নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কাঞ্চন পৌরসভা নির্বাচনে দলীয়ভাবে বর্জনের নির্দেশনা থাকলেও নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন ডজনখানেক নেতা। এর মধ্যে রয়েছেন পৌরসভা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক থেকে শুরু করে অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের দায়িত্বশীলরাও।
মঙ্গলবার পৌরসভা বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, কাঞ্চন পৌরসভা নির্বাচনে ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন কাঞ্চন পৌরসভা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মফিকুল ইসলাম খান, ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে বিএনপির সহ সভাপতি হামিদুল হক খান, একই ওয়ার্ডে আরেকজন প্রার্থী হয়েছেন ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম, ৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছেন বিএনপির সহ সভাপতি নাসিরুল হক ভুঁইয়া দুলাল, একই ওয়ার্ডে নির্বাচন করছেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামাল মিয়া, ৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আমজাদ হোসেন ভুট্টু।
এছাড়াও ২ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি হোসেন মিয়াও হয়েছেন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী, কাঞ্চন পৌরসভা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রোকন উদ্দিনও হয়েছেন ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী।
নেতারা জানান, দলের এসব নেতারা প্রার্থী হয়ে এখন নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত করে বলছেন এই পৌরসভায় বিএনপির নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা নেই, কারণ এ নিয়ে দলের কোনো মাথাব্যথা নেই। এসব বলে নেতাকর্মীদের মাঠে নামাতে চেষ্টা করছেন প্রার্থীরা। এমনকি দলে দলে বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ভোটকেন্দ্রে যেতেও বলছেন প্রার্থীরা।
এদিকে মেয়র পদে নির্বাচন করায় দেওয়ান আবুল বাশার বাদশারকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে।
দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে সকল নির্বাচন বর্জন করেছে বিএনপি। এর মধ্যে যারা দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন এবং যারা অংশগ্রহণকারীদের হয়ে মাঠে নেমেছেন তাদের বহিষ্কার করার মতো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা অব্যাহত রয়েছে। এর মাঝেও দলীয় প্রায় ডজনখানেক নেতা কাঞ্চন পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
এদিকে দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, এখনি এসব নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে আগামীতে দলে আর কোনো চেইন অব কমান্ড থাকবে না। এক পর্যায়ে সকলেই দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে কাজ করা শুরু করবে। আর দলের দায়িত্বশীল পদে থেকে এহেন কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নিতে চাইছেন না নেতাকর্মীরা। তাই তাদের বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেছেন তারা।
এ ব্যাপারে নির্বাচনে অংশ নেওয়া পৌরসভা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মফিকুল ইসলাম খান জানান, দল তো বড় নির্বাচনগুলোতে অংশ নিতে বাধা দিয়েছে। এখন তো শুধু কাঞ্চন পৌরসভায় নির্বাচন আর কোথাও নির্বাচন নেই। যখন সারাদেশে নির্বাচন হয় তখন দল একটা সিদ্ধান্ত নেয়। শুধু কাঞ্চনের নির্বাচন নিয়ে তো আর দল বসে নেই। সেই সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছি।
এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাহফুজুর রহমান হুমায়ুন জানান, আমাদের এখন পর্যন্ত ১০ জন নেতা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন বলে আমরা জেনেছি। এদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেবে কেন্দ্র। ইতোমধ্যে আমরা কেন্দ্রে জানিয়েছে তাদের ব্যাপারে। কেন্দ্র থেকে যা সিদ্ধান্ত আসবে তাই হবে।
গত ২১ মে কাঞ্চন পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। ১০ জুন প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়। তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৬ জুন ইভিএম পদ্ধতিতে হবে এ পৌরসভার ভোটগ্রহণ।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪০ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২৪
এমআরপি/এসআইএস