ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

আদালতের হাজতখানায় পুলিশের জন্য বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট-হেলমেট

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০২২
আদালতের হাজতখানায় পুলিশের জন্য বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট-হেলমেট

ঢাকা: ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণ থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার পর আদালতে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের জন্য ৩০টি হেলমেট ও ৩০টি বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২২ নভেম্বর) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানার ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক আব্দুল হাকিম বাংলানিউজকে জানান, জঙ্গিসহ চাঞ্চল্যকর মামলার আসামিদের হাজতখানা থেকে এজলাস কক্ষে আনা নেওয়ার সময় পুলিশ সদস্যরা এসব নিরাপত্তা সামগ্রী ব্যবহার করবেন।

এদিকে কারাগার থেকে জঙ্গি ও চাঞ্চল্যকর মামলার গুরুত্বপূর্ণ আসামি এবং সাজাপ্রাপ্ত আসামি বা একাধিক মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আদালতে উপস্থাপনের সময় ডাণ্ডাবেড়ি পরাতে কারা সদর দপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছে ডিএপির প্রসিকিউশন বিভাগ। মঙ্গলবার ডিএমপি কমিশনার কার্যালয় থেকে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে।  

ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ ও তথ্য বিভাগের (প্রসিকিউশন) উপ-কমিশনার মো. জসিম উদ্দিন জানান, আদালতে হাজিরের সময় গুরুত্বপূর্ণ চাঞ্চল্যকর আসামিদের ডাণ্ডাবেড়ি না পরানোর কারণে ইতোমধ্যে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আদালত থেকে পালিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। ডাণ্ডাবেড়ি পরানো থাকলে এ ধরনের অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব হতো। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য কারা সদর দপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

কারা সদর দপ্তরে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, কারাগার থেকে সন্ত্রাসী, জঙ্গি, চাঞ্চল্যকর গুরুত্বপূর্ণ ও সাজাপ্রাপ্ত আসামি বা একাধিক মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের আদালতে উপস্থাপনের সময় অবশ্যই জেল কোড অনুযায়ী ডাণ্ডাবেড়ি পরানোর নির্দেশনা ছিল। এমতাবস্থায়, কারাগার থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলার আসামিদের আদালতে পাঠানোর সময় জেল কোড অনুযায়ী অবশ্যই ডাণ্ডাবেড়ি পরানো এবং জঙ্গি ও সন্ত্রাসীসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আসামিদের আলাদা প্রিজন ভ্যানে পাঠানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।

এছাড়া পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনার পর ঢাকার নিম্ন আদালতগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকেও ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত, চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, মহানগর দায়রা জজ আদালত, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল, সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল, জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রতিটি ফটকে ব্যাপক সংখ্যক পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়।

জানা যায়, যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে আদালত প্রাঙ্গণে অতিরিক্ত তিন প্লাটুন পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া সাদা পোশাকে পরিস্থিত নজরদারি করছেন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ ও তথ্য বিভাগের (প্রসিকিউশন) উপ-কমিশনার মো. জসিম উদ্দিন বলেন, সোমবারের মতো আজও আদালতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গতকাল রাজারবাগ পুলিশ লাইন থেকে তিন প্লাটুন অতিরিক্ত পুলিশ আদালতে মোতায়েন করা হয়েছিল। তারা আজও দায়িত্ব পালন করছে। এছাড়া আদালত প্রাঙ্গণে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে ডিএমপি ও লালবাগ বিভাগ কাজ করছে।

গত ২০ নভেম্বর (রোববার) দুপুরে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে ঢাকার আদালত থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় তাদের সহযোগিরা। পালিয়ে যাওয়া জঙ্গিরা হলেন- সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার মাধবপুরের মইনুল হাসান শামীম ও লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার ভেটশ্বর গ্রামের আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব। তারা দুজনই জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্য ও তারা প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার একটি মামলায় হাজিরা দিতে রোববার তাদের সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে আনা হয়েছিল।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০২২
এসসি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।