ঢাকা, সোমবার, ১৫ পৌষ ১৪৩১, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে: ইনু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ৭, ২০২৩
সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে: ইনু

ঢাকা: সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান নিয়ে অহেতুক বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু।

মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর শহিদ কর্নেল আবু তাহের বীরউত্তমের নেতৃত্বে ঐতিহাসিক সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান স্মরণে আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

সভাটি অনুষ্ঠিত হয় শহীদ কর্নেল তাহের মিলনায়তনে।

কর্নেল আবু তাহের বীর উত্তমের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে হাসানুল হক ইনু বলেন, সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান নিয়ে অহেতুক বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। সিপাহী বিদ্রোহের পর জেনারেল জিয়াউর রহমান ক্ষমতা কুক্ষিগত করে বিদ্রোহকে ‘বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ হিসেবে চিহ্নিত করে প্রথম অপপ্রচার চালান। পরবর্তীতে কিছু মহল এটাকে ‘মুক্তিযোদ্ধা হত্যা’ দিবস হিসেবেও পালন করেছে।

জাসদ সভাপতি বলেন, ৭ নভেম্বর কখনোই ‘বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ বা ‘মুক্তিযোদ্ধা হত্যা’ দিবস ছিল না। সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান ছিল ১৫ আগস্ট ও ৩ নভেম্বরের অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী সামরিক অফিসারদের সামরিক শাসন থেকে উচ্ছেদ করার মহান প্রচেষ্টা। সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে সুমহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনরুদ্ধারের প্রয়াসে।

তিনি বলেন, ৭ নভেম্বর শহীদ কর্নেল আবু তাহের বীর উত্তমের নেতৃত্বে সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান ছিল ১৫ আগস্টের খুনি, ৩ নভেম্বরের জেল হত্যার খুনি, কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল সামরিক অফিসারদের অবৈধ ক্ষমতা দখল ও সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে। জিয়া অভ্যুত্থানের লক্ষ্যের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে দেশে সামরিক শাসনের ধারা অব্যাহত রেখে ইতিহাসে খলনায়কের স্থান দখল করেছেন।

ইনু বলেন, ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান ছিল ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যা এবং ৩ নভেম্বর জেলখানায় জাতীয় চার নেতা হত্যার প্রতিবাদে খুনিদের বিরুদ্ধে সামরিক শাসন উচ্ছেদের মহান প্রচেষ্টা। কিন্তু জেনারেল জিয়া চক্রান্তকারীদের সহযোগিতায় অভ্যুত্থানকে ব্যর্থতায় পর্যবসিত করে নিজেই রাষ্ট্র ক্ষমতা কুক্ষিগত করে দেশে পুনর্বার সামরিক শাসন জারি করে। সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থানের লক্ষ্য ছিল সর্বদলীয় সরকার গঠন, দ্রুত সাংবিধানিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়া শুরু, ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র কাঠামো পরিবর্তন এবং দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠান করে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা।

সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থানের মহান প্রচেষ্টাকে যারা খাটো করে তারা কার্যত অবৈধ দখলদারদের মহিমান্বিত করে। অবৈধ দখলের রাজনীতিকে উস্কে দেয়। জিয়ার উত্তরসূরি বর্তমানের বিএনপি-জামায়াত চক্র আবারও দেশকে অবৈধ ক্ষমতা দখলের ধারায় ফেরত নেওয়ার চক্রান্তের অংশ হিসাবে নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্র করছে।

ঢাকা মহানগর জাসদের সমন্বয়ক মীর হোসাইন আখতারের সভাপতিত্বে এবং জাসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রোকনুজ্জামান রোকন ও দপ্তর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন জাসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাদের চৌধুরী, অধ্যাপক মোখলেছুর রহমান মুক্তাদির, শওকত রায়হান, নইমুল আহসান জুয়েল, ওবায়দুর রহমান চুন্নু, ঢাকা মহানগর উত্তর জাসদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শফি উদ্দিন মোল্লা, জাতীয় শ্রমিক জোট-বাংলাদেশ এর সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা সাইফুজ্জামান বাদশা প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ৭, ২০২৩
আরকেআর/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।