বরিশাল: পরিকল্পিতভাবে কিছু পুরাতন মোটরসাইকেল আগে থেকে এনে রেখে, তাতে অগ্নিসংযোগ করেছে স্বতন্ত্র ঈগল প্রতীকের প্রার্থীর কর্মী সমর্থকরা; এমনটাই দাবি করেছেন বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক।
মঙ্গলবার (০২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বানারীপাড়া পৌর খেয়াঘাট এলাকায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে এ কথা তুলে ধরেন তিনি।
গোলাম ফারুক বলেন, চারদিকে নৌকার জোয়ার দেখে আওয়ামী লীগকে দায়ী করার জন্যই এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করা হয়েছে।
তিনি বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ বরিশাল-২ আসনে নৌকার পক্ষে কাজ করার জন্য নেতাকর্মীদের সঙ্গে সভা করেছেন এবং জোড়ালোভাবে কাজ করার জন্য বলেছেন। যার প্রেক্ষিতে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছে এবং ফলশ্রুতিতে বানারীপাড়া পৌরসভা ও আটটি ইউনিয়নের নৌকার গণজোয়ার উঠেছে।
তিনি আরও বলেন, এটা টের পেয়ে স্বতন্ত্র ঈগল প্রতীকের প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা মঙ্গলবার ৩০-৩৫টি মোটরসাইকেল নিয়ে বিভিন্ন স্থানে মহড়া দেয়। মহড়ার সময় তারা রামদা, হাতুড়িসহ দেশিয় অস্ত্রে সজ্জিত ছিল।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, বেলা ১২টার দিকে বিশারকান্দির চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা সাইফুল ইসলাম শান্তসহ ১০-১২ জন নেতাকর্মীকে নিয়ে বটতলা এলাকায় নৌকার পক্ষে গণসংযোগ চালানো হয়। ওই সময় স্বতন্ত্র ঈগল প্রতীকের প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলা চালিয়ে তারা বাইশারিতে এসে আমার এলাকায় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে কিছু পুরাতন মোটরসাইকেল রেখে, তাতে অগ্নিসংযোগ করে। চারদিকে নৌকার জোয়ার দেখে আওয়ামী লীগকে দায়ী করার জন্যই এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করা হয়েছে।
বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাওলাদ হোসেন সানা বলেন, বিশারকান্দিতে আমাদের আহত ৯ নেতাকর্মীদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু তাদের ওপর যদি হামলা হতো, তাহলে সেই আহতরা কোথায়? তাদের আহত একজনও দেখলাম না হাসপাতালে।
তিনি বলেন, যখন মানুষ দুপুরের খাবার খাবে নয়তো খাবার খেয়ে বিশ্রাম নিতে নিজ নিজ বাড়িতে ব্যস্ত ছিল, তখন একটি নাটক সাজিয়ে এখন দায় আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর চাপাচ্ছে। কিছু পুরনো গাড়ি জমায়েত করে ওখানে আগুন দিয়ে আওয়ামী লীগের ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। এর সঠিক তদন্ত করা হোক।
যদিও স্বতন্ত্র প্রার্থী ফাইয়াজুল হক রাজু জানান, ঈগল প্রতীকের পক্ষে মোটরসাইকেলে মিছিল নিয়ে দুপুর পৌনে দুইটার দিকে উপজেলার মরিচবুনিয়া থেকে বানারীপাড়া পৌর শহরের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়া হয়। বাইশারি কলেজের উত্তর পাশে পৌঁছালে বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক, সাধারণ সম্পাদক মাওলাদ হোসেন সানাসহ লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায় এবং গুলি ছুঁড়ে। এতে তাদের অন্তত ৪০ জন কর্মী আহত হন। এছাড়া হামলাকারীরা ১২টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ এবং চারটি মোটরসাইকেলে পিটিয়ে ভেঙ্গে ফেলেছে।
এদিকে ঘটনার পরপরই ওই এলাকায় র্যাব-পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরাসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শক করেছেন। বর্তমানে ঘটনাস্থলের পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও পৌর শহরে পাল্টাপাল্টি মিছিল করেছে দুই পক্ষ। এদিকে উভয় পক্ষই মামলা দায়েরের কথা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২২৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০২৪
এমএস/এসআইএ