সুনামগঞ্জ: জন্ম নিবন্ধন সংশোধন ফি বাবদ প্রায় সাড়ে ১০ লাখ টাকার বিল বকেয়া থাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে জগন্নাথপুর পৌরসভার জন্ম নিবন্ধন সংশোধন সার্ভার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া সার্ভার সমস্যা থাকায় গত দুই-তিনদিন ধরে জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)সাজেদুল ইসলাম টাকা বকেয়া থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করলেও জগন্নাথপুর পৌরসভার মেয়র আক্তার হোসেন তা অস্বীকার করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিবন্ধন সংশোধনের জন্য পৌর কর্তৃপক্ষ টাকা বেশি নিয়ে থাকেন। আর এ টাকা নিলেও টাকা জমা দেয় না। ফলে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে জনগণকে। অনেকেই নাম ও জন্মতারিখ সংশোধন এবং শিক্ষার্থীদের বাংলা থেকে ইংরেজি জন্ম নিবন্ধনসহ বিভিন্ন জরুরি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
সেবা নিতে এসে অনেকের মতো ফিরে যেতে হয়েছে পৌরশহরের বাসিন্দা শামিম আহমেদকে। তিনি বলেন, গত ১৫ নভেম্বর আমার ভাতিজির জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্য আবেদন করি। পরে পৌরসভা থেকে বলা হয়, উপজেলায় গিয়ে আবেদনটি অনুমোদন করিয়ে আনতে। উপজেলায় যাওয়ার পর তারা বলেন, পৌরসভার জন্ম নিবন্ধন সংশোধন সার্ভার বন্ধ রয়েছে। এরপর থেকে পৌরসভা ও উপজেলায় ছুটতে ছুটতে হাঁপিয়ে গেছি।
জগন্নাথপুর এলাকার
ভুক্তভোগী বাদশা মিয়া বলেন, গত সোমবার আমার দুই মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করার জন্য জন্ম নিবন্ধন সনদ করাতে পৌরসভায় গিয়েছিলাম। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সার্ভারের সমস্যা হচ্ছে, পরে যোগাযোগ করেন। এতে আমরা হয়রানির শিকার হচ্ছি।
জগন্নাথপুর পৌরসভার সচিব হেলাল উদ্দিন বলেন, সার্ভারে সমস্যা দেখা দেওয়ায় জন্ম নিবন্ধনের কার্যক্রম কিছুটা বিঘ্নিত হচ্ছে। এ সমস্যা গত দুই দিন ধরে চলছে।
বকেয়া টাকার বিষয়টি অস্বীকার করে জগন্নাথপুর পৌরসভার মেয়র আক্তার হোসেন বলেন, আমাদের কোনো বকেয়া নেই। জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম বন্ধ হয়নি। তবে জন্ম সংশোধন আবেদনের জন্য আমরা জগন্নাথপুরের ইউএনও কার্যালয়ে পাঠালে তারা কাজ করছেন না।
এ বিষয়ে জগন্নাথপুরের ইউএনও সাজেদুল ইসলাম বলেন, পৌরসভার জন্ম নিবন্ধন সংশোধন কার্যক্রম ফি বাবদ ১০ লাখ ৩২ হাজার ৯২৬ টাকা বকেয়া রয়েছে। ফলে কেন্দ্রীয়ভাবে তাদের সংশোধনী সার্ভার বন্ধ রয়েছে। তবে এখন থেকে সুনামগঞ্জ জেলার অধীনে যেসব পৌরসভা রয়েছে, সেগুলোর সংশোধনী আবেদন জেলার স্থানীয় সরকার অতিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ডিডিএলজি) অনুমোদন করবেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার অতিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ডিডিএলজি) ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ জাকির হোসেন জানান, বকেয়া বিল পৌরসভাকেই পরিশোধ করতে হবে। বকেয়া বিল পরিশোধ না করা পর্যন্ত এ কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২২
এসআই