সাভার (ঢাকা): সাভারে এক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জমি দখল ও হামলার অভিযোগ করেছেন একাধিক ভুক্তভোগী।
এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেও প্রভাবশালী চেয়ারম্যানের কারণে পুলিশ কোন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না বলেও অভিযোগ তাদের।
গত ২৫ নভেম্বর কাউন্দিয়ার পশ্চিম পাড়া এলাকার ভুক্তভোগী আব্দুল বাতেন তার বাড়িতে হামলার অভিযোগে চেয়ারম্যান সাইফুল আলম খান, মো. হেলাল ও মো. ইসমাইলসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন।
রোববার (২৭ নভেম্বর) সকালে সে লিখিত অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুব্রত দাস।
তিনি বলেন, একটি অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করে জানাতে পারব। তবে এর আগে অনেকবার সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু পারা যায়নি। এবার আমি একটু চেষ্টা করে দেখি।
ভুক্তভোগী আব্দুল বাতেনের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে আমি ও আমার বোন নাজমা বেগমের মালিকানাধীন সাড়ে ৪ শতাংশ জমিতে পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছি। কিন্তু চেয়ারম্যান সাইফুল আলমের নির্দেশে প্রভাবশালী হেলাল, ইসমাইল, আফাজ, নাদিম ওই জমি মাপযোগ করতে বলে। সমস্ত কাগজপত্র ও নকশা তাদের দেখাই। তারা সেটা না মেনে আমার উপর চড়াও হয়। পরে গত ৯ নভেম্বর জোরপূর্বক সাদা কাগজে আমার স্বাক্ষর নেয় তারা।
তিনি বলেন, আমাদের উচ্ছেদ করতে গত ২৩ নভেম্বর বাড়িতে হামলা চালায় তারা। আমার পরিবারের সদস্যদের মারধর করে আহত করে। আমার বোনকে বাড়িতে আটকে রাখে। এ ঘটনায় পরবর্তীতে আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও পুলিশ এখন পর্যন্ত কোন আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়নি।
চেয়ারম্যান সাইফুল আলম খানের বিরুদ্ধে মো. শামীম নামের আরেক ভুক্তভোগী অভিযোগ করে বলেন, আমার জমিতে সাইফুল চেয়ারম্যান জোরপূর্বক নিজের সাইনবোর্ড টানিয়ে রেখেছে। সেখানে কোন দাগ নম্বর ও পরিমাণ উল্লেখ করেনি। সিটি জরিপে এই সম্পত্তি আমার কেনা। কয়েক মালিকের ওয়ারিশান সম্পত্তি সাইফুল চেয়ারম্যান জোরপূর্বক দখল করে রেখেছে। অন্তত দশবার মাপযোগ হয়েছে। প্রতিবারই কোন না কোন বাহানা দেখে এড়িয়ে যান উনি। অথচ এখানে তার (সাইফুল আলমের) নামে কোন সম্পত্তি নেই।
এসব অভিযোগের বিষয়ে কাউন্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম খান বলেন, ‘ওদের (অভিযোগকারীদের) বাড়িতে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে জায়গা, রাস্তা নিয়া গণ্ডগোল। সেটার সমাধানে অন্তত আমি এ পর্যন্ত ১৫-২০ বার গেছি। পরে আমি আর যাই নাই। মেম্বার থেকে জমি মেপে দিছে। ওই মাপ দেওয়ার স্বাক্ষর আছে। এখন ওই মাপ অনুযায়ী ওর চাচাতো ভাইয়েরা কাজ করতে গেলে আব্দুল বাতেন কাজ করতে দেয় না। উল্টা থানায় গিয়া অভিযোগ করছে। বাড়িঘরে হামলা এসব তদন্ত করলে বোঝা যাবে। ’
শামিম নামে আরেক ভুক্তভোগীর অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যার জমিতে সাইনবোর্ড লাগানোর কথা বলা হচ্ছে সেই সাইনবোর্ডটা কোথায় আছে দেখেন। আর ওর জমি কোথায় আছে দেখেন। আমিতো ওর জায়গাতে কোন সাইনবোর্ডই লাগাইনি। ওর বাড়িতো বিক্রমপুর। ওই তো ড্রেজার লাগিয়ে ব্যবসা করতেছে। ’
সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, বিষয়টা আমি দেখব। আর জমি সংক্রান্ত বিরোধগুলোতে আমাদের বড় কোন স্কোপ নাই। আমরা ল এন্ড অর্ডার সিচুয়েশন মেইনটেইন যেগুলো করার সেটা করি। ফৌজদারি কোন বিষয় থাকলে ভুক্তভোগীর কাছে শুনে ব্যবস্থা নিব।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২২
এসএফ/এসএএইচ