ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

সারাদেশে সহিংসতায় নিহত ৩, আহত ১৪৩

কান্ট্রি ডেস্ক নিউজ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০১৫
সারাদেশে সহিংসতায় নিহত ৩, আহত ১৪৩ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ৫ জানুয়ারি ‘গণতন্ত্র রক্ষা দিবস’ ও ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ পালন উপলক্ষে ক্ষমতাসীন আওয়ামী জোট ও বিএনপির নেতৃত্বধীন ২০ দলীয় জোট মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে।

দুই জোটের কর্মসূচি আর পাল্টা কর্মসূচি ঘিরে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে বন্ধ রয়েছে অধিকাংশ জেলার বাস চলাচল।

বেশ কয়েকটি জেলায় পুলিশ ও সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে ২০ দলীয় জোটের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ৩ বিএনপি কর্মী নিহত ও আহত হয়েছেন ১৪৩ জন।

এছাড়া দলীয় কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগেরও খবর পাওয়া গেছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। আটক করা হয়েছে বিএনপি-জামায়াতের অন্তত ২ শতাধিক নেতাকর্মীকে।

বাংলানিউজের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা করেসপন্ডেন্টদের পাঠানো খবর:

নাটোর: নাটোরের তেবাড়িয়া এলাকায় আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে বিএনপির দুই কর্মী নিহত হয়েছেন। এর প্রতিবাদে ৬ জানুয়ারি জেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে বিএনপি।

সকালে জেলা বিএনপি ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা নাটোর শহরের তেবাড়িয়া এলাকা থেকে পৃথক মিছিল বের করার প্রস্তুতি নেয়। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটে। এতে রাকিব ও রায়হান গুলিবিদ্ধসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

রাজশাহী: বিকেল পৌনে ৫টার দিকে পুটিয়া উপজেলার বানেশ্বরে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে ১ জন নিহত হয়েছেন।

তবে নিহত ব্যক্তি বিএনপির কর্মী কিনা তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারেনি পুলিশ।

নোয়াখালী: নাশকতার আশঙ্কা ও সব ধরনের নাশকতা এড়াতে নোয়াখালীর বিভিন্ন স্থানে বিশেষ অভিযান চালিয়ে বিএনপির ১৬ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।

এদিকে,  বেলা ১১টায় বিএনপির মিছিলকে কেন্দ্র করে নাশকতার আশঙ্কায় নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি বাজার এলাকায় জারি করা ১৪৪ ধারা। তা অমান্য করে সমাবেশ করতে গেলে বিএনপি ও পুলিশের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল ও শটগানের ১০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পরে ঘটনাস্থল থেকে বিএনপির ৬ কর্মীকে আটক করে পুলিশ।

নাশকতা এড়াতে নোয়াখালীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশের সাথে ৩ প্লাটুন বিজিবি টহলে রয়েছে।

কুষ্টিয়া: নাশকতার আশঙ্কায় জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বিএনপি-জামায়াতের ২৩ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।

চাঁদপুর: চাঁদপুরের বিভিন্ন স্থানে রোববার রাত থেকে সোমবার সকাল ৯টায় পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে বিএনপি-জামায়াতের ২১ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।

এদিকে, দুপুর ১টার দিকে বিএনপি নেতাকর্মীরা দুপুরে মিছিল নিয়ে বর্ডার বাজার এলাকায় এলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এসময় নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়লে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে পুলিশ রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।   এ ঘটনায় ১২ জন আহত হয়। এদের মধ্যে শিশুসহ অন্তত চারজন বুলেটবিদ্ধ রয়েছে।

মাগুরা: নাশকতা সৃষ্টির আশঙ্কায় মাগুরা সদর, শালিখা, শ্রীপুর ও মহম্মদপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিএনপি ও জামায়াতের ১১ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।

সুনামগঞ্জ: নাশকতার আশঙ্কায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে বিএনপি-জামায়াতের ৩২ নেতাকর্মীকে আটক করেছে। রোববার দিনগত রাত থেকে সোমবার ভোর ৫টা পর্যন্ত জেলার ১২টি থানায় এ অভিযান চালানো হয়।

এদিকে, বেলা ১২টার দিকে ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা শহরের পুরাতন কোর্ট এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে স্থানীয় ট্রাফিক পয়েন্টের দিকে যাচ্ছিল। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে একটি র‌্যালি নিয়ে পুরাতন কোর্ট এলাকায় যাচ্ছিল দলটির নেতাকর্মীরা। পথে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার প্রধান ফটকের কাছে এলে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। একপর্যায়ে পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে ওসি ও সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হন।

