ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৬ মে ২০২৪, ০৭ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

মেলায় উঠল ৬৫ কেজি ওজনের কচু

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২২
মেলায় উঠল ৬৫ কেজি ওজনের কচু ৬৫ কেজি ওজনের কচু দেখতে দর্শণার্থীদের ভিড় (বামে)

বাগেরহাট: বাগেরহাটের ফকিরহাটে মেলায় উঠল ৬৫ কেজি ওজনের এক মান কচু। যা তিনদিন ব্যাপি অনুষ্ঠিত মেলার সেরা আকর্ষণ।

প্রায় ৮ ফুট লম্বা ও বেশ মোটা এই কচুটি। এতো বিশালাকার কচু দেখে বিস্মিত মেলার দর্শণার্থীরা।  

অনেকেই ভিড় জমান কচুটির সামনে। এর সঙ্গে ছবি ও সেলফি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন কেউ কেউ।  

জানা গেছে, দৈত্যাকার কচুটির মালিক ফকিরহাট উপজেলার মৌভোগ এলাকার কৃষক অরুপ ঘোষ। মান কচু চাষি তিনি। এমন ৬০-৬৫ কেজি ওজনের আরও অনেক কচু রয়েছে অরুপের পান বরাজের পাশে।  

মাত্র ২ বছরেই মেলায় আনা কচুটির ওজন ৬৫ কেজি হয়েছে বলে জানালেন কৃষক অরুপ ঘোষ।  

তিনি বলেন, কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে বরাজের পাশে ছাই ও গোবর সার দিয়ে কচু লাগিয়েছিলাম। ১০ কাটা জমির বরাজের পাশে  ১৩০টি কচু লাগিয়েছিলাম। বর্তমানে ১০ কেজি থেকে শুরু করে বরাজের পাশে ৬৫ কেজি ওজনের কচু রয়েছে। বাজারে কচুর দাম ও চাহিদা দুটোই ভাল। ৫০ থেকে ৬০ টাকা করে আমরা কেজি বিক্রি করতে পারি। বরাজের পাশে পতিত জায়গায় কচু লাগিয়ে আমার ভালই উপকার হয়েছে।

দর্শণার্থী ফারুক হোসেন বলেন, আমাদের বাড়িতেও বিনা যত্নে কচু হয়। তবে যত্ন করলে কচু এতো বড় হতে পারে তা জানা ছিল না। কচুটি দেখে ভাল লেগেছে। অরুপ যে পদ্ধতিতে কচু লাগিয়েছে আমরাও চেষ্টা করব সেই পদ্ধতিতে কচু লাগানোর।

অরুপের ৬৫ কেজি’র কচুর বিষয়ে ফকিরহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ নাছরুল মিল্লাত বলেন, অরুপ ঘোষ একজন সফল কৃষক। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরামর্শ তিনি সাদরে গ্রহণ করেন। বরাজের পাশে যেসব কচু রয়েছে, তা অনেক বড়। অরুপের মত সবাই যদি বরাজ এবং সবজি ক্ষেতের পাশে সাথী ফসল করেন, তাহলে চাষিদের আয় কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে।

ফকিরহাটের আট্টাকি স্কুল মাঠে তিন দিন ব্যাপি ‘ক্লাইমেট ও স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি মেলা’র আয়োজন করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।  যেখানে বিভিন্ন স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি প্রদর্শণ করা হয়েছে।  

প্রযুক্তির সাথে বিভিন্ন চাষাবাদের মডেলও উপস্থাপন করেছে কৃষি বিভাগ। মেলার স্টলগুলোতে রয়েছে বিভিন্ন  বারমাসি ও উচ্চ ফলনশীল সবজি এবং ফল।  

অরুপের কচু ছাড়াও মেলার আরেকটি আকর্ষণ ছিল ফুলকপি, বাঁধাকপিসহ বিভিন্ন সবজি দিয়ে মঞ্চের সম্মুখভাগে তৈরি বৃত্ত।  নানা রকম সবজি দিয়ে তৈরি এই গোলাকার বৃত্ত আলাদা সৌন্দর্য্য এনেছে মেলায়।  

বৃত্তের মাঝখানে রাখা হয়েছে একটি ফুলকপি, তার চারপাশে টকটকে লাল পাকা টমেটো। তারপরে সবুজ লেবু, তারপরে আবারও টমেটো, টমেটোর পরে ওলকপি, বেগুন, ফুলকপি ও বাঁধাকপি  দিয়ে বৃত্ত শেষ করা হয়েছে।  

বৃত্তের শেষ ভাগে এক পাশে সাদা কাগজের উপর রঙ্গিন ধান দিয়ে লেখা হয়েছে স্মার্ট ফকিরহাট। যা ফকিরহাটবাসীকে আরও বেশি আকৃষ্ট করেছে। এই বৃত্তের সাথে ছবি তোলাও একটি অনুসঙ্গ ছিল মেলায় আগতদের।

গোটা আয়োজনের বিষয়ে কৃষিবিদ মোঃ নাছরুল মিল্লাত বলেন, স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তিতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে আমরা এই মেলার আয়োজন করেছি। মেলাকে আকৃষ্ট করতে আমরা সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। কৃষকদের তাৎক্ষনিকভাবে নিবন্ধনেরও ব্যবস্থা করেছি। এছাড়া যেসব সফল কৃষক রয়েছে তাদের উৎপাদিত বিভিন্ন ফসলের প্রদর্শণী রেখেছি আমরা। যাতে অন্য কৃষকরা উদ্বুদ্ধ হন এসব চাষাবাদে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, ২৫ নভেম্বর, ২০২২
এসএএইচ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।