ঢাকা: মিয়ানমারে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার পর জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসন সম্ভব হবে বলে মনে করেন জাপানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তাকেই শুনসুকে।
বুধবার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি একথা বলেন।
পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
বৈঠকে জাপানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাপান বাংলাদেশকে সমর্থন করে। রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসনে গণতন্ত্রের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে জাপান মিয়ানমারের সঙ্গে কথা বলতে পারে। রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য ভারী বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ তারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর ইতোমধ্যে পাঁচ বছর পার হয়েছে। ক্যাম্পে নতুন শিশুর জন্মের সঙ্গে তাদের সংখ্যাও বাড়ছে।
তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় কথা হলো রোহিঙ্গাদের অনেকেই মাদক ও অস্ত্র পাচারের সঙ্গে জড়িত। তারা (রোহিঙ্গা অভ্যন্তরীণ দল) একে অপরের সঙ্গে মারামারি ও খুনাখুনি করছে। মিয়ানমারের উচিত তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়া।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যকার সম্পর্ককে বিস্ময়কর উল্লেখ করে বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ সম্পর্কের ভিত্তি তৈরি করেছিলেন। জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক ক্রমেই জোরদার হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের সময় এবং স্বাধীনতার পরপরই বিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে জাপানের অবদান এবং আমাদের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় সহযোগিতার কথা স্মরণ করে বলেন, তারা এখনো বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে কাজ করছে। যার মধ্যে রয়েছে মাতারবাড়ি এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ।
প্রধানমন্ত্রী জাপানের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেকে ‘বাংলাদেশের মহান বন্ধু’ হিসেবে বর্ণনা করেন।
এসময় তাকেই শুনসুকে বলেন, ‘জাপান বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে গর্ববোধ করে। জাপান বাংলাদেশকে উন্নয়ন প্রচেষ্টায় সহায়তা অব্যাহত রাখবে। ’
তিনি বলেন, পাঁচ বছর আগে বাংলাদেশ সফরে এসেছিলাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও দূরদর্শী নেতৃত্বে গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়নে বিস্মিত হয়েছি।
তাকেই শুনসুকে বলেন, জাপান সরকার প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২০১৪ সালে চালু করা দুই দেশের ব্যাপক অংশীদারিত্বকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে ৫০ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্কের জন্য ঢাকা থেকে টোকিওর মধ্যে ফ্লাইট পরিচালনার ফলে আগামীতে যোগাযোগ আরও বাড়বে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এবং বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি।
বাংলাদেশ সময়: ২২৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২২
এমইউএম/এমএমজেড