সংঘর্ষের পরপরই ময়নার পয়েন্টে সিএনজিচালিত দুটি অটোরিকশা ভাঙচুর করে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের কর্মীরা।

সাতক্ষীরা: নাশকতার আশঙ্কায় জামায়াত-শিবিরের ১৬ নেতাকর্মীসহ ৫০ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

সোমবার সকালে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

কক্সবাজার: কক্সবাজারের ৭ উপজেলায় অভিযান চালিয়ে ২০ দলীয় জোটের ১৪ জন নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।

রোববার রাত ১২টা থেকে সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত কক্সবাজার সদর, রামু, উখিয়া, চকরিয়া, কুতুবদিয়া, মহেশখালী ও টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।

বাগেরহাট: নাশকতা পরিকল্পনার অভিযোগে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিএনপি ও জামায়াত ইসলামীর ৫ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। এছাড়া নাশকতা প্রতিরোধে ৯ থানা পুলিশের একাধিক দল মোড়ে মোড়ে টহল দিচ্ছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: পুলিশের বিশেষ অভিযানে জামায়াতের ১, বিএনপির ৪ কর্মীসহ ৩৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে সদরে ১৮,  শিবগঞ্জে ৭, নাচোলে ৩, ভোলাহাটে ১ ও গোমস্তাপুরে ৪ জন রয়েছে।

ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহের ৬ উপজেলা থেকে নাশকতার আশঙ্কায় পুলিশ ২৩ বিএনপি ও ২ জামায়াত কর্মীসহ ৩৮ জনকে গ্রেফতার করেছে।

এদিকে, সোমবার সকাল থেকে বিএনপি-জামায়াতের কোনো কর্মসূচি চোখে না পড়লেও ঝিনাইদহ শহরের পায়রা চত্বরে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র রক্ষা দিবস পালনের জন্য মঞ্চ তৈরি করেছে।

অন্যদিকে, ঝিনাইদহ শহর ও শৈলকুপায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিএনপি-আওয়ামী লীগ এবং পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে পুলিশসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এ সময় বিএনপি কর্মীরা জনতা ব্যাংকের একটি পাজেরো গাড়ি ভাঙচুর করে।

এছাড়া শহরের আরাপপুর, হামদহ, পুরাতন ডিসি কোর্ট চত্বর, চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড ও আদর্শপাড়া বিভিন্ন স্থানে পুলিশ নেতাকর্মীদের ওপর লাঠিচার্জ করে মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

অন্যদিকে, শৈলকুপা উপজেলার গাড়াগঞ্জ এলাকায় সোমবার সকালে বিএনপির কালো পতাকা মিছিলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে ছত্র ভঙ্গ করে দেয়।

লক্ষ্মীপুর: সকাল সোয়া ১০টার দিকে শহরে বিএনপির মিছিলে ধাওয়া করেছে পুলিশ। এ সময় পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক নিজাম উদ্দিনসহ ৩ জনকে আটক করা হয়।

আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া): বেলা ১২টার দিকে আখাউড়া শহরে সড়ক বাজার থেকে আনন্দ মিছিল বের হয়ে শহরের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে। পরে পৌর মুক্তমঞ্চের সামনে সমবেত হয়ে সভা করে।

মানিকগঞ্জ: গণতন্ত্র হত্যার কালো দিবস উপলক্ষে মানিকগঞ্জে মিছিল ও সমাবেশ করেছে জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা।

সোমবার দুপুরে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে নেতাকর্মীরা একটি মিছিল বের করার চেষ্টা করলে পুলিশি বাধায় তা পণ্ড হয়ে যায়। পরে নেতাকর্মীরা আদালত প্রাঙ্গণেই  বিক্ষোভ মিছিল ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে।

এদিকে, দুপুরে দলীয় কার্যালয় থেকে যুবলীগের নেতাকর্মীরা শহরে একটি আনন্দ মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে স্থানীয় প্রেসক্লাবের সামনে নেতাকর্মীরা সমাবেশ করে।

পাবনা: বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা বিএনপি শহরে কালো পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের ইন্দারা পট্টি মোড়ে পৌঁছালে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা তাদের ধাওয়া করে। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে ১৫ জন আহত হয়।

