ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

চ বর্গীয় শব্দ ও নারীর ক্ষমতায়ন

ফারুক যোশী, অতিথি লেখক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৩ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৩
চ বর্গীয় শব্দ ও নারীর ক্ষমতায়ন

নারীর ক্ষমতায়ন হয়েছে কিংবা হচ্ছে এমন কথা বড় বেশি উচ্চারিত হয় বাংলাদেশে। পৃথিবীর সম্ভবত কোন দেশই নেই যেখানে নারী নেত্রীরা বাংলাদেশের মতো এত ক্ষমতাবান।

ক্ষমতাধর না হলে কি বার বার ফিরে আসেন সরকার প্রধান হয়ে।

বর্তমান সংসদের চিত্রতো সবাই জানেন। প্রধান মন্ত্রী, সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা, সরকাররি দলের সংসদীয় উপনেতা, স্পিকার, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, কৃষি মন্ত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলো নারীদের দখলে। পৃথিবীর যে কোন দেশেই হয়ত এ চিত্র বিরল।

হয়ত সে কারণেই বাংলাদেশের সংসদ উত্তপ্ত করে তোলেন নারীরাই। ক্ষমতার বিস্তৃতি এতোটাই প্রকট যে, বাংলাদেশের সংসদ থেকে সে উত্তাপ দেশের আনাচে কানাচে এখন আলোচিত, বড় বেশি চর্চিত হচ্ছে। রানু, পাপিয়া, শাম্মী, বাপ্পী এখন সব জায়গায় উচ্চারিত নাম, বিদেশেও।

সত্যি কথা বলতে কি, এরা যেন সংসদকে অপবিত্রতায় লেপ্টে দিচ্ছেন। তাদের কথা বাচন ভঙ্গিতে সভ্যতা যেন হোঁচট খাচ্ছে।

যেহেতু তারা কেতাবী শিক্ষত মানুষ, সে হিসেবে তাদের শব্দের ব্যবহারটুকু ঠিকই কিতাব থেকেই নিতে পেরেছেন। কখনও আঞ্চলিক শব্দ ব্যবহার করে সংসদকে করে তুলেছেন উত্তপ্ত।   রানু তো শব্দের ব্যবহার দিয়ে বাংলাদেশ থেকে শুরু করে ভারতের বাংলা ভাষাবিদদের দৃষ্টি কাড়তে সক্ষম হয়েছেন।

শব্দটি অশালীন না হলেও সব জায়গায় উচ্চারণ নিয়ে কথা উঠেছে। কিংবা শাম্মী যখন হেলাল হাফিজের মতো বিখ্যাত কবির কবিতা পড়েন, মনে হয় আমাদের সংসদ সদস্যরা শুধু গলাবাজিই করেন না, তারা কাব্য-সাহিত্যও বোঝেন।

কিন্তু কবিতায় ব্যবহ্রত  চ বর্গীয় শব্দ দিয়ে গালি দেওয়া কতটুকু যৌক্তিক, তা এখন উচ্চারিত হচ্ছে সব জায়গায়ই।
আইন প্রণয়ন বা দেশীয় অসংখ্য সমস্যা-সম্ভাবনা ছাড়িয়ে যখন তারা গালি-গালাজ আর অশালীনতায় গোটা সংসদ ভরিয়ে দেন, তখন মনে হয় এ সংসদ নিয়ে আর কোন আলোচনা ভদ্র সমাজে হওয়ার নয়।

শুধু ওই বিরোধী দলীয় নারী সদস্যরাই নন, সরকার দলীয় সদস্য বাপ্পীও যা করলেন, তা-ও কোন ভব্যতার মাঝেই পড়ে না। তিনি শাম্মীর মতো কবিতা পড়েন নি, বই নিয়ে এসেছেন। এই বই থেকে বর্তমান বিরোধী দলীয় নেতার জন্ম-তত্ত্ব নিয়ে কথা তুলেছেন।

কিন্তু যে কেউ যে কোন কিছু লিখলেই তো তা ইতিহাস হয়ে উঠে না।

আসলে সত্যি কথা বলতে কি, যে কোন সংসদ সদস্য যখন এসব কথা উচ্চারণ করেন, তখন তাদের মনোবৈকল্যই ধরা পড়ে।

কোন মনোবৈকল্যের কারণে তারা ওই খেস্তি-খেউড় উচ্চারণ করতে ভালোবাসেন, তা হয়ত মনোবিজ্ঞানীরা ভেবে দেখতেই পারেন।

ফারুক যোশী: সাংবাদিক ও কলাম লেখক, [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১৩০২ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৩
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।