ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

৭ বছর ধরে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই চলছে পাঠদান

এম এম ওমর ফারুক, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০২২
৭ বছর ধরে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই চলছে পাঠদান

নড়াইল: নড়াইলের আমাদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ একটি ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে গত ৭ বছর ধরে চলছে পাঠদান। এতোদিনেও নতুন ভবন নির্মাণে কতৃপক্ষ যেন উদাসিন।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে স্কুল চলাকালীন সময় ওই ভবনের নবম শ্রেণির কক্ষে হঠাৎ করেই ধসে পড়ে ছাদের পলেস্তারা। মুহূর্তেই ছাদের বড় একটা অংশের দুর্বল রডগুলো বেরিয়ে যায়। আর ভেঙে পড়া পলেস্তারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে বেঞ্চের সবখানে।

তবে ভাগ্যক্রমে রক্ষা পেয়ে যান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ঘটনার সময় তারা ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের নির্বাচনী (টেস্ট) পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা থাকায় অন্য কক্ষ ছিল। আর তাতেই বড় ধরণের দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পায় নবম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীরা।

এ ঘটনার পর থেকে রোববার (২৭ নভেম্বর) থেকে বিদ্যালয়টি চালু হলেও ওই শ্রেণিকক্ষে আর ক্লাস নেওয়া সম্ভব হয়নি।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার আমাদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত। এরপর ১৯৯৪-৯৫ অর্থবছরে তিনরুম বিশিষ্ট একতলা ভবনটি নির্মান করা হয়। এর মধ্যে একটি কক্ষে নবম শ্রেণির ক্লাস নেওয়া হচ্ছিল যেটির পলেস্তারা ভেঙে পড়েছে। এই শ্রেণিকক্ষের পাশেই প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষক ও কর্মচারীদের অফিস কক্ষ। তার পাশেই ছাত্রী মিলনায়তন। বর্তমানে তিনটি কক্ষের অবস্থা খুবই নাজুক।

বছর দুয়েক আগে শিক্ষকদের অফিস কক্ষের পলেস্তারাও ভেঙে পড়েছিল। এছাড়া কক্ষগুলোর ফ্লোর ভেঙে দেবে গেছে। সব মিলে ভবনটি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তবুও নিরুপায় হয়ে ভবনটি ব্যবহার করতে হচ্ছে। কারণ, স্কুলটিতে এ ভবন ছাড়া আর কোনো পাকা ভবন নেই।

এছাড়া দুইটি টিনশেডের ঘর থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এখানে চারটি শ্রেণিকক্ষ থাকলেও প্রয়োজন রয়েছে সাতটির। আর টিনের ঘরে প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষক-কর্মচারীদের অফিস করার মতো ব্যবস্থা নেই।

স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বাংলানিউজকে বলে, সেদিন জরাজীর্ণ ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ায় আমরা আতঙ্কের মধ্যে আছি। ভাগ্যক্রমে আমরা বেঁচে গেছি। আমরা ওখানে ঢুকতেও ভয় পাচ্ছি। আমাদের একটাই দাবি, যেন কর্তৃপক্ষ এটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে এবং নতুন একটি ভবন নির্মাণ করে দেয়।

স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক আলমগীর গাজী বাংলানিউজকে বলেন, আমরা দীর্ঘদিন চেষ্টা করেও নতুন ভবন পাচ্ছি না। ভগ্নদশা ভবনটিতে যে কোনো সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমরা অনেক বড় ঝুঁকিতে আছি।

প্রধান শিক্ষক নির্মল কুমার কুণ্ডু বাংলানিউজকে জানান, স্কুলে একটি মাত্র পাকা ভবন থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠদান দিতে খুব সমস্যা হচ্ছে। আমাদের মোট ৩৫০ শিক্ষার্থী রয়েছে। অথচ, অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার অভাব রয়েছে। দ্রুতই আমাদের নতুন ভবন প্রয়োজন।

জেলা শিক্ষা অফিসার এস এম ছায়েদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি খোঁজ-খবর নিয়ে নতুন ভবন অনুমোদনের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০২২
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।