ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সাইফুলের প্রশ্ন

সাইবার নিরাপত্তা আইন কি সরকারের শেষ রক্ষা করতে পারবে?

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২৩
সাইবার নিরাপত্তা আইন কি সরকারের শেষ রক্ষা করতে পারবে?

ঢাকা: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাত দিয়ে সাইবার নিরাপত্তা আইনের প্রস্তাব করেছে সরকার। এ আইন পাস হলে তা কি সরকারের শেষ রক্ষা করতে পারবে কিনা, প্রশ্ন করেছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক।

তা ছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের তিনবার মৃত্যু হয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

শুক্রবার (১১ আগস্ট) দমন, নিপীড়ন, গ্রেপ্তার ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের প্রতিবাদ ও অবৈধ সরকারের পদত্যাগ এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দাবিতে গণমিছিলের আগে এক সমাবেশে তিনি এ প্রশ্ন করেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশটির আয়োজন করে ছয়টি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত জোট গণতন্ত্র মঞ্চ।

সমাবেশে সরকারকে সোজা পথে হাঁটার পরামর্শ দিয়ে সাইফুল বলেন, আপনারা (সরকার) ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরিবর্তন করে বানালেন সাইবার নিরাপত্তা আইন। এটা সাইবার নিরাপত্তা আইন না, এটা হচ্ছে সরকারের নিরাপত্তা আইন। এটা হচ্ছে একটা নিবর্তনমূলক; দমনমূলক; বিরোধীদলের কণ্ঠ রোধ করার আইন। এ আইন দিয়ে কি সরকার শেষ রক্ষা করতে পারবে?

আওয়ামী লীগের একটা প্রতিনিধি দিল্লিতে গিয়েছে। তারা কেন গিয়েছে? আগামী নির্বাচন নিয়ে দেন-দরবার করতে। তারা একটি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে ভারত সরকার কিছু বলেননি। বলেছে সংবিধান মতোই নির্বাচন করেন। বলেছে তারা এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা দেখতে চায়। সরকার যদি সংবিধান মতো হাঁটে তাহলে জাতীয় সংসদে সরকারের যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে, তারা চাইলেই যেকোনো সময় নতুন সংসদ ডেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিধান যুক্ত করতে পারে। সরকারের যদি রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকে তাহলে সংবিধানের বাইরে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। নতুন সংসদ ডেকে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী এনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান তারা চালু করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যেভাবে আগুন নিয়ে খেলছে, তাতে যদি আগামী ২৩-২৪ সালে আবার জোর জবরদস্তি করে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করে তাহলে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট হবে। যদি আপনারা সত্যি সত্যি বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা দেখতে চান তাহলে আজকে বিরোধীদলের যে দাবি, যে দাবি দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ গ্রহণ করেছে- দ্রুত সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করতে হবে, পার্লামেন্ট বাতিল করতে হবে এবং একটি অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে। তাহলেই কেবল দেশের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হতে পারে।

গণতন্ত্র মঞ্চের এই নেতা আরও বলেন, যুবলীগ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে। তাদের অন্যতম দাবি হচ্ছে, বিএনপির উপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তাদের দাবির সাথে তারা একমত। আমি বলতে চাই আপনার কত বড় ঔদ্ধত্য দেশের প্রধান বিরোধীদল যারা দেশের গণতন্ত্রের জন্য লড়ছে, ভোটাধিকারের জন্য লড়ছে তাদেরকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কথা বলছেন। আমি আজকে বলতে চাই- আওয়ামী লীগ আপনারা যে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছেন, গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়েছেন৷ কোন আদালতে আপনাদের বিচার হবে?

তিনি আরও বলেন, জনগণ তো অনেক আগে আপনাদের (আওয়ামী লীগ) নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মৃত্যু অনেক আগেই হয়েছে। ৭২ সালে একবার মৃত্যু হয়েছে, ৭৫ সালে যখন বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল তখন দ্বিতীয় মৃত্যু হয়েছে। যখন ১৮ সালে চুরি করে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছে তখন তাদের তৃতীয় মৃত্যু হয়েছে।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণমিছিল পূর্ব সমাবেশে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সহসভাপতি তানিয়া হক প্রমুখ।

সমাবেশ শেষে তারা একটি গণমিছিল করেন। মিছিলটি প্রেসক্লাব থেকে শুরু হয়ে গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট ঘুরে পল্টন গিয়ে শেষ হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২৩
এসসি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।