ভোলা: ভোলায় বেড়েই চলে শিশুদের ঠান্ডা, জ্বর, সর্দি, কাশি, শশ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়াসহ ঠাণ্ডাজনিত রোগের প্রকোপ। যা বিগত সময়ের চেয়ে অনেক বেশি বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।
গত ১১ মাসে জেলায় নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৪৪৯ জন। যাদের মথ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৯ জনের। হঠাৎ করেই নিউমোনিয়া আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় অভিভাবকরা উদ্ভিগ্ন হয়ে পড়েছেন। অন্যদিকে রোগীদের চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় নার্স ও চিকিৎসকরা রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন।
শয্যা সংকট থাকায় অনেকেই মেঝেতে চিকিৎসা আবার অনেক শিশুকে গাদাগাদা করে একটি বেডে গড়ে ২-৩ জনকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের মতে, আক্রান্তদের মধ্যে জানুয়ারি মাসে ৪১৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। ফেব্রুয়ারি মাসে আক্রান্ত হয়েছে ৪৪০ এবং মৃত্যু হয়েছে ২ জনের।
মার্চ মাসে আক্রান্ত হয়েছে ৪৬১ জন। যাদের মধ্যে মুত্যু হয়েছে ২ শিশুর। এপ্রিল মাসে কোন মৃত্যু ঘটনা না ঘটলেও আক্রান্ত হয়েছে ৪২৪ জন। মে মাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৮৫ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। জুন মাসে মৃত্যু কিছুটা কমে একজন হলেও আক্রান্ত হয়েঁর ৪৪৩ জন। অন্যদিকে জুলাই মাসে ২ শিশু মৃত্যু হয়েছে এবং আক্রান্ত হয়েছে আরও ৪০২জন। আগষ্ট মাসে আক্রান্ত হয়েছে ৩৮৫ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১ জনের। সেপ্টস্বর মাসে নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়েছে ৫৬১ জন। এরমধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২ শিশুর।
অক্টোবর মাসে নিউমোনিয়ার রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। এ মাসে আক্রান্ত হয়েছে এক হাজার ৩ জন এবং মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। তবে নভেম্বর মাসে আক্রান্ত বাড়লেও মৃত্যু হয়েছে কম। এ মাসের ২২ দিনেই আক্রান্ত হয়েছে ১২৩৯ জন শিশু এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে এক জনের।
ভোলা সদর হাসপাতালে গত এক সপ্তাহ ধরে রোগীদের ভয়াবহ চাপ। তবে জেলায় এক সপ্তাহে আক্রান্ত হয়েছে ৩৩৬ জন। ২৪ ঘন্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪২ জন।
নার্সরা জানান, হাসপাতালে যারাই ভর্তি হচ্ছেন তাদের বেশিরভাগ নিউমোনিয়া আক্রান্ত। এতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। অন্যদিকে শয্যা সংকট থাকায় ভোলার ২৫০ জেনারেল হাসপাতালের পুরাতন ভবনে মেঝেতে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে রোগীদের।
এ বিষয়ে ভোলা হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা: নিশি পাল বলেন, আবহাওয়ায় পরিবর্তনের কারণে শিশুদের নিউমোনিয়া আক্রান্তের হার বেশি। অতিতের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি। আমরা রোগীদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শিশুদের প্রতি অভিভাবকদের আরও বেশি যত্নবান হতে হবে। কারন, এ সময়টায় দিনে কিছুটা গরম এবং রাতে শীত অনুভূত হচ্ছে। তাই শিশুদের যাতে ঠাণ্ডা না লাগে সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে অভিভাবকদের।
ভোলার সিভিল সার্জন ডাঃ কেএম শফিকুজ্জামান বলেন, নিউমোনিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তবে জেলার সব হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহ রয়েছে। যেসব কারণে শিশুদের নিউমোনিয়া হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০২২
এসএম