যশোর: বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) যশোরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এদিন সকালে মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটিতে বার্ষিক কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণ শেষে দুপুরে যশোর স্টেডিয়ামে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বুধবার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে বলেন, পাঁচ বছর পর জননেত্রী শেখ হাসিনা যশোরে জনসভায় ভাষণ দিতে আসছেন। এই জনসভা সফল করতে আমরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছি। সভাস্থলে প্রবেশের জন্যে আট থেকে ১০টি প্রবেশদ্বার খোলা হয়েছে। নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার চাদরে মুড়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
সভায় আগতদের জন্যে পর্যাপ্ত শুকনো খাবার ও পানির ব্যবস্থা রয়েছে। সভাটিকে স্মরণকালের বড় গণসমাবেশে পরিণত করায় আওয়ামী লীগের টার্গেট। এ কারণেই, গত ১০ দিন ধরে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা দফায়-দফায় যশোরসহ আশপাশের জেলায় মিটিং-সিটিং করেছেন।
এছাড়াও কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরাট একটা অংশ তিন দিন আগেই যশোরে পৌঁছেছেন, এখানকার সব প্রস্তুতি নিয়ে খোদ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তদারকি করছেন।
যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট এবিএম আহসানুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এবারের এই জনসভা হবে স্মরণকালের ঐতিহাসিক সেরা জনসভা। স্টেডিয়ামে এই জনসভার আয়োজন করা হলেও গোটা যশোর শহরই জনসভাস্থলে পরিণত হবে। এর জন্যে টাউন হল, মাঠসহ বিভিন্ন জায়গায় এলইডি বড় স্ক্রিন দেওয়া হয়েছে। ওই স্ক্রিনে প্রধামন্ত্রীর ভাষণ সরাসরি দেখানো হবে। খুলনা বিভাগের সাতটি জেলা থেকে কয়েক হাজার বাস আসবে। ওইসব বাস রাখার জন্যেও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ নির্ধারণ করা হয়েছে। আমরা আশা করছি, সবমিলিয়ে কমপক্ষে ১০ লাখ মানুষ জনসভায় যোগ দেবেন।
প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের ইমেজের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যেও নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। যশোর উন্নয়নে একগুচ্ছ দাবি-দাওয়া রয়েছে এখানকার বাসিন্দাদের।
যশোরের নাগরিক সমাজ ইতোমধ্যে যশোর মেডিকেল কলেজে ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল,মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের নামে সাগরদাঁড়িতে সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, ভবদহের জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধান,যশোর বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরণ ও সিটি করপোরেশনের দাবি নিয়ে মানববন্ধন ও সভা-সমাবেশ করে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন।
যশোর উন্নয়নে দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে মধূসূদন সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক হারুণ অর রশীদ বলেন, যশোরে অনেক সমস্যা ও সম্ভাবনা রয়েছে। যশোরকে বলা হয়,সংস্কৃতির রাজধানী। এখানে মহাকবি মাইকেল মধূসূদন দত্ত জন্ম নিয়েছেন। অন্যান্য এলাকায় কবি-সাহিত্যিকদের নামে সরকার ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছে। কিন্তু যশোরে মহাকবি মধুসূদনের নামে বড় কোনো স্থাপনা নির্মিত হয়নি। মৌলবাদ-জঙ্গীবাদ ঠেকাতে সংস্কৃতির ব্যাপক চর্চা ও গবেষণার জন্যে যশোরে একটি সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা থেকে দীর্ঘদিন ধরে আমরা এই দাবি জানিয়ে আসছি।
যশোর মেডিকেল কলেজে ৫০০ শয্যা হাসপাতাল বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির সদস্য সচিব জিল্লুর রহমান বলেন, ১২ বছর আগে যশোরে একটা মেডিকেল কলেজ স্থাপন করা হলেও ক্যাম্পাসে হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়নি। যে কারণে মেডিকেল কলেজের অন্তত ৪০০ শিক্ষার্থীকে ৫ মিলোমিটার দূরে যশোর জেনারেল হাসপাতালে প্রাকটিক্যাল ক্লাস করতে যেতে হয়। যে কারণে একদিকে শিক্ষার্থীরা হাতে কলমে যথাযথ শিক্ষা পাচ্ছে না। অন্যদিকে এ অঞ্চলের মানুষ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যশোরে ৫০০ শয্যা হাসপাতাল হলে যশোর, মাগুরা, ঝিনাইদহ ও নড়াইলের অন্তত ২০ লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত হবে।
এছাড়া ভবদহের জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধান ও সিটি করপোরেশনের দাবিও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২২
ইউজি/এএটি