এসময় ১০/১২টি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দও শোনা যায়। এসময় বিক্ষোভকারীরা আব্দুল হামিদ সড়কে রাখা ১টি প্রাইভেট কারসহ ৫টি গাড়ি ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় সাধারণ মানুষ ভয়ে দিক বিদিক ছুটতে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাটিচার্জ ও ১২ রাউন্ড শটগানের গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বরগুনা: জেলা বিএনপি সকালে দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল বের করতে চাইলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়।

এদিকে, ১১টার দিকে  সদর রোড থেকে বিএনপির একটি মিছিল দলীয় কার্যালয়ে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশ ধাওয়া দিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। কাটপট্টি এলাকায় বেলা সাড়ে ১১টায় ছাত্রদলের একটি মিছিল দলীয় কার্যালয়ে ঢোকার চেষ্টা করলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের  পুলিশ ছত্রভঙ্গ করতে গেলে পুলিশের সাথে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে ।

এ সময় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা পুলিশের উপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে জেলা বিএনপির নেতারা দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করে।

বরিশাল: সকাল থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত লাঠি সোটা, আগ্নেয়াস্ত্র, বিষ্ফোরক দ্রব্য ইত্যাদি বহন সহ সব ধরনের সভা, সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল নিষিদ্ধ করেছে মেট্রোপলিটন পুলিশ।

নিষেধাঙ্গার কারণে সকাল থেকে বিএনপি বা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কোনো সভা-সমাবেশ বা বিক্ষোভ মিছিল করা হয়নি।

এমনকি সকাল থেকে নগরীর সদররোডের বিএনপি কার্যালয়ে তালাবদ্ধ থাকে পাশাপাশি কোন নেতাকর্মীকেও রাজপথে দেখা যায়নি। তবে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন সড়কে মোটরসাইকেল মহড়া দেয়।

এছারাও নগরীর সোহেল চত্তরের আওয়ামীলীগ দলীয় কার্যালয়ের সামনে নেতা-কর্মরী অবস্থান নিয়ে রয়েছেন।   সেখানে সকাল থেকে বঙ্গবন্ধুর ভাষন ও দেশাত্মবোধক গান মাইকে প্রচার করা হচ্ছে।

ভোলা: বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শহরের দরগাহ রোড এলাকায় বিএনপি একটি মিছিল বের করে। এ সময় পুলিশ মিছিলকারীদের বাধা দিলে মিছিল থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে প্রায় ঘন্টাব্যাপী ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে আহত হয়েছে পুলিশের ৩ সদস্যসহ অন্তত ২২ জন।

পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে। সংঘর্ষের স্থান থেকে ৩ জনসহ ১৭ জনকে আটক করা হয়েছে।

অপরদিকে, শহরের বাংলা স্কুল মোড়ে ৩টি অটোরিকশা, ৫টি দোকান ভাঙচুর করেছে মিছিলকারীরা। এ সময় হামলাকারীদের প্রতিহত করার চেষ্টা করে ছাত্রলীগ। তবে এতে কোনো সংঘর্ষ হয়নি।

দিনাজপুর:  দুপুর আড়াইটার দিকে আওয়ামী লীগ পৃথক বিক্ষোভ মিছিল বের করলে শহরের পৌর মিলনায়তনের পাশে বিএনপি কার্যালয়ে সামনে গেলে তাদের দুপক্ষের মধ্যে সংর্ঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ হওয়ার ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে ৫ জন আহত হয়।

সংঘর্ষের একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ পৌর বিএনপির কার্যালয়ে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই গ্রুপকে ছত্র ভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

পার্বতীপুর (দিনাজপুর): বেলা ১১টার পরপরই শহরের ঢাকা মোড়ে অবস্থিত দলীয় কার্যালয় থেকে পার্বতীপুর থানা বিএনপি জোটের কয়েকশত নেতাকর্মী কালো পতাকা হাতে নিয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে।

মিছিলটি শহরের নতুন বাজারে যেতে ধরলে পৌরসভার সামনে পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে মিছিলটি শহর প্রদক্ষিণ করে উত্তরা সিনেমা হলের সামনের সড়ক গেলে বাসনপট্টিতে পুলিশ আবারও বাধা দেয়।

পরে বাসনপট্টির পাশের নতুনবাজার রিফুজিপট্টির গলি দিয়ে মিছিল শেষে কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের নাশকতার আশঙ্কায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৫ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

কুমিল্লা: সকাল সাড়ে ১০ টায় কুমিল্লা ২০ দলীয় জোটের উদ্যোগে নগরীর কান্দিরপাড়ের জেলা বিএনপির কার্যালয় থেকে একটি কালো পতাকা মিছিল বের হয়। মিছিলটি রাজগঞ্জ এলাকা দিয়ে সাকির্টহাউজ এলাকা দিয়ে মিছিলটি দলীয় কার্যালয়ে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে।

