ঢাকা: অচিরেই ঢাকা একটি নান্দনিক শহরে রূপ নেবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
বুধবার (২৩ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ জিগাতলায় ভূগর্ভস্থ ক্যাবল (বিদ্যুৎ) সংযোগ লাইন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ডিএসসিসি মেয়র বলেন, ঢাকার ভিতরের এই জঞ্জাল (বিদ্যুৎ ও অন্যান্য তার) যদি আমরা অপসারণ করতে পারি, অচিরেই এই ঢাকা একটি নান্দনিক শহরে রূপ নেবে। এখানে অনেক প্রতিকূলতা ছিল। বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সমন্বয় না থাকলে সমস্যার সৃষ্টি হয়। এটাতেও প্রথমে বড় আকারে অবকাঠামো বা রিং মেইন ইউনিট (আরএমইউ) বক্সের নকশা ছিল। পরে সমন্বয় করে তা ছোট করা হয়েছে। সমন্বয়ে ২৪১টি আরএমও (বক্স) এর পরিবর্তে প্রযুক্তির মাধ্যমে ২৮টি আরএমও (বক্স) ব্যবহারে কাজ সম্পন্ন করা হচ্ছে। এতে রাস্তায় হাঁটা-চলার সমস্যা কমবে।
তিনি বলেন, আমরা রাজধানীবাসীকে একটি সুন্দর ঢাকা উপহার দিতে চাই। সেই লক্ষ্যে হাঁটার পথে কোনওরকম প্রতিবন্ধকতা যেন না থাকে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আজকের এই কার্যক্রমের সুফল ঢাকাবাসী পাবে, ধানমন্ডিবাসী পাবে। তাদের মাথার উপরের জঞ্জালও যাবে, রাস্তাতেও হেঁটে শান্তি পাবে।
শেখ তাপস বলেন, ঢাকা শহরের বৈদ্যুতিক তারের জঞ্জাল সরে যাবে। যদিও ঢাকা একটু অপরিকল্পিত নগরী, এর মধ্যেও আমরা পরিবর্তন আনতে চাই। যেই পরিবর্তনের মাধ্যমে আমরা ঢাকাকে একটি সুন্দর ঢাকা হিসেবে রূপান্তর করে গড়ে তুলতে পারবো। এই লক্ষ্যেই আমাদের কার্যক্রম।
তিনি বলেন, ঢাকা শহরে যারা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবেন, তাদের পরিকল্পনার পর্যায়ে আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। কারণ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন সেই মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করছে যে, ঢাকা শহরের কোথায় কি হবে! এবং সেটার কাজ অত্যন্ত জোরালোভাবেই চলছে।
মেয়র বলেন, কলাবাগানে আমরা একটি সাবস্টেশন করেছি। যার মাধ্যমে এখন ধানমন্ডি, ঢাকা-১০ এলাকার সব জায়গায় নিরবিচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ দেওয়া যাচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে সেই কাজটি সম্পন্ন করা হয়েছে। আজকে ভূ-গর্ভস্থভাবে বৈদ্যুতিক তার নেওয়ার এই কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। এতে অন্য যারা আছে, তারাও এই পথে যেতে বাধ্য হবেন। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ঢাকা শহরে তারের জঞ্জাল সরানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু এতো জঞ্জাল এবং এতো দুরূহ এগুলো কাটা যে, অল্প কিছু কাটতেই সারাদিন লেগে যায়। যেসব শ্রমিক এখানে কাজ করেন, তাদের হাত-পা তিনদিন ধরে ব্যথা থাকে। তারপরও আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি এবং অনেকখানিই নামিয়ে ফেলেছি। কিন্তু এই জঞ্জাল সম্পূর্ণভাবে সরাতে দীর্ঘ সময় লেগে যাবে। আর এখন থেকে এই বৈদ্যুতিক তার যদি না থাকে, তবে বৈদ্যুতিক খুঁটিও কমে যাবে; ফলে তারের জঞ্জাল বা তার লাগানোর সুযোগটাও কমে যাবে। আমরা একটি পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন সুন্দর ঢাকা চাই।
উল্লেখ্য, “ডিপিডিসি'র আওতাধীন এলাকায় আন্ডারগ্রাউন্ড ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক নির্মাণ" শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ধানমন্ডিতে ২০ কি.মি. ওভারহেড বিদ্যুৎ বিতরণ লাইনকে আন্ডারগ্রাউন্ড ব্যবস্থায় রূপান্তর করা হবে। বাংলাদেশ-চীন জিটুজি স্কীমে ২ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে ডিপিডিসি'র আওতাধীন এলাকায় আন্ডারগ্রাউন্ড ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এর মধ্যে ধানমন্ডি এলাকার ২০ কি.মি. ওভারহেড বিদ্যুৎ বিতরণ লাইনকে আন্ডারগ্রাউন্ড ব্যবস্থাপনায় রূপান্তর করতে ৫৩ মিলিয়ন ডলার ব্যয় হবে। আগামী ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব হাবিবুর রহমান, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার বিকাশ দেওয়ানসহ সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২২
এইচএমএস/এনএস