ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঠাকুরগাঁওয়ে সার নিয়ে বিপাকে আলু চাষি

শরিফুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২২
ঠাকুরগাঁওয়ে সার নিয়ে বিপাকে আলু চাষি

ঠাকুরগাঁও: ঠাকুরগাঁওয়ে আমন ধান ঘরে তোলার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয়েছে আলু চাষের জন্য জমি প্রস্তুত ও রোপণের কাজ। এতে দেখা দিয়েছে কৃষকদের মাঝে কর্মব্যস্ততা।

আর রাসায়নিক সার সময় মতো ও সঠিক দামে না পাওয়ায় কৃষকরা পড়েছেন বিপাকে।

আমনের পর পরই এ জেলার কৃষকরা আলু চাষ শুরু করেন।  

জেলার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিবারের মতো এবারও ধান কাটা শেষে আলু চাষের জন্য কৃষকরা জমি প্রস্তুত ও রোপণ শুরু করেছেন। কিন্তু রাসায়নিক সারের দাম ও পর্যাপ্ত পরিমাণে সার না পাওয়ায় কৃষদের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। তাতে আলু চাষ নিয়ে হতাশা দেখা দিয়েছে চাষিদের মাঝে। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েও সার পাচ্ছেন না। আর খুচরা বাজারে সারের দ্বিগুণ দাম। তারপরও পর্যাপ্ত পরিমাণে সার পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ কৃষকদের।

আলু চাষি বিপ্লব বলেন, খুচরা বাজারে পটাশ সারের ৫০ কেজির বস্তা ১৬০০ টাকা, ইউরিয়া ১ হাজার, ডেপ ১২০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। তারপরও পটাশ সার পাওয়া যাচ্ছে না।  

তিনি অভিযোগে বলেন, দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও সার পাচ্ছি না। যারা বড় বড় কৃষক তারা সার পাচ্ছে। আর আমার মতো ক্ষুদ্র কৃষকরা সার পাচ্ছে না।

মানিক ইসলাম নামে আলু চাষি বলেন, আলু চাষ করতে চেয়েছিলাম ২ একর কিন্তু সারের কারণে এখন ১ একর জমিতে আলু রোপণ করছি। এভাবে চলতে থাকলে আমরা কীভাবে কৃষি করবো। সারের দাম বেশি হলেও সার পাওয়া যাচ্ছে না।

কৃষক তহিদুল ইসলাম  বলেন, এবার সারের এত সংকট যা কল্পনা করা যায় না। ডিলারের কাছে তো পটাশ সার পাওয়াই যায় না। আর বাইরে দ্বিগুণ দাম। এভাবে শুধু আলু না যে কোনো ফসল চাষ করতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। একদিকে সব কিছুর দাম ঊর্ধ্বগতি আর অন্যদিকে সারের সংকট। তাই আমরা চরম হতাশা ও বিপাকে পড়েছি।

ঠাকুরগাঁও শিবগঞ্জ বিএডিসি’র উপ-সহকারী পরিচালক (সার) জিল্লুর রহমান বলেন, সারের চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম। বরাদ্দ পেলে সার সরবরাহ করা হবে। সারের বিষয়ে সরকারের যথেষ্ট অগ্রগতি আছে।

ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মতে, গত বছর আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছিল ২৭ হাজার হেক্টর জমি কিন্তু এবার তার থেকে প্রায় ২ হেক্টর কম লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ এবার লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ হাজার ৩০ হেক্টর জমি। এর মধ্যে প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমিতে আলু রোপণ সম্পন্ন হয়েছে।

জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ড. আব্দুল আজিজ বলেন, সারের কোনো সংকট নেই। কৃষকরা মনে করছেন পরবর্তীতে তারা আর সার পাবেন না। তাই এখন থেকেই সার মজুত করতে হুমড়ি খাচ্ছেন তারা। সারের জন্য কোনো প্রকার আলু বা অন্য কোনো ফসলের ক্ষতি হবে না।

যারা সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে সার বিক্রি করছেন তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে ও সারের বাজার মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে বলে জানান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মো.সামসুজ্জামান।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২২
জেএইচ  

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।