নীলফামারী: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) অধ্যায়নরত ছাত্র লিমন। প্রভাশ চন্দ্র ও নীলা রানি দম্পতির স্বপ্ন ছিল অভাবের সংসারে সুখ আসবে ছেলের হাত ধরে।
সন্তান হারিয়ে যেন আর্তনাদের ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন তারা। বাবা-মা পরিবারের সদস্যরা প্রায় বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।
বুধবার (২৩ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের ১০তলার ছাদ থেকে পড়ে মারা যান ঢাবি শিক্ষার্থী লিমন।
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের দোলাপাড়ার রিকশাচালক প্রভাশ চন্দ্র রায়ের ছেলে লিমন। ঢাবির শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের (২০১৯-২০ সেশন) ছাত্র ছিলেন।
লিমনের বাবা প্রভাশ চন্দ্র রায় কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার লিমন এভাবে আমাদেরকে ছেড়ে চলে যেতে পারে না। এর পেছনে কোনো কারণ থাকতে পারে। এ সময় তিনি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানান।
লিমনের চাচা শিক্ষানবিশ অ্যাডভোকেট নারায়ণ চন্দ্র বলেন, দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে লিমন সবার বড়। তার বাবা রিকশা চালিয়ে ও মা নীলা রানি রায় অন্যের জমিতে কৃষাণীর কাজ করে যে আয় হয়, তা দিয়ে সংসারের ভরণপোষণ করেন।
তিনি বলেন, ভাতিজা লিমন মেধাবী হওয়ায় এলাকার মানুষজনও তার লেখাপড়ার খরচ চালাতে সহযোগিতা করে আসছিল। লিমনের মৃত্যুতে এখন নির্বাক হয়ে পড়েছেন তার মা।
লিমনের স্কুলশিক্ষক মিথুন কুমার রায় বলেন, দরিদ্র বাবার সন্তান লিমন কুমার রায় ছিল মেধাবী। সে বাড়ির পাশে সিঙ্গেরগাড়ী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। এলাকায় নম্র, ভদ্র ও মেধাবী ছাত্র হিসেবে লিমনের পরিচিতি রয়েছে। তার মৃত্যুতে পুরো গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে কথা হয় কিশোরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজীব কুমার রায়ের সঙ্গে।
তিনি বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি।
এদিকে ঢাকা থেকে লিমনের মৃত্যুর বিষয়ে কোনো কিছু জানানো হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ০৭১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২২
এএটি