ঢাকা: রাজধানীতে ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবু হত্যা মামলায় জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের তিন সদস্যকে হাজির করা হয় আদালতে।
বুধবার (২৩ নভেম্বর) ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শেখ ছামিদুল ইসলামের আদালতে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য ছিল।
অপর দুই আসামি হাসিব আব্দুল্লাহ ও আবু তাহের জুনায়েদ পলাতক।
তিন আসামিকে আদালতে হাজির করতে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের সামনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। প্রায় অর্ধশত পুলিশ সদস্যের সমন্বয়ে নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়।
এ সময় কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে তাদের আদালতে হাজির করা হয়৷ একইভাবে নিয়ে যাওয়ার সময় প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় নেওয়া হয় ব্যাপক প্রস্তুতি।
মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানার ইনচার্জ আ. হাকিম বাংলানিউজকে বলেন, চাঞ্চল্যকর মামলায় জঙ্গি সংগঠনের তিনজন আসামি হাজির হওয়ায় আমরা বাড়তি সতর্কতা নিয়েছি। কারাগার থেকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে পাঠানো হয়েছে৷ আদালতেও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে৷ যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক আছি।
এ মামলায় ২০২০ সালের ২৭ অক্টোবর রায়ের জন্য ধার্য তারিখে আসামিদের বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ এনে চার্জ সংশোধনের আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। তাই আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যার মূল অভিযোগের সঙ্গে দণ্ডবিধির ১২০(বি) ধারায় ঘটনায় ষড়যন্ত্রের নতুন অভিযোগ এনে চার্জ সংশোধনের আবেদন করা হয়।
এজন্য মামলাটিতে নতুন করে সাক্ষ্যগ্রহণ হচ্ছে। বুধবার (২৩ নভেম্বর) সাক্ষ্য দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশেমর পরিদর্শক মশিউর রহমান।
২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর ডিবি পুলিশ আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের ৫ সদস্য জিকরুল্লাহ, আরিফুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, হাসিব আব্দুল্লাহ ও আবু তাহের জুনায়েদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
২০১৬ সালের ২০ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ এসএম জিয়াউর রহমান। এরপর গত ২৫ আগস্ট এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়৷ রাষ্ট্রপক্ষে মোট ৪০ সাক্ষীর মধ্যে ২৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ৩০ মার্চ সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের বেগুনবাড়িতে দীপিকার ঢাল এলাকায় বাসা থেকে বের হয়ে অফিসে যাওয়ার পথে খুন হন ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবু। এর পরপরই উপস্থিত জনতার সহায়তায় পুলিশ জিকরুল্লাহ ও আরিফুল ইসলাম নামে দুই মাদরাসাছাত্রকে আটক করে।
ফেসবুক ও ব্লগসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইসলাম ধর্ম নিয়ে লেখালেখি করায় বাবুকে হত্যা করা হয়েছে বলে জিকরুল্লাহ ও আরিফুল স্বীকার করেছেন। আটকের সময় তাদের কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত তিনটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়।
বাবু হত্যার ঘটনায় আটক জিকরুল্লাহ ও আরিফুল ইসলামসহ চারজনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করে ওই রাতে তেজগাঁও থানায় হত্যা মামলা করেন তার ভগ্নিপতি মনির হোসেন। পরে আটক দুজনকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২২
কেআই/জেএইচ