ঢাকা: বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম অর্থনীতির দেশ। আগামীতে পূর্ব ও মধ্য এশিয়া হয়ে ইউরোপ থেকে রাশিয়া পর্যন্ত যে বৈশ্বিক যোগাযোগ তৈরি হবে, তার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে বাংলাদেশ।
শনিবার (১৯ আগস্ট) ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রেক্ষাপট, পরিণতি ও আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ ৭১।
সভায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন রাজনীতি ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম অর্থনীতির দেশ। আগামীতে পূর্ব ও মধ্য এশিয়া হয়ে ইউরোপ থেকে রাশিয়া পর্যন্ত যে বৈশ্বিক যোগাযোগ তৈরি হবে, তার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে বাংলাদেশ। তবে এ সম্ভাবনা মোটেও শঙ্কামুক্ত নয়। এ সম্ভাবনার বড় চ্যালেঞ্জ মুক্তিযুদ্ধের আদর্শবিরোধী রাজনীতি।
আলী শিকদার বলেন, বঙ্গবন্ধুর রক্তের ওপর পা রেখে ক্ষমতায় আসা প্রথম সামরিক শাসক মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ, দর্শন, চিন্তা, চেতনা, ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে সামরিক আদেশ দ্বারা সংবিধান থেকে বাতিল করে দিলেন। রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে ফিরে এলো জামায়াত, রাজাকার, আলবদরসহ, একাত্তরের ঘাতকরা। এদেশে ফিরে এলো ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতি। মধ্যপ্রাচ্যের পেট্রোডলারের সহযোগিতায় দেশের শহর, বন্দর, গ্রাম-গঞ্জে, ছোট-বড় মাদরাসায় ছদ্মবেশে চরম উগ্রবাদিদের প্রতিপত্তি ও বিস্তার ঘটতে থাকে। এরপর সংগ্রামী বাঙালি আবার রুখে দাঁড়াতে শুরু করে। ২০০৯ সালের পর থেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি দেশকে নতুন সম্ভাবনাময় এক দেশে পরিণত করেছে।
সভায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মুক্তিযোদ্ধা ডা. সারওয়ার আলী বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সৃষ্টি হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের ধারায় দেশ পরিচালনার লক্ষ্যে সবাইকে কাজ করতে হবে। অনেকে নিজের লাভের আশায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ক্ষুণ্ন করছেন। বঙ্গবন্ধু তার দলের সবাইকে লোভের বিস্তারের বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন। নতুন প্রজন্মের সবার কর্তব্য এ বিষয়ে সতর্ক থাকা।
শিক্ষাবিদ ও নারী নেত্রী অধ্যাপক মাহফুজা খানম বলেন, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ নৌবহর পাঠিয়ে আমাদের স্বাধীনতাকে রুখতে চেয়েছিল। স্বাধীনতার পরও দেশটি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে কাজ করেছে। আগামী নির্বাচন কেন্দ্র করে তারা যে ভূমিকা নিচ্ছে, সেটি প্রতিরোধে তরুণ সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান বলেন, রাজনীতি বিমুখ নতুন প্রজন্মকে প্রকৃত ইতিহাস জানতে হবে। মুক্তিযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বৈরী ভূমিকা, সারাবিশ্বে ৬৪টি দেশের সরকার পতনে তাদের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে জানতে হবে। সাম্রাজ্যবাদী এ শক্তির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূমিকা প্রশংসনীয়।
সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের কার্যনির্বাহী সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মো. নুরুল আলমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক, ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. মমতাজ উদ্দীন পাটোয়ারী, সাবেক সচিব মুক্তিযোদ্ধা আবু আলম মোহাম্মদ শহীদ খান প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০২৩
এসসি/আরবি