ঢাকা: মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করে মিয়ানমারের ওপর আক্রমণ করতে চায় মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া।
তিনি বলেন, ষাটের দশকে ভিয়েতনাম যুদ্ধে তাদের জনগণের সাথে একত্র হয়ে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছিলাম।
শনিবার (১২ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবে সাম্যবাদী দল আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
দিলীপ বলেন, গতবছর মার্কিন কংগ্রেসে বার্মা প্যাক্ট নামক আইন পাশ করেছে। এটাকে বাস্তবায়িত করতে হলে বাংলাদেশের মাটি দরকার। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকতে সেটা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচনের পূর্বে, নির্বাচনের পরেও বাংলার জনগণের পরে আমাদের আহ্বান থাকবে ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। তথাকথিত গণতন্ত্রের নামে ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দেবেন না। তাহলে আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব পদদলিত হবে।
প্রবীণ এই বামপন্থী নেতা আরও বলেন, গণতন্ত্রের নামে আন্দোলন করছে তারা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের ছত্রছায়ায় যড়যন্ত্র করছে। সেই যড়যন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা তাদের নেই। তাই আমরা দেশবাসীকে বলতে চাই, শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করুন, ক্ষমতা পরিবর্তনের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। বাংলাদেশের রাজনীতি আজ দুই বলয়ে বিভক্ত। আজকের বলয়ে একদিকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি, আরেকটি হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তি।
সাম্প্রতিক সময়ে জনগণের একাংশের বিএনপির আন্দোলনে যোগ দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জিনিসপত্রের দামসহ জনগণের যারা বিভিন্ন কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে বিএনপির সমাবেশে যোগ দিচ্ছে। কিন্তু বিএনপির আমল তারা দেখেনি, বিএনপি থেকে ভালো কিছু আশা করা যায় না। যারা হাওয়া ভবন সৃষ্টি করে, খাম্বা সৃষ্টি করে আমার দেশের জনগণের ওপর যে নিপীড়ন চালিয়েছে আমরা কী সেটা ভুলে গেছি। তাদের আমলে প্রধানমন্ত্রী প্রধান ছিল না, সচিবালয়ে কিছু ছিল না, প্রধান ছিল সবকিছুতে হাওয়া ভবন। সে এখন লন্ডনে অবস্থান করছে।
বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা দেশ গড়ার যুদ্ধের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বাংলাদেশকে আজকে শেখ হাসিনা বিশ্বের দরবারে উপস্থিত করেছেন। সবুজ পাসপোর্ট নিয়ে এক কোটি লোক বিশ্বে ছড়িয়ে আছে। বাংলাদেশে আজ ৩৫টির বেশি টেলিভিশন চ্যানেল রয়েছে। যদি দেশ স্বাধীন না হতো সেটা কি সম্ভব হতো? বাংলাদেশ নিয়ে গর্ব করার বিষয়। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অগ্রগতিকে যারা স্বীকার করে না, তারা কুলাঙ্গার। তারা বাঙালি জাতিকে সাম্প্রদায়িকতার মাধ্যমে বিভক্ত করতে চায়। যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে, জাতির জনকের বিরোধিতা করে তাদের ক্ষমতার মসনদে বসার অধিকার নেই। তাদের বাংলার জনগণ প্রতিরোধ করবে।
দিলীপ বড়ুয়া বলেন, আমরা জনগণের খেদমত করতে চাই, আমরা মন্ত্রী থেকেও প্রমাণ করেছি লাভ লোকসানের হিসাবে মন্ত্রী হই নাই। রাজনৈতিক কারণে শেখ হাসিনার ক্ষমতায় থাকা দরকার, শেখ হাসিনার বিকল্প বাংলাদেশে নেই। সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট শেখ হাসিনাকে দরকার। শুধু গণতন্ত্র দিয়ে কিছু হবে না, গণতন্ত্রের সাথে অর্থনৈতিক উন্নয়ন দরকার। বাংলাদেশে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্যে একমাত্র নেতৃত্ব দিতে পারেন শেখ হাসিনা, বিএনপির মধ্যে সেই নেতৃত্ব নেই। ক্ষমতায় ১৫ বছর নেই, তারা শুধু খাওয়া খাওয়া ছাড়া কিছুতে নাই। তারা যদি আবার আসে সেই ধরণের পথ সৃষ্টি করবে। তাদের রাজনৈতিক সৃষ্টিশীলতা নেই, ভিশন নেই যেটা শেখ হাসিনার আছে।
পাকিস্তান বিরোধী দীর্ঘ আন্দোলনের অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, আমরা ষাটের দশকে আন্দোলন করেছি, সত্তরের দশকে আন্দোলন করেছি, ৭ মার্চের ভাষণ শুনেছি। এজন্য একথা বলতে পারি, যারা মুক্তিযুদ্ধকে স্বীকার করে না, তারা বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করতে পারে, কোনো বাঙালি বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করতে পারে না।
এ আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন, গণ আজাদী লীগ নেতা এসকে সিকদারসহ ১৪ দলের নেতৃবৃন্দ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০২৩
এনবি/এমজে