ঢাকা: গভীর রাতে পুলিশ-র্যাব-গোয়েন্দা সংস্থার লোক দিয়ে খালেদা জিয়ার কার্যালয় অবরুদ্ধ করে সরকার দেশকে অনিশ্চিত সংঘর্ষের দিকে ঠেলে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসকাব মিলনায়তনে এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ অভিযোগ করেন।
৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশন এ গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এ ধরনের ঘটনা কোনো দিন ঘটেনি দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা এ কোন নজির স্থাপন করলেন? বিরোধী দল যাতে গণতান্ত্রিক অধিকার আদায় না করতে পারে সেজন্য কি আপনারা একটা হুমকি দিলেন?’
তিনি বলেন, ‘সরকারের মুখোশ খুলে পড়েছে। গণতন্ত্রের যে লেবাস তারা এতোদিন পরেছিল, তা খুলে পড়ে তাদের ফ্যাসিবাদী চেহারা বেরিয়ে পড়েছে। এ ঘটনার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব আবার হুমকির মুখে পড়েছে। জাতিতে একটা অনিশ্চিত সংঘর্ষের দিকেই ঠেলে দেওয়া হয়েছে। ’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম মঙ্গলবার জিয়াউর রহমানকে খুনি বলে যে বক্তব্য দিয়েছেন তার সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, ‘এ বক্তব্য অশালীন, অরুচিকর ও রাজনৈতিক শিষ্ঠাচার বহির্ভূত। ’
সম্প্রতি অর্থমন্ত্রীর ‘এ দেশকে আমরা ট্রানজিট কান্ট্রি করবো’ বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ ট্রানজিট কান্ট্রি করার জন্য বুকের রক্ত ঢালেনি। একটা স্বাধীন-সার্বভৌম ও আত্মনির্ভরশীল জাতি হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার জন্য। ’
তিনি বলেন, ‘একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার অঙ্গীকার নিয়ে ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সরকার ক্ষমতায় এসেছিল। কিন্তু অন্য স্বার্থ হাসিল করতেই তারা ব্যস্ত। এটি একতরফা প্রেমের মতো। আমরা সব দিয়ে যাবো। বিনিময়ে কিছুই পাবো না। ’
ফখরুল আরো বলেন, ‘পর্বত প্রমাণ সমস্যা, দ্রব্যমূল্যের আকাশচুম্বি উর্দ্ধমুখিতা, গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানি সমস্যায় জনগণ দিশেহারা। কোনো দেশই বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিচ্ছে না। উল্টো ফিরিয়ে দিচ্ছে। বিনিয়োগেও কেউ এগিয়ে আসছে না। বিনিয়োগকারীরা অন্য দেশে গিয়ে বিনিয়োগ করছে। নানামুখী সমস্যায় জর্জরিত দেশ ও জাতি। সেদিকে সরকারের খেয়াল নেই। তাদের অতীত চরিত্র অনুযায়ী জিয়া ও তার পরিবার এবং জাতীয়তাবাদী রাজনীতি ধ্বংসের নেশায় মেতে উঠেছে। ’
জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশন সভাপতি মেজর (অব.) এমএম মেহবেবুর রহমানের সভাপতিত্বে গোলটেবিল আলোচনায় আরো বক্তৃতা করেন ইউং কমান্ডার (অব.) এম হামিদুল্লাহ খান, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০১০