ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

হলের ছাদ থেকে পড়ে ঢাবি ছাত্রের মৃত্যু নিয়ে যা বললেন রুমমেট‌

সাজ্জাদুল কবির, ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২২
হলের ছাদ থেকে পড়ে ঢাবি ছাত্রের মৃত্যু নিয়ে যা বললেন রুমমেট‌

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হলের ছাদ থেকে পড়ে আইইআর’র তৃতীয় বর্ষের ছাত্র লিমন রায়ের মৃত্যুর ঘটনায় এখনো সঠিক কারণ জানাতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বুধবার (২৩ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

লিমনের মৃত্যু নিয়ে রুমমেট ও জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা হয় বাংলানিউজের। এখনো নিশ্চিত হওয়া না গেলেও পরীক্ষা সংক্রান্ত চাপ থেকে হলের ছাদ গিয়ে আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন বলে ধারণা করছেন অনেকেই। তারা বলছেন, ছাদে রেলিং ছিল, ভুলবশত পড়ার সম্ভাবনা কম।

সরেজমিনে দেখা গেছে, হল প্রাধ্যক্ষ শাহবাগ থানা পুলিশের সঙ্গে ডিবি ও সিআইডির দুটি টিম নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছেন। লিমন ছাদ থেকে যে জায়গায় পড়েছেন এবং যে ছাদ থেকে পড়েছেন দুটি স্থান পরিদর্শন করেছেন। একইসঙ্গে লিমনের মোবাইল ফোন তারা আলামত হিসেবে জব্দ করেছে। জগন্নাথ হলের দক্ষিণ ব্লকের (যে ব্লকেই তিনি থাকতেন) পেছন পাশের ছাদ থেকে পড়ে যান লিমন। যেখানে মাথা থেতলে বের হওয়া ছোপ ছোপ রক্ত দেখা গেছে।

জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা বাংলানিউজকে বলেন, সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরে একে একে তার সব রুমমেট ক্লাসে চলে যান। আজকে লিমনের পরীক্ষা ছিল। শেষ যে রুমমেট ছিল তিনি লিমনকে জিজ্ঞাসা করেন কিরে পরীক্ষা দিতে যাবি না? উত্তরে লিমন বলেছিলেন যাবে। এ বলে সেই রুমমেট‌ও ক্লাসে চলে যান। পরে সকাল ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

হলের অ্যাথলেটিক্স বেয়ারা মানিক কুমার দাস বলেন, আমি হলের মাঠে কাজ করছিলাম। হঠাৎ শুনি যে কেউ একজন পড়ে গেছেন। প্রথমে মনে করেছি রুমের বেলকনি থেকে পড়ছে পরে জানতে পারি ছাদ থেকে পড়েছেন। পরে আমিসহ আরও কয়েকজন মিলে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়েছি। হাসপাতালে যাওয়ার সময় তিনি জীবিত ছিলেন বলে আমার মনে হয়েছে।

নিহত লিমনের চাচা ধনেশ্ববর চন্দ্র রায় বাংলানিউজকে বলেন, লিমনের বাবা কৃষক। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে লিমন সবার বড়। আমরা শুনেছি তিনি দুর্ঘটনায় ছাদ থেকে পড়ে মারা গেছেন। ঠিক কি কারণে তিনি মারা গেছেন আমরা জানি না। তার মধ্যে হতাশা থাকতে পারে। আবার তিনি হতাশাগ্রস্ত অনেককেই বুঝাতেন। আমরা চাই লিমনের মৃত্যুর সঠিক কারণ বের হোক।

সহপাঠী আজিজুল হক বলেন, লিমনের একটি ইউটিউব চ্যানেল ছিল। সেখানে লিমন বিভিন্ন বিনোদনমূলক ভিডিও প্রচার করতেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও তার পরিচিত ছিল। কিন্তু গত তিন-চার মাস আগে তিনি সব ধরনের ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করা বন্ধ করে দেন। এমনকি তার ইউটিউব চ্যানেল‌ও বন্ধ করেন দেন।

জগন্নাথ হলের আবাসিক ছাত্র সূর্যকান্ত রায় বলেন, লিমন আমার হলমেট, আমি খুব কাছ থেকে তাকে চিনি। তিনি সব সময় হাসি-খুশি থাকতেন। লিমনকে দেখে কখনোই আত্মহত্যা করার মতো অবস্থায় আছে বলে মনে হয়নি। তিনি কখনোই এমন কাজ করতে পারেন না। আমি তার মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর মোহাম্মদ বাংলানিউজকে বলেন, এ ঘটনায় সিআইডি এবং ডিবি তদন্ত করছে। আমরা ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনার প্রাথমিক তথ্য নিয়েছি। ময়নাতদন্ত করা হবে, পরে আমরা বিস্তারিত জানতে পারবো।

আরও পড়ুন>>

>>> ঢাবির হলের ছাদ থেকে পড়ে ছাত্রের মৃত্যু

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২২
এসকেবি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।