমে আমাকে হারানো হয়েছে।
তার অভিযোগ, উৎকোচের বিনিময়ে আমাকে ঠকানো হয়েছে। একজন রাজাকার পুত্রকে টাকার বিনিময়ে চেয়ারম্যান বানাতে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ এসব কাজ করছেন। বিষয়টি জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে অবগত করা হয়েছে।
ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মোঃ ইশতিয়াক আরিফ বলেন, বিষয়টি জেলা আওয়ামী লীগকে জানিয়েছে স্থানীয় নেতারা। আমরা গুরুত্ব নিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।
এদিকে সোমবার (২১ নভেম্বর) বিকালে উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদ চত্ত্বরে বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে এক বিক্ষোভ সমাবেশ ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতারা।
সমাবেশে গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মোনায়েম খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ যখন উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় চলমান। ঠিক তখনই এই স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। ওই বিএনপি-জামায়াত যদি দেশে আবারো অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করে তাহলে তাদেরকে আর কোন ছাড় দেওয়া হবে না। গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ রাজপথে তাদের প্রতিহত করবে।
গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইনামুল হাসান বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি ক্ষমতায় এলে সাধারণ মানুষকে চরম পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে। তাই আমাদের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। স্বাধীনতা বিরোধী বিএনপি-জামায়াতকে শক্ত হাতে প্রতিহত করতে হবে।
গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন মিয়া বলেন, বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী তান্ডবলীলা, নৈরাজ্যের বিষয়ে দেশবাসী অবগত। দেশের মানুষ তাদের আর চায় না। অতীতের মতো তারা যেনো আর কোন নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের রাজপথে থেকে তা মোকাবিলা করতে হবে।
উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নাজমুল ইসলাম রানার সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. তারিকুল ইসলাম, ৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দীন আলী, গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস্কেন্দার আলম প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২২
এসএএইচ