ধুনট (বগুড়া): সকাল ১০টার দিকে ধুনট পৌর এলাকার পশ্চিম ভরনশাহী মহল্লা থেকে একটি মিছিল বের হয়ে ধুনট বাজারের টিনপট্টি এলাকায় পৌছলে পুলিশ বাঁধা দেয়। পরে ধুনট-শেরপুর রোডের টিনপট্টি এলাকায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়।

মেহেরপুর: বেলা সাড়ে ১১টার সময় মেহেরপুর বাসস্ট্যন্ড থেকে একটি র‌্যালি বের হয়। র‌্যালিটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়।

মৌলভীবাজার: ভোরে নাকশতার আশঙ্কায় মৌলভীবাজার শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিএনপির দুই সমর্থককে আটক করেছে পুলিশ।

এদিকে, দুপুর শহরে ছাত্রলীগ মিছির বের করে মিছিলটি এক পার্যায়ে বড়লেখা সদর বাজারে অবস্থিত বিএনপির কার্যালয়ে হামলা চালায় ও ভাঙচুর করে। এতে বিএনপির ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়।

নীলফামারী: বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা পরিষদ মার্কেটের দলীয় কার্যালয় থেকে বিজয় র‌্যালি বের করে আওয়ামী লীগ। মিছিলটি শহর প্রদক্ষিণ শেষে চৌরঙ্গি মোড়ের স্বাধীনতা স্মৃতি অম্লান চত্বরে সমাবেশ করে।

এদিকে, শহরের পৌর বাজার  দলীয় কার্যালয় থেকে পৌর বিএনপি কালো পতাকা মিছিল বের করলে বাঁধা দেয় পুলিশ। বাঁধা উপেক্ষা করে মিছিলটি দলীয় কার্যালয় থেকে ১শ গজ দুরে বাটার মোড় গেলেও সেখান থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

পরে বিচ্ছিন্নভাবে কালো পতাকা মিছিল শহরের বড় বাজার থেকে ঘুরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশ বেস্টনিতে সমাবেশে মিলিত হয়।

জয়পুরহাট: পাঁচবিবি থানা বিএনপির কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর চালিয়েছে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা।

এ সময় পাঁচবিবি থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইফূল ইসলাম ডালিমের কাপড়ের দোকানে ভাঙচুর চালায় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা।

দুপুরে এর প্রতিবাদে পাঁচবিবি থানা বিএনপির সভাপতি আব্দুল গফূর মন্ডলের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করলে আওয়ামী লীগের সমাবেশস্থলের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে নেতাকর্মীরা।

পটুয়াখালী: বেলা সোয়া ১১টায় শহরের নিউমার্কেট এলাকা থেকে বিজয় র‌্যালি করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। র‌্যালিটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় একই স্থানে এসে শেষ হয়।

এদিকে, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহরের শেরেবাংলা সড়কের বটতলা থেকে কালো পতাকা মিছিল বের করে বিএনপি।  

মিছিলটি কিছুদূর যাবার পর পুলিশ মিছিলে বাধা দেয়। এ সময় নেতাকর্মীরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে সামনে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের ধস্তাধস্তি হয়। পরে পুলিশ মিছিলে লাঠিচার্জ করে মিছিলটি ছত্র ভঙ্গ করে দেয়। এ সময় পুলিশের লাঠির আঘাতে ৭ নেতাকমী আহত হয়।

রাঙামাটি: সকাল সাড়ে ১০টায় বিএনপির শতাধিক কর্মী দলীয় কার্যালয়ে জড়ো হয়ে মিছিল বের করার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের কার্যালয় চত্বরেই আটকে রাখে। পরে পুলিশি ব্যারিকেডের ভেতরেই সমাবেশ করে তারা।  

অন্যদিকে শহরের কলেজ গেইট এলাকায় বিএনপি মিছিলের চেষ্টা করলে পুলিশ ধাওয়া দেয়।

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ): বেলা পৌনে ১১টার দিকে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা আনন্দ মিছিল বের করে। মিছিলটি বের হয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতা, গোলাকান্দাইল ও সাওঘাট এলাকা পদক্ষিণ করে।

এদিকে, রূপগঞ্জ থেকে রাজধানীমুখী সব ধরনের যাত্রীবাহী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পরেছেন যাত্রীসাধারণ।

