যশোর: প্রায় ৫ বছর পর যশোরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে একগুচ্ছ দাবিতে সোচ্চার হচ্ছেন স্থানীয় নাগরিক সমাজ। মানববন্ধন, স্মারকলিপি পেশ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিআকর্ষণের চেষ্টা করছেন সচেতন যশোরবাসী।
নাগরিক সমাজের প্রত্যাশা যশোরবাসীর প্রাণের দাবিগুলো আমলে নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) যশোর শামস উল হুদা স্টেডিয়ামের জনসভায় বাস্তবায়নের ঘোষণা দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার আগমনকে ঘিরে যশোরবাসীর মনে নতুন করে আশার সঞ্চার হয়েছে।
জানা যায়, ১৯৭২ সালের ২৬ ডিসেম্বর যশোর স্টেডিয়ামে জনসভায় ভাষণ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেই একই মাঠে আগামী ২৪ নভেম্বর যশোর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেবেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই প্রধানমন্ত্রীর যশোর আগমন উপলক্ষে বিভিন্ন দাবিতে সরব হয়েছেন যশোরের নাগরিক সমাজ।
দাবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- যশোর মেডিকেল কলেজে ৫শ শয্যার হাসপাতাল, মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মভূমিতে সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, ভবদহ জলবদ্ধতার স্থায়ী সমাধান, যশোর বিমানবন্দর আন্তজার্তিক মানে উন্নীত করণ, যশোরে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর স্থাপন ও সংস্কৃতি ভবন স্থাপন, জেলা স্টেডিয়ামের আধুনিকায়ন এবং যশোর বিভাগ ও সিটি কর্পোরেশন ঘোষণা। সেই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও যশোরবাসী তাদের বিভিন্ন দাবি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।
ইতোমধ্যে, যশোর মেডিকেল কলেজে ৫শ শয্যার হাসপাতাল, মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মভূমিতে সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, ভবদহ জলবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানের দাবিতে পৃথকভাবে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে নাগরিক সমাজ। এসব দাবি আদায়ের লক্ষ্যে যশোরবাসী দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের দাবি বাস্তবায়নের ঘোষণা দেবেন জনসভায়- এমনটাই প্রত্যাশা যশোরবাসীর।
এ বিষয়ে যশোর মেডিকেল কলেজে ৫শ শয্যার হাসপাতাল বাস্তবায়ন আন্দোলন কমিটির সদস্য সচিব জিল্লুর রহমান ভিটু বলেন, মেডিকেল কলেজ চালুর এক যুগেও হাসপাতাল বাস্তবায়ন হয়নি। এটি যশোরবাসীর জন্য দুঃখজনক। অবিলম্বে ৫শ শয্যার হাসপাতাল বাস্তবায়নের দাবি জানাই।
মাইকেল মধুসূদন সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক অ্যাড. আবু বকর সিদ্দীক বলেন, মহাকবির জন্মভূমি সাগরদাঁড়িতে তার নামে একটি সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি যশোরবাসীর বহুদিনের। মহাকবির নামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে তাকে নিয়ে গবেষণাসহ আরও অনেক কাজের সুযোগ তৈরি হবে। আন্তর্জাতিকভাবে তাকে তুলে ধরা সম্ভব হবে। দীর্ঘদিন ধরে আমরা আন্দোলন করছি। আশাকরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যশোরের জনসভায় বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়নের ঘোষণা দেবেন।
যশোরের সিনিয়র সাংবাদিক সাজেদ রহমান বকুল বলেন, যশোর বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরণ সময়ের দাবি। এটি আন্তর্জাতিক হলে ভারতের কলকাতার সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হবে। সময় ও টাকা দুটেই সাশ্রয় হবে। মানুষের ভোগান্তিও কমবে।
জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সভাপতি ফারাজী আহমেদ সাঈদ বুলবুল বলেন, যশোরকে সাংস্কৃতিক রাজধানী বলা হয়। যশোর শহরে ৩০ টির বেশি সাংস্কৃতিক সংগঠন রয়েছে। বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কার্যালয় নেই। এজন্য একটি সাংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্র স্থাপনের দাবি দীর্ঘদিনের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই দাবির বিষয়টি বিবেচনা করবেন এমনটিই প্রত্যাশা আমাদের।
এদিকে আগামী ২৪ নভেম্বর যশোর শামস উল হুদা স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগের জনসভায় ভাষণ দেবেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই জনসভায় পাঁচ লক্ষাধিক মানুষের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে তোড়জোড় শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। জনসভা ঘিরে চাঙা হয়েছে দলের তৃণমূল। ইতোমধ্যে উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গণসংযোগ করছেন। সাধারণ মানুষ ও নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০২২
ইউজি/এমএমজেড