ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

স্বতন্ত্র প্রার্থীর ১৬ মোটরসাইকেল ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২, ২০২৪
স্বতন্ত্র প্রার্থীর ১৬ মোটরসাইকেল ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

বরিশাল: বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) আসনে ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী এ.কে ফাইয়াজুল হক রাজুর বহরে হামলা চালিয়ে ১২টি মোটর সাইকেলে অগ্নিসংযোগ ও চারটি ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে।  এতে বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ফাইয়াজুল হক রাজু।

যদিও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, বিষয়টি প্রার্থীর স্ট্যান্ডবাজি ছাড়া আর কিছুই নয়, হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কিংবা নৌকার কর্মী-সমর্থক কেউ জড়িত নন। বরং স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজনের হামলায় বিশারকান্দিতে নৌকার একাধিক লোক রক্তাক্ত জখম হয়েছেন।  

স্বতন্ত্র প্রার্থী ফাইয়াজুল হক রাজু জানান, ঈগল প্রতীকের পক্ষে মোটরসাইকেলে মিছিল নিয়ে দুপুর পৌনে দুইটার দিকে উপজেলার মরিচবুনিয়া থেকে বানারীপাড়া পৌরশহরের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়া হয়। বাইশারী কলেজের উত্তর পাশে পৌঁছালে বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক, সাধারণ সম্পাদক মাওলাদ হোসেন সানাসহ লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায় এবং গুলি ছোড়ে। এতে তাদের অন্তত ৪০ কর্মী আহত হন। এছাড়া হামলাকারীরা ১২টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ এবং চারটি ভেঙে ফেলেছে।  

এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হবে বলে জানিয়ে রাজু বলেন, সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। তারা কী ব্যবস্থা নেয় সেটাও দেখবো।  

এদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাওলাদা হোসেন সানা বলেন, মোটরসাইকেল পোড়ানো বা ভাঙচুরের ঘটনার সঙ্গে আমাদের কেউ জড়িত নয়। তারা (ঈগল প্রতীকের প্রার্থীর কর্মী সমর্থকরা) বিশারকান্দিতে গিয়ে বেলা ১২টার দিকে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম শান্তসহ আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। ওই ঘটনায় ১০-১৫ জন গুরুতর আহত হয়েছেন, তাদের যখন উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার তৎপরতা চলছিল। তখন আবার হামলাকারীরা বাইশারীতে এসে একাধিক পুরোনো মোটরসাইকেল সড়কের ওপর ফেলে ভাঙচুর করে এবং পুড়িয়ে দেয়। এমন খবর স্থানীয়দের মারফত আমরা জেনেছি। পরে শুনেছি তারা নাকি দোষ আমাদের লোকজনের ওপর চাপাচ্ছে, কিন্তু সেখানে আমাদের কোনো লোক ছিল না। আর স্থানীয় যারা ছিল ওখানে, তারা মোটরসাইকেলের আগুন নেভানোর চেষ্টা করে।  

তিনি বলেন, নিজের পক্ষে সমর্থন জোগাতে, সাধারণ মানুষের সিমপ্যাথি পেতে নিজেদের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে ও পুড়িয়ে দেয়। এটা স্ট্যান্ডবাজি ছাড়া আর কিছুই নয়।  

এ ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানিয়েছেন নৌকা প্রতীকের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা।

বিশারকান্দির চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম শান্ত জানান, ঢাকার এক কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গে নৌকার গণসংযোগ করার জন্য তারা রওয়ানা দেন। সবাই যখন বটতলা বাজারে দাঁড়িয়ে ছিলেন, তখন ঈগল প্রতীকের কর্মী-সমর্থকরা ৩০-৩৫টি মোটরসাইকেল নিয়ে ঘটনাস্থলে আসে এবং তাদের ওপর হাতুড়ি-লাঠি দিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে তাদের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী রক্তাক্ত জখম হন।

এ বিষয়ে বানারীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাইনুল ইসলাম জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীদের ১২টি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। চারটি ভাঙচুর করা হয়েছে। কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে জানি না।  

ওসি বলেন, তিনিসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সেখানে রয়েছেন।

বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অন্তরা হালদার বলেন, গুলির কোনো আলামত পায়নি। তবে ১২টি মোটর সাইকেলে অগ্নিসংযোগ ও চারটি ভাঙচুর অবস্থায় পেয়েছি। এ ঘটনায় ওসিকে দ্রুত মামলা করা ও জড়িতদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০২৪
এমএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।