সকাল ৭টা থেকে সড়ক-মহাসড়কের ৫ পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে পুলিশ যাত্রীবাহী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন। এতে রাজধানীমুখী গোলাকান্দাইল এলাকায় অবস্থান নিয়ে এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কে, ভুলতা এলাকায় অবস্থান নিয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে,  তারাব সুলতানা কামাল সেতু এলাকায় অবস্থান নিয়ে তারাব-যাত্রাবাড়ী সড়কে, চনপাড়া এলাকায় অবস্থান নিয়ে চনপাড়া-ডেমড়া সড়কে ও  কাঞ্চন সেতু এলাকায় অবস্থান নিয়ে কুড়িল বিশ্বরোড সড়কে  যাত্রীবাহী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়।

তবে, অ্যাম্বুলেন্স, এয়ারপোর্টগামী ও মালবাহী যানবাহন চলাচলে বাধা দিচ্ছেনা পুলিশ।

টাঙ্গাইল: সকালে পুলিশ প্রহরায় ভিক্টোরিয়া রোডের জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গিয়ে শেষ হলে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করা হয়।

এদিকে, সকালে শহরে পৃথক মিছিল ও সমাবেশ করেছে ১৪ দলের নেতাকর্মীরা।

মধুপুর: দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার কাকরাইদ বাজার থেকে বিএনপি একটি মিছিল উপজেলা দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেত হয়। এসময় নেতাকর্মীরা কালো পতাকা নিয়ে মিছিলে অংশ নেয় এবং সরকার বিরোধী নানা স্লোগান দেয়।

মিছিলটি দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে মধুপুর বাসস্ট্যান্ডের দিকে অগ্রসর হতে চাইলে পুলিশি বাধায় থেমে গিয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনেই সমাবেশ করে।

ফেনী: দুপুর আড়াইটার দিকে এসএসকে সড়কের জিয়া মহিলা কলেজ সংলগ্ন এলাকায় একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে ছাত্রদল। মিছিলটি শহরের ট্রাংক রোড়ের দিকে এগিয়ে আসতে চাইলে পুলিশ বাধা দিয়ে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এসময় পুলিশ জেলা ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক ফরহাদ উদ্দিন চৌধুরী মিল্লাতসহ দুই ছাত্রদল নেতাকে আটক করা হয়।

ঠাকুরগাঁও: বেলা ১২টায় জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে থেকে র‌্যালিটি বের হয়। র‌্যালিটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে এবং পূর্বের জায়গায় গিয়ে শেষ হয়। পরে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে, দুপুর ২ টায় দলীয় কার্যালয় থেকে মির্জা ফখরুলের ভাই মির্জা ফয়সল আমিনের নেতৃত্বে কালো পতাকা মিছিল বের হয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে। পরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করে তারা। নিরাপত্তায় পুলিশের পাশাপাশি ৩ প্লাটুন বিজিবি শহরে টহল দিচ্ছে।
 
শেরপুর (বগুড়া): বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বগুড়ার শেরপুরে পুলিশি বাধা উপেক্ষা বিএনপির নেতাকর্মীরা কালো পতাকা হাতে নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।  

এর আগে বিপুল সংখ্য পুলিশ বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে শক্তিশালী অবস্থান গড়ে তোলে।

কুড়িগ্রাম: দুপুর ১টার দিকে কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনগুলো শহরে আনন্দ মিছিল বের করে। পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে এসে বিজয় সমাবেশ হয়।

পিরোজপুর: দুপুর ১২টার দিকে বিএনপি বিলাস চত্বরে  সমাবেশ করতে গেল বিএনপি-আওয়ামী লীগ সংঘর্ষে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ৭ নেতাকর্মী ও ২ ছাত্রলীগ কর্মী আহত হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ৭ রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ও ১০ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। পরে যুবলীগ ছাত্রলীগ জেলা বিএনপির কার্যালয়সহ দলের চার নেতার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে।

এদিকে, দুপুরে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সময় টিভির পিরোজপুর জেলা প্রতিনিধি জিয়াউল হক ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হামলায় আহত হন।

সিরাজগঞ্জ: বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার ইবি রোডে বিএনপি ও পুলিশের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে রাবার বুলেটবিদ্ধসহ আহত হয়েছে অন্তত ১০ জন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০১৫/আপডেট: ১৭৫৫ ঘণ্টা

** রাজশাহীতে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে নিহত ১
** নাটোরে সংঘর্ষে নিহত ২, মঙ্গলবার হরতাল

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।